এই খবরটি পডকাস্টে শুনুনঃ
বিপিএলে ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলোর মধ্যে ফরচুন বরিশালের সমর্থকদের সমাগম দেখার মতো। ঢাকা, সিলেট কিংবা চিটাগং- যেখানে বরিশালের খেলা হোক না কেনো, গ্যালারিতে গলা ফাটানো উল্লাস করতে দেখা গেছে দলটির সমর্থকদের। দলকে উৎসাহ দিতে সবখানেই ছুটে গেছেন তারা। সেসকল সমর্থকদের জন্য বরিশালকে আবারও চ্যাম্পিয়ন করতে চান তামিম ইকবাল। সঙ্গে বরিশালের ঐতিহ্যবাহী যান লঞ্চে করেই শহরটিতে ট্রফি নিয়ে যেতে চান জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক।
বিপিএলের গত আসলে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সকে হারিয়ে শিরোপা জিতেছিল ফরচুন বরিশাল। সেবার সমর্থকরা খুব করে চেয়েছিলেন যেন লঞ্চে করে ট্রফি বরিশালে নেয়া হয়। যদিও সেবার সমর্থকদের আশা পূর্ণ হয়নি। এবার তাদের আশাহত করতে চান না অধিনায়ক তামিম। চ্যাম্পিয়ন হলে লঞ্চে করে ট্রফি নেয়ার পরিকল্পনার কথাই জানালেন।
শুক্রবার সন্ধ্যা সাতটায় মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে গড়াবে এবারের আসরের ফাইনাল। শিরোপা মঞ্চে চিটাগং কিংসের বিপক্ষে নামবে গতবারের চ্যাম্পিয়ন বরিশাল। আগেরদিন মিরপুর একাডেমি মাঠে অনুশীলন শেষে সংবাদ সম্মেলনে আসেন তামিম। সেখানে জানান এমন।
‘আমরা খুবই ভাগ্যবান যে, আমরা এই ফ্র্যাঞ্চাইজির হয়ে খেলি। চিটাগং, সিলেট, ঢাকা- যখন যেখানে যে ম্যাচই আমরা খেলি, গ্রুপপর্ব হোক কোয়ালিফায়িং হোক, বরিশালের দর্শক সবসময় ছিল। আমরা অনেক ভাগ্যবান। এটাই আমরা বিপিএল নিয়ে স্বপ্ন দেখেছি। একেকটা দলের আলাদা ফ্যানবেইজ থাকবে। যা বরিশাল সফলভাবে করতে পেরেছে গত দুবছরে। অবশ্যই চেষ্টা থাকবে যদি চ্যাম্পিয়ন হতে পারি, ইচ্ছা আছে লঞ্চে করে যাবো। গতবারও আমাদের প্ল্যান ছিল, আমার মনে হয় কোনো কারণে যেতে পারিনি। এবার যদি আল্লাহ আমাদের উপর রহমত করেন, তাহলে অবশ্যই।’
গত আসরে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সকে হারিয়ে শিরোপা জিতেছিল তামিমের বরিশাল। শক্তিমত্তাতে দুদলই ছিল কাছাকাছি। এবার অবশ্য কিছুটা ভিন্ন। শিরোপামঞ্চে বরিশালের প্রতিপক্ষ চিটাগং কিংস। কাগজে-কলমে শক্তিমত্তায় বরিশালের চেয়ে কিছুটা পিছিয়ে দলটি। তবে তামিম চিটাগংকে শিরোপামঞ্চে যোগ্য প্রতিপক্ষ মনে করছেন। বলেছেন, ‘মাঠের ক্রিকেটে তারা প্রমাণ করেছে তারা ডিজার্ভিং। এমন না যে শুধু সেমিতে এসে খেলেছে। টুর্নামেন্টজুড়ে দারুণ খেলেছে।’
ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন হয়ে এবারও শিরোপার জেতার তাড়না বেশ বরিশালের। ক্ষুধার কথা জানিয়েছেন তামিম, ‘ট্রফি এমন জিনিস যারা ৫বার চ্যাম্পিয়ন হয়েছে তারাও চাইবে ৬বার হতে। আমরাও অবশ্যই চাইব আবার নিতে। প্রতিপক্ষও অনেক ভালো ক্রিকেট খেলছে। খুলনা দারুণ দল। শেষে দুই বিদেশি নিয়ে অনেক শক্তি বাড়িয়েছিল। শেষ ম্যাচেও দেখা গেছে কিছুই প্রেডিক্ট করা যায় না। আপনার ভালো প্লেয়ার থাকতে পারে, তবে নির্দিষ্ট দিনের পারফরম্যান্স ম্যাটার করে। কালই ফাইনাল আমাদের সেরা ক্রিকেট খেলতে হবে। ১৩-১৪ ম্যাচে যা করেছি সব সেভাবেই করতে হবে, ভিন্ন কিছু না। আমাদের চেষ্টা করে যেতে হবে সেরাটা দেয়ার। ফাইনালকে শুধু একটি ম্যাচ হিসেবেই দেখতে হবে।’
ফাইনালের আগে লিগপর্ব ও কোয়ালিফয়ার মিলে তিন ম্যাচ মুখোমুখি হয়েছে বরিশাল ও চিটাগং। এটা বরিশালকে বাড়তি সুবিধা দেবে কিনা এমন প্রশ্নে তামিম বললেন, ‘তাদের জন্যও একই। তারাও জানে কীভাবে কী করতে হবে। ফাইনাল ম্যাচ। নির্দিষ্ট দিনে যারা ভালো খেলবে। দলকে ভালো খেলতে হবে। যদি আমরা ভালোভাবে প্ল্যান কাজে লাগাই, আমাদের ভালো চান্স থাকবে, তারা করলে তাদের থাকবে।’
গত আসরের সাথে এবারের তুলনা করে তামিম বলেছেন, ‘গতবারের চ্যালেঞ্জ অনেক ভিন্ন ছিল। মাঝে টুর্নামেন্ট থেকে আমরা এক ম্যাচ বাকি ছিলাম বাদ পড়া থেকে। সেখান থেকে জিতে জিতে ফাইনালে গিয়ে জেতা। এবার একটু ভিন্ন। আমাদের সেরকম চ্যালেঞ্জে পড়তে হয়নি। কোয়ালিফায়ারে এক ম্যাচের উপর অনেককিছু নির্ভর করে। আমাদের দল এখন অনেক রিল্যাক্স আছে। যদি আমরা প্ল্যান কাজে লাগাতে পারি, তাহলে আমাদের পক্ষে আসবে সবকিছু।’
তামিম ইকবালে জন্ম ও বেড়ে ওঠা চট্টগ্রামে। যদিও খেলছেন বরিশালের হয়ে। তবে চিটাগংয়ের অনেক ভক্ত রয়েছে তামিমে। একদিকে তামিম অন্যদিকে চিটাগং, এমন পরিস্থিতিতে কাকে সমর্থন করবে তা নিয়ে কিঞ্চিত বিড়ম্বনায় পড়াটাও স্বাভাবিক সেসব ভক্তের। তামিম পথ বাতলে দিলেন। বললেন, ‘তাদের উচিত চিটাগংকে সাপোর্ট করুক। আমি ব্যাটিংয়ে নামলে হয়ত একটু চিয়ার করতে পারে।’