ইবাদতে পূর্ণ ইখলাস থাকা আবশ্যক

ইবাদতে পূর্ণ ইখলাস থাকা আবশ্যক

ধর্ম ডেস্ক : মুমিনের কোনো আমল আল্লাহর কাছে গ্রহণযোগ্য হওয়ার জন্য তাতে পূর্ণ ইখলাস থাকা আবশ্যক। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘যে ব্যক্তি তার প্রভুর সঙ্গে সাক্ষাতের আশা রাখে সে যেন সৎকাজ করে এবং তার প্রভুর ইবাদতে কাউকে অংশীদার না করে।’ (সুরা : কাহফ, আয়াত : ১১০)

ইবাদতে পূর্ণ ইখলাস থাকা আবশ্যক

যদি কোনো আমল একমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য না হয়ে তাতে দুনিয়াবি স্বার্থ প্রবেশ করে, তবে তা আল্লাহর দরবারে মূল্যহীন হয়ে যায়। মানুষের প্রশংসা কুড়ানোর জন্য ইবাদত করা আরো ভয়ানক বিষয়।

হাদিস শরিফে এসেছে, কিয়ামতের দিন বহু মানুষ পাহাড়সম ইবাদত নিয়েও জাহান্নামে যাবে, শুধু লোক-দেখানোর নিয়তে করার কারণে।

আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত একটি দীর্ঘ হাদিসে আছে …তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, আল্লাহ তাআলা বান্দাদের মাঝে ফায়সালা করার জন্য কিয়ামতের দিন তাদের সামনে হাজির হবেন। সমস্ত উম্মত তখন নতজানু অবস্থায় থাকবে। এরপর হিসাব-নিকাশের জন্য সর্বপ্রথম যে ব্যক্তিদের ডাকা হবে, তারা হলো কোরআনের হাফেজ, আল্লাহর রাস্তায় শহীদ এবং প্রচুর সম্পদের মালিক।

সেই ক্বারি (কোরআন পাঠক)-কে আল্লাহ তাআলা প্রশ্ন করবেন, ‘আমি কি আমার রাসুলের মাধ্যমে যা প্রেরণ করেছি, তা তোমাকে শিখাইনি?’ সে বলবে, ‘হ্যাঁ, হে রব! আপনি শিখিয়েছেন।’ তিনি বলবেন, ‘তুমি যা শিখেছ, সে অনুযায়ী কী আমল করেছ?’ সে বলবে, ‘আমি দিনরাত তা তিলাওয়াত করেছি।’ তখন আল্লাহ তাআলা বলবেন, ‘তুমি মিথ্যা বলেছ।’ ফেরেশতারাও বলবে, ‘তুমি মিথ্যা বলেছ।’

আল্লাহ তাআলা তাকে আরো বলবেন, ‘বরং তুমি চেয়েছিলে মানুষ তোমাকে বড় ক্বারি (হাফেজ) বলে ডাকুক। আর তা তো হয়েছে।’

তারপর সম্পদশালী ব্যক্তিকে হাজির করা হবে। আল্লাহ তাকে বলবেন, ‘আমি কি তোমাকে সম্পদশালী করিনি? এমনকি তুমি কারো মুখাপেক্ষী ছিলে না?’ সে বলবে, ‘হ্যাঁ, হে রব! আপনি তা করেছেন।’ তিনি বলবেন, ‘আমার দেওয়া সম্পদ দিয়ে তুমি কী করেছ?’ সে বলবে, ‘আমি এর দ্বারা আত্মীয়তার সম্পর্ক রক্ষা করেছি এবং দান-খয়রাত করেছি।’

আল্লাহ বলবেন, ‘তুমি মিথ্যা বলেছ।’ ফেরেশতারাও বলবে, ‘তুমি মিথ্যাবাদী।’ আল্লাহ তাআলা আরো বলবেন, ‘তুমি চেয়েছিলে মানুষ তোমাকে দানশীল ও দানবীর বলে ডাকুক। আর তা তো হয়েছে।’

তারপর যে ব্যক্তি আল্লাহর রাস্তায় শহীদ হয়েছে, তাকে হাজির করা হবে। আল্লাহ তাআলা তাকে প্রশ্ন করবেন, ‘তুমি কিভাবে নিহত হলে?’ সে বলবে, ‘আমি তো আপনার পথে জিহাদ করতে আদিষ্ট ছিলাম। তাই আমি জিহাদ করতে করতে শাহাদাত বরণ করেছি।’ আল্লাহ তাআলা বলবেন, ‘তুমি মিথ্যা বলেছ।’ ফেরেশতারাও বলবে, ‘তুমি মিথ্যাবাদী।’ আল্লাহ তাআলা আরো বলবেন, ‘তুমি চেয়েছিলে মানুষ তোমাকে সাহসী বীর বলে ডাকুক। আর তা তো হয়েছে।’

তারপর রাসুলুল্লাহ (সা.) আমার হাঁটুতে হাত রেখে বললেন, ‘হে আবু হুরায়রা! কিয়ামতের দিন সৃষ্টিজগতের মধ্যে সর্বপ্রথম এই তিন ব্যক্তির মাধ্যমেই জাহান্নামের আগুন প্রজ্বলিত করা হবে।’ (তিরমিজি, হাদিস : ২৩৮২)

৪ পদে নিয়োগ দিচ্ছে জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ

এ জন্য মুমিনের উচিত, প্রতিটি কাজ একমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টির আশায় করা। কোনো কাজে মানুষের প্রশংসার প্রত্যাশী না হওয়া। কারণ লোক-দেখানো ইবাদতের ব্যাপারে মহান আল্লাহ বলেছেন, ‘ধ্বংস সেসব নামাজির জন্য, যারা তাদের নামাজের ব্যাপারে উদাসীন, যারা (মানুষকে) দেখানোর জন্য তা (নামাজ আদায়) করে, আর যারা নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস দেওয়া থেকে বিরত থাকে।’ (সুরা : মাউন, আয়াত : ৪-৭)

মহান আল্লাহ আমাদের সবাইকে হেফাজত করুন। আমিন।
মাইমুনা আক্তার

Scroll to Top