যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনে বিদেশী হস্তক্ষেপ নিয়ে উদ্বেগ, বদলে যেতে পারে ফলাফল | চ্যানেল আই অনলাইন

যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনে বিদেশী হস্তক্ষেপ নিয়ে উদ্বেগ, বদলে যেতে পারে ফলাফল | চ্যানেল আই অনলাইন

এই খবরটি পডকাস্টে শুনুনঃ

৫ নভেম্বর যুক্তরাষ্ট্রে অনুষ্ঠিত হচ্ছে ৬০তম প্রেসিডেন্ট নির্বাচন। দেশটির আগের নির্বাচনগুলোতে বিদেশী হস্তক্ষেপের সম্ভাবনা নিয়ে উদ্বেগ ছিল। এবারের নির্বাচনেও তার ব্যতিক্রম হচ্ছে না। ডেমোক্রেট প্রার্থী কমলা হ্যারিস ও রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প জনমত জরিপে প্রায় সমান অবস্থানে আছেন। এই পরিস্থিতিতে বিদেশী হস্তক্ষেপ যেকোন মুহূর্তে বদলে দিতে পারে ফলাফল।

এপি’র তথ্য অনুসারে,  যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা ও প্রতিরক্ষা কর্মকর্তা, প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান এবং রাজনীতি গবেষকরা আশঙ্কা করছেন রাশিয়া, চীন এবং ইরানের মতো বিদেশি বিভিন্ন দেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন সংক্রান্ত বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়িয়ে দেয়া হচ্ছে এবং এই ধরণের বিভ্রান্তিকর তথ্যের পরিমাণ দিন দিন বেড়েই চলেছে। এর প্রভাবে যদি ভোটের সামান্য ব্যবধান ঘটলেও এবছর নির্বাচনের ফল বদলে যেতে পারে।

যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনকে প্রভাবিত করতে পারে যেসব দেশ

রাশিয়া

যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা কর্মকর্তারা এবং ব্যক্তিগত নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা নির্ধারণ করেছেন যে রাশিয়া যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে সমর্থন করে, তাই ট্রাম্পের ডেমোক্র্যাটিক প্রতিপক্ষ ও বর্তমান ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিসের জনপ্রিয়তা কমানোর জন্য বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে। এদিকে ট্রাম্পও রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের প্রশংসা করেছেন, ইউক্রেনের তহবিল কমানোর পরামর্শ দিয়েছেন এবং বারবার ন্যাটো সামরিক জোটের সমালোচনা করেছেন।

২০১৬ সালের নির্বাচনে ডেমোক্রেট প্রার্থী ছিলেন হিলারি ক্লিনটন ও রিপাবলিকান প্রার্থী ছিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। ধারণা করা হয়, সেই নির্বাচনে নির্বাচন নিয়ে মিথ্যা তথ্য ছড়িয়ে দেয়ার প্রাথমিক কারিগর রাশিয়া। তারা ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে প্রধানত এটা করেছে।

GOVT

এই বিষয়ে স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক এবং রাশিয়ার সাবেক মার্কিন রাষ্ট্রদূত মাইকেল ম্যাকফাউল বলেছেন, পুতিনের লক্ষ্য হল আমাদের সমাজে বিশৃঙ্খলা, বিভাজন এবং মেরুকরণকে উস্কে দেওয়া।

ইরান

ট্রাম্পের প্রতিপক্ষ কমালা হ্যারিসকে পছন্দ করে ইরান। কারণ, প্রথম মেয়াদে নির্বাচিত হয়ে ট্রাম্প ইরানের বিরুদ্ধে দেয়া নিষেধাজ্ঞা বহাল করেন। এতে ইরান নতুন করে আর্থিক সংকটে পড়ে।

যুক্তরাষ্ট্রের বিচার বিভাগ গত মাসে তিনজন ইরানি হ্যাকারকে অভিযুক্ত করে। অভিযোগ, হ্যাকিংয়ের মাধ্যমে তারা নির্বাচনে হস্তক্ষেপ করার একটি বৃহত্তর প্রচেষ্টা করেছেন। যুক্তরাষ্ট্রের বিচার বিভাগের দাবি হ্যাকিং একটি শিল্প যা ইরান বিশেষভাবে ফলাফল হিসাবে বিবেচনা করে। সাইবার অপারেশন ছাড়াও, মার্কিন কর্মকর্তারা বারবার ট্রাম্প বা তার প্রশাসনের অন্যান্য সদস্যদের বিরুদ্ধে মার্কিন মাটিতে ইরানের সহিংসতা চালানোর সম্ভাবনা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।

তবে এমন অভিযোগ নাকচ করে দিয়েছে ইরানের কর্তৃপক্ষ। জাতিসংঘে ইরানের মিশন এই সপ্তাহে একটি বিবৃতি প্রকাশ করে বলেছে, ইরানের মার্কিন নির্বাচনে হস্তক্ষেপ করার কোনো উদ্দেশ্য বা অভিপ্রায় নেই।

চীন

যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা কর্মকর্তারা বিশ্বাস করেন, চীনের কোন পছন্দের প্রার্থী নেই চীন নির্বাচনে আরও নিরপেক্ষ অবস্থান নিচ্ছে এবং তাইওয়ানের সমর্থনসহ বেইজিংয়ের গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুতে তাদের অবস্থানের ভিত্তিতে উভয় দলের প্রার্থীদের লক্ষ্যবস্তু করছে। মূলত চীন ডাউন-ব্যালট রেসে মনোনিবেশ করছে। তাদের উদ্দেশ্য বিশ্বের চোখে যুক্তরাষ্ট্রের গণতন্ত্রকে বিশৃঙ্খল ও অসম্মানিত করা। প্রচারণায় আবির্ভাব ঘটেছে পাল্টে যাওয়া মিডিয়া ব্যবস্থা এবং প্রযুক্তির নতুন নতুন হাতিয়ার। এর ফলে মানুষকে বোকা বানানো সহজ হয়েছে।

কিন্তু চীনা সরকার বছরের পর বছর ধরে পশ্চিমা জীবন ও শিল্পের সমস্ত রীতিনীতিকে লক্ষ্য করে একটি অত্যাধুনিক হ্যাকিং অপারেশন পরিচালনা করেছে যা নির্বাচনী প্রভাবের বাইরেও যায়।

নেই কোন প্রমাণ

বিবিসি’র তথ্য অনুসারে, মার্কিন সংস্থা হোমল্যান্ড সিকিউরিটির সাইবার বিষয়ক শীর্ষ কর্মকর্তা ক্রিস্টোফার ক্রেবস বলেছেন, মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ভোট গণনায় কোন বিদেশি শক্তি হস্তক্ষেপ করেছে এমন প্রমাণ নেই। তিনি বলেছেন, কোন বিদেশি প্রতিপক্ষ মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ভোট প্রদান বা এর ফলাফল পরিবর্তনে বাধা দিতে সক্ষম বলে প্রমাণিত হয়নি।

ক্রেবস বলেছেন, চলমান ভোট গণনা এবং নির্বাচনের ফলাফল চূড়ান্ত ঘোষণার আগে বিদেশি কোন পক্ষ যেন প্রভাব খাটাতে না পারে, তা নিশ্চিত করতে নজরদারি অব্যাহত রাখা হবে। আমেরিকান জনগণ বিদেশি প্রভাবের প্রচেষ্টার বিরুদ্ধে প্রতিরক্ষার সর্বশেষ লাইন বলে জানান তিনি।

Chokroanimation

Scroll to Top