ক্ষুধার মাত্রা নির্ধারণ ও বাংলাদেশের অবস্থান পর্যালোচনা | চ্যানেল আই অনলাইন

ক্ষুধার মাত্রা নির্ধারণ ও বাংলাদেশের অবস্থান পর্যালোচনা | চ্যানেল আই অনলাইন

এই খবরটি পডকাস্টে শুনুনঃ

গ্লোবাল হাঙ্গার ইনডেক্স (জিএইচআই) সারা বিশ্বে ক্ষুধার মাত্রা পরিমাপ করে এবং ক্ষুধার মাত্রা কমাতে কোথায় জরুরি পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন তা চিহ্নিত করে। এই বছরের প্রতিবেদন পর্যালোচনা এবং করণীয় সম্পর্কে প্রতিবেদন দিয়েছে সংস্থাটি।

প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০১৯ থেকে ২০২৩ সালের তথ্যের ভিত্তিতে প্রণীত এই বছরের প্রতিবেদনে দেখা যাচ্ছে যে যদি ক্ষুধা মু্ক্তির জন্য গৃহীত উদ্যোগগুলো জোরদার করা না হয় তাহলে ২০৩০ সালের মধ্যে ক্ষুধা মুক্তির লক্ষ্য অর্জন সম্ভব নাও হতে।

জিএইচআই ০ থেকে ১০০-এর মধ্যে সূচক নির্ধারণ করে থাকে যেখানে- কম স্কোর মানে কম ক্ষুধা (০ = ক্ষুধামুক্ত)। বেশি স্কোর মানে তীব্র ক্ষুধা (১০০ = সবচেয়ে খারাপ)।

পদ্ধতি
চারটি সূচকের ওপর ভিত্তি করে জিএইচআই ক্ষুধার বিভিন্ন দিক বিশ্লেষণ করে:

GOVT

পুষ্টিহীনতা: জনসংখ্যার যে অংশ পর্যাপ্ত পুষ্টি পায় না অর্থাৎ প্রয়োজনের তুলনায় কম ক্যালরি গ্রহণ করে।

বয়সের তুলনায় শিশুদের কম উচ্চতা (খর্বতা): পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশুদের মধ্যে যাদের বয়সের তুলনায় উচ্চতা কম, এটা দীর্ঘমেয়াদী অপুষ্টির নির্দেশক।

বয়সের তুলনায় শিশুর দুর্বলতা (ক্ষীণতা): পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশুদের মধ্যে যাদের উচ্চতার তুলনায় ওজন কম, এটা সাম্প্রতিক ও গুরুতর অপুষ্টি নির্দেশ করে।

শিশু মৃত্যুহার: পাঁচ বছরের নিচের শিশুদের মৃত্যুর হার, যা অপুষ্টি ও অস্বাস্থ্যকর পরিবেশের মিশ্র প্রভাবকে বোঝায়।

জিএইচআই স্কোর অনুযায়ী প্রতিটি দেশকে স্বল্প, মাঝারি, তীব্র, উদ্বেগজনক, বা অত্যন্ত উদ্বেগজনক হিসেবে শ্রেণিবদ্ধ করা হয়।

বৈশ্বিক প্রবণতা
বৈশ্বিক স্কোর: ২০২৪ সালের বৈশ্বিক জিএইচআই স্কোর ১৮.৩ (মাঝারি)। ২০১৬ সালের তুলনায় এক্ষেত্রে সামান্যই অগ্রগতি হয়েছে।

ক্ষুধার মাত্রা: দক্ষিণ এশিয়া এবং সাহারার দক্ষিণে আফ্রিকাতে ক্ষুধার মাত্রা এখনো তীব্র। সোমালিয়া, ইয়েমেন, ও চাদের মতো ছয়টি দেশে এটি উদ্বেগজনক পর্যায়ে রয়েছে।

২০৩০ সালের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য: ক্ষুধা মুক্তির লক্ষ্য অর্জন সম্ভব নয় বলে এবারের রিপোর্টে আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে।

বাংলাদেশের অবস্থান
অবস্থান: বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে ৪র্থ। আফগানিস্তান, পাকিস্তান, ও ভারতের তুলনায় ভালো অবস্থানে থাকলেও বাংলাদেশ নেপাল ও শ্রীলঙ্কার চেয়ে পিছিয়ে রয়েছে।

বর্তমান স্কোর ও বৈশ্বিক স্থান: বাংলাদেশের জিএইচআই স্কোর ১৯.৪ (মাঝারি মাত্রার ক্ষুধা)। ১২৭টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশ ৮৪তম অবস্থানে রয়েছে।

বাংলাদেশের উন্নতি
দীর্ঘমেয়াদী অগ্রগতি:
২০০০ জিএইচআই স্কোর: ৩৩.৮ (খুব উচ্চ ক্ষুধা)।

২০২৪ স্কোর: ১৯.৪, যা দুই দশকে উল্লেখযোগ্য উন্নতি।

সাম্প্রতিক অগ্রগতি: ২০১৬ থেকে বাংলাদেশের স্কোর কমেছে ৫.৩ অর্থাৎ ক্ষুধা পরিস্থিতির অগ্রগতি ঘটেছে।

চ্যালেঞ্জ
শিশু অপুষ্টি: শিশু খর্বতা ও ক্ষীণতার হার এখনও উদ্বেগজনক।

খাদ্যের বৈচিত্র্য: পুষ্টিকর এবং বৈচিত্র্যময় খাদ্যের প্রবেশাধিকার নিশ্চিত করতে আরও প্রচেষ্টা প্রয়োজন।

জলবায়ু পরিবর্তন ও জেন্ডার বৈষম্য: এসব কারণে এখনও দেশের বিভিন্ন জায়গায় বহু মানুষ খাবারের তীব্র সংকটে থাকে।

shoroterjoba

Scroll to Top