নাটোরের বাগাতি পাড়ার তমালতলার আমজাদ হোসেনের ছেলে মোশারফ হোসেন ওরফে নয়ন (৩০)। পেশায় গার্মেন্টস কর্মী। অথচ টিকটকে পুলিশের পোশাকে নিয়মিত ভিডিও করতেন তিনি। এগুলো ব্যবহার করে তিনি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকসহ বিভিন্ন মাধ্যমে নিজেকে পুলিশের অপরাধ তদন্ত শাখা (সিআইডি)’র পরিদর্শক পরিচয়ে তরুণীদের সঙ্গে পরিচিত হতেন। তাদের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তুলে ব্যক্তিগত ছবি ও ভিডিও করতেন। এরপরই ছবি, ভিডিও প্রকাশের ভয় দেখিয়ে তরুণীদের কাছ থেকে হাতিয়ে নিতেন টাকা পয়সা।
বুধবার (২০ মার্চ) গাজীপুর জেলার কালিয়াকৈর থানার বোর্ড ঘর এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
সম্প্রতি এক ভুক্তভোগী সিআইডির সাইবার পুলিশ সেন্টারে প্রতারণার শিকার হয়ে অভিযোগ করেন। অভিযোগের তদন্তে নেমে গ্রেফতার করা হয় নয়নকে।
এসময় তার কাছ থেকে সিআইডি পরিচয়ে বিশ্বাসযোগ্য করে তুলতে সিআইডির জ্যাকেট, একটি ওয়াকিটকি, নকল পিস্তল সদৃশ্য গ্যাস লাইটার, সিআইডির ভুয়া আইডিকার্ড উদ্ধার করা হয়।
বৃহস্পতিবার (২১ মার্চ) বিকেলে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন সিআইডির অতিরিক্তি পুলিশ সুপার (মিডিয়া) আজাদ রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
আজাদ রহমান জানান, নিজেকে সিআইডির পরিদর্শক পরিচয়ে নয়ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে (ফেসবুক, ইমু, টিকটক) বিভিন্ন বয়সী মেয়েদের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলেন। এরপর সুযোগ বুঝে তাদের কাছ সঙ্গে ভিডিও কলে কথা বলার সময়ে কৌশলে ব্যক্তিগত ছবি ও ভিডিও হাতিয়ে নিতেন। এরপর তাদের একান্ত ব্যক্তিগত ছবি প্রকাশের ভয় দেখিয়ে টাকা আদায় করে আসছিলেন তিনি। সম্প্রতি এক ভুক্তভোগীর অভিযোগের ভিত্তিতে সিআইডি সাইবার পুলিশ সেন্টার বিষয়টি তদন্ত করে। গ্রেফতারের পর প্রতারক নয়নের স্মার্টফোনে অসংখ্য মেয়েদের আপত্তিকর ভিডিও ফুটেজ এবং ছবি পেয়েছে। ছবি এবং ফুটেজের ব্যাপারে অভিযুক্ত প্রতারক প্রাথমিকভাবে স্বীকারোক্তি প্রদান করেছেন।
গ্রেফতার নয়ন সিআইডিকে জানিয়েছে, দীর্ঘদিন ধরে তিনি নিজ পরিচয় গোপন রেখে প্রতারণার উদ্দেশে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম (ফেইক ফেসবুক আইডি, ইমু, টিকটক) ব্যবহার করে সিআইডি ইন্সপেক্টর পরিচয় দিয়ে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তুলতেন। আসামি সিআইডি ইন্সপেক্টর পরিচয় দিয়ে ভুয়া আইডি কার্ড ও সিআইডির জ্যাকেটের আদলে জ্যাকেট টেইলার্স থেকে তৈরি করে। অনলাইনে ফেসবুক মার্কেটপ্লেস থেকে ওয়াকিটকি ও পিস্তল সদৃশ্য গ্যাস লাইটার কিনে সেটি দেখিয়ে প্রতারণা করে আসছিলেন তিনি। গ্রেফতারকৃতের বিরুদ্ধে রাজধানীর পল্টন থানা সাইবার নিরাপত্তা আইন ও পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে।