শুরু করেছিলেন টেলিভিশন নাটকের অভিনয় দিয়ে। সেখান থেকে ‘জীবনের গল্প’-এর মাধ্যমে চলচ্চিত্রে প্রথম কাজ করেন। পরে ‘এই যে দুনিয়া’, ‘গ্রাম গঞ্জের পিরীত’, ‘পাষাণের প্রেম’ ছবিগুলো করে আলোচিত হন তিনি। তারপর আসেন নির্মাণে। ‘প্রার্থনা’ ছবি নির্মাণ করে পুরস্কৃত হয়েছেন। সব মাধ্যমে মোটামুটি পরিচিতি পাওয়ার পর উপস্থাপনা দিয়ে ব্যাপকভাবে আলোচিত হন তিনি। বার বার যার এতো বিশেষণ দেয়া হচ্ছে তিনি শাহরিয়ার নাজিম জয়।
অভিনেতা পরিচয় ছাপিয়ে দর্শকদের কাছে জয় এখন দেশের নাম্বার ওয়ান উপস্থাপক। এপ্রিলে বাংলাদেশ ছাড়িয়ে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে উপস্থাপনা করতে মার্কিন মুলুকে যাচ্ছেন তিনি। হট সিটে শুধু প্রশ্ন উত্তরে থেমে থাকেননি তিনি। বেছে বেছে অভিনয়ও চালিয়ে যাচ্ছেন। ‘গুটি’ ওয়েব সিরিজে অনবদ্য অভিনয়ের কারণে সময়ের দক্ষ অভিনেতাদের টপকে দর্শক ভোটে পপুলার ক্যাটাগরিতে সম্প্রতি সেরা অভিনেতার পুরস্কার পেয়েছেন জয়।
জয় বলেন, এখনকার দর্শক আমার অভিনয়কে কীভাবে গ্রহণ করবে সেটা নিয়ে সন্দেহ ছিল। কিন্তু সেই সন্দেহ ভেঙে গেছে। তার মানে আমাকে প্রতিদিন অভিনয় করতে হবে এটা মনে করি না। আমাকে ভেবে এখন অনেকে গল্প ও চরিত্র তৈরি করছেন, এতে সম্মানিতবোধ করছি। আর দর্শক জরীপে পুরস্কার প্রাপ্তির ক্ষেত্রে সোশ্যাল মিডিয়ায় আমার পরিচিতি কাজে লেগেছে। গত ছয়মাসে উপস্থাপনায় যতগুলো কাজ করেছি সব হিট। আমি নিজে ভাইরাল হই না, যারা ভাইরাল তাদের নিয়ে কাজ করি বলেই আমাকে নিয়ে আলোচনা হয়। মানুষ আমাকে নিয়ে কথা বলে। এটা ক’জনের হয়?
কেন ভাইরালদের প্রাধান্য দিচ্ছেন জানতে চাইলে জয় বললেন, অভিনেতা বা নির্মাতারা এখন নীতিবান কতখানি? মার্কেট তো চলে কমার্সে! সোশ্যাল মিডিয়ায় যার হাইপ যতবেশি, মৌমাছি তার চাকে বেশি বসে! এটিকে টিভি, ওটিটি, বিজ্ঞাপন, সিনেমা সব মাধ্যমে ক্যাশ করা হয়। আর যদি সেই হাইপের ব্যক্তি ভালো অভিনেতা হয়ে থাকেন, তাহলে তো সেটা সুপার ব্যাপার! যেমন শাকিব খান। তার দিকে সবাই ঝুঁকবে এটা খুবই স্বাভাবিক। শুধু শিল্পের জন্য বিনিয়োগ করা মানুষের সংখ্যা কতো? অত্যন্ত নির্মম হলেও সত্য, এখন মূখ্য কনটেন্টে কতো মিলিয়ন ভিউস হলো, কত উপাজর্ন হলো।


শাহরিয়ার নাজিম জয়ের কথা, তিনি দর্শকদের প্রাধান্য দিয়ে কাজ করছেন। তারা যা চায় সেভাবেই কাজ করে সুফল পাচ্ছেন। তার শেষ ছ’মাসে জরীপ তাই ইঙ্গিত দিচ্ছে বলেও জানান তিনি। জয় মনে করেন, ফেসবুকটা আসলে মজার জায়গা। তিনি বলেন, মজার আখড়ায় বসে কোনোদিন সিরিয়াস কিছু করলে সেটা মানুষ গ্রহণ করবে না। আমি কোনো শিক্ষক বা সমাজসেবক নই, আমি আপাদমস্তক একজন এন্টারটেইনার। মানুষকে বিনোদন দেওয়া আমার কাজ।
জয় বলেন,“আমি সেটাই করে যাচ্ছি। অনেকেই আমাকে বলে দুষ্টু উপস্থাপক। দেখবেন কোনো শিশুর বেশি ট্যালেন্ট থাকলে তাকে ‘দুষ্টু’ বলা হয়। মানুষ আমাকে দুষ্টু উপস্থাপক বললে আমি সেটা এনজয় করি। আমি যে কাজ করি এখানে কোনো দর্শন নেই। আমার কাজে মানুষ বিনোদিত হচ্ছে, ভালোবাসা দিচ্ছে এতে আমি খুশি পাশাপাশি আমি সবদিক থেকে লাভবান হচ্ছি।”