এই খবরটি পডকাস্টে শুনুনঃ
প্রধান উপদেষ্টার কাছে একাধিক সুপারিশ জানিয়েছে পুলিশ সংস্কার কমিশন, যার উদ্দেশ্য পুলিশ বাহিনীর কার্যক্রমকে আরও অধিকতর জবাবদিহিমূলক, স্বচ্ছ ও কার্যকরী করে তোলা।
বুধবার (১৫ জানুয়ারি) অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে জমা দেয়া প্রতিবেদনে পুলিশ সংস্কার কমিশন এসব সুপারিশ করেছে। কমিশনটির সুপারিশগুলো হলো-
-
আটক, গ্রেফতার, তল্লাশি ও জিজ্ঞাসাবাদ:
কমিশন গ্রেফতার, তল্লাশি এবং জিজ্ঞাসাবাদ প্রক্রিয়া উন্নত করার জন্য সুপারিশ করেছে। এর মধ্যে রয়েছে—সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের নির্দেশনা অনুসরণ এবং থানায় স্বচ্ছ কাঁচের আলাদা কক্ষে জিজ্ঞাসাবাদ ব্যবস্থা গঠন। বিশেষ করে, নারী আসামিকে শালীনভাবে নারী পুলিশ সদস্যের উপস্থিতিতে জিজ্ঞাসাবাদ করার সুপারিশ করা হয়েছে।
-
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কার্যক্রমের স্বচ্ছতা:
কমিশন কর্তৃক প্রস্তাবিত হয়েছে যে, অভিযান চলাকালে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের জিপিএস ট্র্যাকিং সিস্টেম ও ভিডিও রেকর্ডিং ডিভাইস ব্যবহার করা উচিত। রাতের বেলায় বাসায় তল্লাশির সময় নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট বা স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তির উপস্থিতি নিশ্চিত করার সুপারিশও করা হয়েছে।
-
মানবাধিকার লঙ্ঘন ও দুর্নীতি প্রতিরোধ:
কমিশন পুলিশের মানবাধিকার লঙ্ঘন ও দুর্নীতি প্রতিরোধে কিছু পদক্ষেপের প্রস্তাব করেছে, যেমন একটি ওয়াচডগ কমিটি গঠন এবং দুর্নীতি প্রতিরোধে বিশেষ টাস্কফোর্স গঠন। এছাড়াও, পুলিশ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে গায়েবি বা মিথ্যা মামলার অভিযোগ প্রমাণিত হলে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছে।
-
অভ্যুত্থানে পুলিশ সদস্যদের দায়বদ্ধতা:
২০২৩ সালের জুলাই মাসে অভ্যুত্থানে পুলিশের হাতে ছাত্র-জনতার হত্যাকাণ্ডের পর, কমিশন দোষী পুলিশ সদস্যদের চিহ্নিত করে আইনী প্রক্রিয়ায় শাস্তির সুপারিশ করেছে।
-
প্রযুক্তি ও কৌশলের ব্যবহারের নিয়ন্ত্রণ:
উশৃঙ্খল জনতাকে ছত্রভঙ্গ করতে ব্যবহৃত প্রযুক্তিগত কৌশলগুলোর প্রতি লক্ষ্য রেখে, পুলিশের জন্য ৫ ধাপের বলপ্রয়োগের একটি পরিকল্পনা প্রণয়নের প্রস্তাব করা হয়েছে, যা জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা বাহিনীর নির্ধারিত নীতিমালা অনুসরণ করবে।
-
নতুন পুলিশ কমিশন গঠন:
পুলিশ বাহিনীর কার্যক্রমের উন্নতির জন্য একটি নতুন পুলিশ কমিশন গঠন করার প্রস্তাবও রয়েছে, যা সংবিধিবদ্ধ সংস্থা অথবা সাংবিধানিক কাঠামোভুক্ত প্রতিষ্ঠান হিসেবে গঠিত হতে পারে।