স্থিতিশীল রাষ্ট্র ও অন্তর্ভুক্তিমূলক গণতন্ত্রের সন্ধানে

স্থিতিশীল রাষ্ট্র ও অন্তর্ভুক্তিমূলক গণতন্ত্রের সন্ধানে

বাংলাদেশের মতো গণতন্ত্রকামী জনবহুল দেশের জন্য রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখা একটি বড় চ্যালেঞ্জ। রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার অভাবে এদেশের উন্নয়ন ও বিনিয়োগ বহুলাংশে বাধাগ্রস্ত হয়ে আসছে। বহুকাঙ্ক্ষিত রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা অর্জনের জন্য আমাদের দেশের উপযোগী কার্যকর মৌলিক ভাবনা ও তার বাস্তবায়ন প্রয়োজন। তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ নির্বাচন সম্পন্ন হওয়ার পরও রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার সংস্কৃতি প্রতিষ্ঠিত না থাকায় নির্বাচনি এলাকাসমূহে রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা অব্যাহত থাকে।

সামান্য ভোটে পরাজিত প্রার্থী বা তাঁর সমর্থকদের পক্ষে অনেকসময় জানমাল রক্ষা করা এবং এলাকায় অবস্থান করা কঠিন হয়ে পড়ে। এই একক দখলদারিত্বের সংস্কৃতি থেকে বেরিয়ে আসার জন্য ৩০০ সংসদীয় নির্বাচনি আসনের নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীকে যদি আইনগতভাবে একটি অবস্থান ও মর্যাদা দিয়ে শাসন-প্রক্রিয়ায় যুক্ত করা যায়, তবে তা রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ও গণতন্ত্রের জন্য এবং ঐ প্রার্থীর সুরক্ষায় বড় ভূমিকা রাখতে পারে।

এক্ষেত্রে প্রতি আসনের নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বীকে যদি উপজেলা চেয়ারম্যানের সমান মর্যাদা, ঐ আসনের বাজেট/বরাদ্দের একটি অংশ (এক-পঞ্চমাংশ) প্রদান করা যায়, তবে তা অংশগ্রহণমূলক গণতন্ত্র চর্চা, স্থিতিশীলতা ও সুশাসনের জন্য  একটি মাইলফলক হতে পারে। বিজয়ী এবং নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বীর মোট প্রাপ্ত ভোট বিবেচনায় নিলে তা প্রকৃতপক্ষে সংখ্যাগরিষ্ঠের শাসন ব্যবস্থায় রূপ নেয়।

প্রতিদ্বন্দ্বী ৩০০ প্রার্থীর জন্য গাড়ি, ভাতা, বরাদ্দ ইত্যাদি মিলিয়ে যে খরচ হবে, স্থিতিশীল পরিবেশ প্রতিষ্ঠা এবং উন্নয়ন ও বিনিয়োগের তুলনায় তা যৎসামান্য। নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের সম্মানিত ছায়া সংসদ-সদস্য বা সহযোগী সংসদ-সদস্য বলেও অভিহিত করা যায়। সর্বোপরি দেশের বর্তমান প্রেক্ষাপটে জাতীয় ঐক্য ধরে রাখার স্বার্থে এটি একটি সুদূরপ্রসারী কার্যকর পদক্ষেপ হতে পারে। রাষ্ট্রের স্বার্থে রাজনৈতিক পক্ষসমূহ ও সংশ্লিষ্টরা বিষয়টি গুরুত্বসহকারে বিবেচনা করতে পারেন।

Scroll to Top