সাফজয়ী অধিনায়ক বললেন- ‘ফুটবল বেশিদিন খেলতে পারবো না’ | চ্যানেল আই অনলাইন

সাফজয়ী অধিনায়ক বললেন- ‘ফুটবল বেশিদিন খেলতে পারবো না’ | চ্যানেল আই অনলাইন

ডিফেন্ডার হয়ে ফুটবল মাঠে চিনিয়ে চলেছেন নিজেকে। লাল-সবুজের জার্সিতে দলকে দিয়েছেন নেতৃত্ব। সাফ অনূর্ধ্ব-১৯ নারী চ্যাম্পিয়নশিপে শিরোপাজয়ী বাংলাদেশ দলের অধিনায়ক হিসেবে হয়েছেন আলোচনার শিরোনাম। জাতীয় দলের দরজায় কড়া নাড়তে থাকার মুহূর্ত এখন, তখনই কিনা ফুটবলই বেশিদিন না খেলার কথা জানালেন আফঈদা খন্দকার।

সাতক্ষীরা থেকে উঠে আসা বিকেএসপির প্রতিভাবান ফুটবলার আফঈদা বাফুফে ভবনে মঙ্গলবার দুপুরে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন। এদিন ওয়ালটন গ্রুপের আয়োজনে সাফজয়ী ফুটবলারদের সংবর্ধনা দেয়া হয়। সতীর্থদের সঙ্গে নিয়ে অধিনায়ক আফঈদাও উপস্থিত ছিলেন।

মেয়েদের ফুটবল লিগ, ক্যারিয়ারের ভবিষ্যৎ, প্রাপ্ত সুবিধা এবং উপার্জনের বিষয়ে আফঈদার কাছে প্রশ্ন যায়। তাতে বললেন, ‘ফুটবল আমার এখন পেশা তাই খেলছি। কিন্তু আমার পড়াশোনাটা চালিয়ে যাচ্ছি। ফুটবল আমি বেশিদিন খেলতে পারবো না। যেহেতু আমি নারী, তাই ফুটবল বেশিদিন খেলার সৌভাগ্য আমার হবে না। এজন্য আমি পড়াশোনাটাকে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছি। পড়াশোনা যদি আমি ভালোভাবে চালিয়ে যাই, তাহলে ভবিষ্যতে খেলার সঙ্গে মিলিয়ে ভালো কিছু করতে পারবো।’

নারী হওয়ার কারণে কেনো ফুটবল বেশিদিন খেলতে পারবেন না, এমন প্রশ্নে বাঘিনীদের অধিনায়ক বাস্তবতা বিবেচনায় নিয়েই এমন উপলব্ধির হয়েছে বলে পরিষ্কার ইঙ্গিত দেন।

‘বয়স বাড়ার সাথে সাথেই কিন্তু ছেলেদের ফুটবলটা খেলা হয়। ছেলেরা যেভাবে খেলতে পারে, ফুটবলটা অতদূর আমরা (মেয়েরা) হয়তো খেলতে পারবো না। একটা বয়সের পর আমাদের ফুটবলটা ছেড়ে দেয়ার দরকার হবে। আমরা হয়তো খেলতে পারবো না।’

পর্যাপ্ত সুবিধা না পাওয়া, প্রত্যাশা ও প্রাপ্তির ব্যবধানের কারণে নেতিবাচক কোনো ভাবনা দ্রুত অবসরের কারণ হবে না বলেও নিশ্চিত করেন সাফজয়ী এ তারকা ফুটবলার। দেশকে কিছু দেয়ার অঙ্গীকারটা বড় করে দেখছেন।

‘‘নেতিবাচক কিছু কাজ করে না। আমরা দেশের জন্য করছি। দেশ কী দিল, এটা আমাদের দেখার বিষয় না। আমাদের কোচ টিটু স্যার সবসময় বলেছে, ‘দেশ তোমারে থাকতে দিয়েছে। এইজন্য দেশের জন্য খেলবা।’ আমরা এইজন্য দেশের জন্য খেলি।’’

বাংলাদেশের হয়ে আর্চারিতে বিশ্ব ক্রীড়াঙ্গনে একের পর এক সাফল্য এনে দেয়া রোমান সানা আকস্মিক অবসর নিয়েছেন। দেশের জন্য অবদান রাখলেও আর্থিক সচ্ছলতা না থাকা তার এমন অকাল অবসরের কারণ। আফঈদা খন্দকারের কাছে এ প্রসঙ্গের অবতারণা হলে পড়াশোনায় অধিক মনযোগী হওয়ার ব্যাপারটিকে গুরুত্বের সঙ্গে তুলে ধরেন।

‘আর্থিক বিষয়টা দিন শেষে চলেই আসে। আমাদের পারিবারিক অবস্থা এতটা ভালো না। সেইভাবে সবকিছু চালানো সম্ভব। যতদিন খেলতে পারবো, ততদিন টাকা কামাতে (উপার্জন) পারবো। খেলাধুলা শেষ করে দিলে আমার পড়াশোনাই কাজে আসবে।’

মেয়ে ফুটবলারদের পড়াশোনার দেখভাল ও সমর্থন ঠিকঠাকভাবেই বাফুফে করছে, জানালেন আফঈদা। তার ভাষ্য, ‘ফেডারেশন সমসময় আমাদের পড়াশোনার ব্যাপারে সমর্থন করে। ইংলিশ আর গণিতের স্যার পড়াতে আসেন। আমরা যারা বিকেএসপির শিক্ষার্থী আছি, তারা বিকেএসপিতে পরীক্ষা দিতে যাই। স্যারদের সাথে পরীক্ষা কবে বা সাজেশন যেগুলো দেয়া দরকার সেগুলো নিয়ে আমরা যোগাযোগ করি।’

Scroll to Top