ঢাকা, ৩১ মে – দেশীয় সিনেমা জগতে আটবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত বরেণ্য চিত্র সম্পাদক মুজিবুর রহমান দুলু আর নেই। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন চলচ্চিত্র নির্মাতা মোস্তাফিজুর রহমান মানিক।
শনিবার (৩১ মে) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে রাজধানীর গণস্বাস্থ্য হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। মুজিবুর রহমান দুলুর বয়স হয়েছিল ৭৩ বছর। তিনি দুই ছেলেসহ অসংখ্য আত্মীয়-গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।
আগামীকাল (রোববার) বাদ মাগরিব জানাজা শেষে তাকে আজিমপুর কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে বলে পারিবারিক সূত্র জানিয়েছে।
এর আগে, শুক্রবার হাসপাতালে এই খ্যাতনামা চিত্র সম্পাদককে দেখতে যান এডিটর গিল্ডের সভাপতি আবু মুসা দেবু। পরে তিনি জানান, ছোট ছেলে ও ছেলের স্ত্রীর হাতে শারীরিক নির্যাতনের শিকার হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন মুজিবুর রহমান দুলু। বড় ছেলে দেশের বাইরে থাকায় ছোট ছেলে ও তার স্ত্রীর সাথেই থাকতেন খ্যাতিমান এই চিত্র সম্পাদক। বড় ছেলের অবর্তমানে সব সম্পত্তি ছোট ছেলের নামে লিখে দিতে দীর্ঘদিন যাবত মানসিক নির্যাতন করে আসছিলেন তার ছোট ছেলে ও ছেলের স্ত্রী। ছোট ছেলের এ রকম অনৈতিক আবদার ও চাপে রাজি না হওয়াতেই দেশবরেণ্য এই চিত্র সম্পাদককে শারীরিকভাবে লাঞ্চিত করে ছেলে ও ছেলের বউ। নির্যাতনের নির্মমতায় তিনি অচেতন হয়ে পড়লে ছেলে ও ছেলের বউ অন্যরুমে চলে যায়। তখন প্রতিবেশিরাই তাকে হাসপাতালে নিয়ে আসেন। এই ঘটনায় তখন তিনি দুলুর ছোট ছেলে ও ছেলের স্ত্রীর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন তিনি।
মুজিবুর রহমান দুলুর পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, দীর্ঘদিন তিনি কিডনি জটিলতাসহ নানা রোগে ভুগছিলেন। প্রায় তিন সপ্তাহ আগে ওই হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন চলচ্চিত্রের এই গুণী মানুষ। এর আগে, বিছানা থেকে পড়ে গিয়ে কোমরে ব্যথা পান। এরপর হাঁটাচলার শক্তি হারিয়ে ফেলেন তিনি।
প্রসঙ্গত, ‘নয়ন মনি’ ছবির মধ্য দিয়ে নিজের চলচ্চিত্র ক্যারিয়ার শুরু করেন মজিবুর রহমান দুলু। পরবর্তীতে ‘সুজন সখী’, ‘মিন্টু আমার নাম’, ‘অভাগী’, ‘নাত বৌ’, ‘প্রাণ সজনি’, ‘ভাত দে’, ‘তিন কন্যা’, ‘ভেজা চোখ’, ‘সত্যমিথ্যা’, ‘পিতা মাতা সন্তান’, ‘বাংলার বধূ’, ‘মেঘলা আকাশ’, ‘নাগর দোলা’, ‘হাজার বছর ধরে’, ‘৭১ এর মা জননী’সহ প্রায় তিন শতাধিক ছবিতে সম্পাদনার কাজ করে নিজেকে অনন্য উচ্চতায় নিয়ে যান মুজিবুর রহমান দুলু।
এনএন/ ৩১ মে ২০২৫