ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থান চলাকালে গত ৫ আগস্ট রাজধানীর চানখাঁরপুলে গুলি করে ৬ জনকে হত্যার মামলায় চিফ প্রসিকিউটর বরাবর তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্র্যাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা।
গতকাল ২০ এপ্রিল এই তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করা হয়েছে বলে সোমবার নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের জানান চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম।
এসময় চিফ প্রসিকিউটরবলেন, ‘জুলাই আগস্টে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে এটিই প্রথম দাখিল করা কোন তদন্ত প্রতিবেদন এবং আশাকরি এই প্রতিবেদনটি যাচাই-বাছাই করে ট্রাইব্যুনালে প্রথম ফর্মাল চার্জ (আনুষ্ঠানিক অভিযোগ) হিসেবে দাখিল করা হবে।’
চিফ প্রসিকিউটর বলেন, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্র্যাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থার দেয়া তদন্ত প্রতিবেদনটি ৯০ পৃষ্ঠার। এই তদন্ত করতে তদন্ত সংস্থার সময় লেগেছে ৬ মাস ১৩ দিন। এই তদন্ত প্রতিবেদনে ৭৯ সাক্ষীর জবানবন্দি গ্রহণ করা হয়েছে। এছাড়া ১৯টি ভিডিও, প্রত্রিকার ১১ টি রিপোর্ট, ২ টি অডিও, বই ও রিপোর্ট ১১ টি এবং ৬ টি ডেথ সার্টিফিকেট সংযুক্ত করা হয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদনে আসামী করা হয়েছে সাবেক ডিএমপি কমিশনা হাবিবুর রহমানসহ ৮ জনকে। যাদের মধ্যে গ্রেফতার আছেন ইন্সপেক্টর আরশাদ, কনস্টেবল মো সুজন, কনস্টেবল ইমাজ হোসেন ইমন ও কনস্টেবল নাসিরুল ইসলাম।
এই তদন্ত প্রতিবেদনের অভিযোগে বলা হয়েছে যে, রাজধানীর চানখারপুল এলাকায় আসামীগন কর্তৃক নিরিস্ত্র ও শান্তিপূর্ণ আন্দোলন কারীদের উপর প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যাবহার করে শহীদ শাহরিয়ার খান আনাস, শেখ মাহদি হাসান জুনায়েদ, শহীদ মো ইয়াকুব, শহীদ মো রাকিব হাওলাদার, শহীদ মো ইসমামুল হক এবং শহীদ মানিক মিয়াকে গুলি করে হত্যা করে।
বৈষম্য বিরোধী ছাত্র-জনতার গনঅভ্যুত্থানে গত ৫ আগস্ট পদত্যাগ করে দেশত্যাগ করেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। এর মধ্য দিয়ে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে টানা প্রায় ১৬ বছরের শাসনের অবসান হয়।
গত জুলাই-আগস্টে গড়ে ওঠা ছাত্র-জনতার আন্দোলন নির্মূলে আওয়ামী লীগ সরকার, দলীয় ক্যাডার ও সরকারের অনুগত প্রশাসন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংগঠিত করে। জাজ্জ্বল্যমান এ অপরাধের বিচার অনুষ্ঠিত হচ্ছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে।