মুখে হাসি ফুটালো আপেল কুল

মুখে হাসি ফুটালো আপেল কুল

সুস্বাদু ফল হিসেবে অনেকেরই পছন্দের তালিকায় থাকে কুল। পুষ্টিগুণের পাশাপাশি বিষমুক্ত হওয়ায় বাজারেও রয়েছে এর বেশ চাহিদা। ফলে দিন দিন এর আবাদ বাড়ছে। কৃষি বিভাগ বলছেন, এই এলাকার মাটি কুল চাষের জন্য খুবই উপযোগী। তাই এই এলাকায় দিন দিন বাড়ছে মিষ্টি জাতের কুলের চাষ।

অতিথি আপ্যায়ন থেকে শুরু করে নিজের পরিবারের ছোট-বড় নারী কিংবা পুরুষ। এদের মধ্যে খুব কম লোকই আছেন যারা কুল পছন্দ করেন না। খেতে মিষ্টি, পুষ্টিগুণ ও বিষমুক্ত হওয়ায় সকলেরই পছন্দের ফলের তালিকায় নরসিংদীর রায়পুরার শামীম মেম্বারের এই কুল।

কম পরিশ্রম, স্বল্প জায়গায় অধিক ফলনশীল এই কুল। বাজারেও ব্যাপক চাহিদা থাকায় অধিক লাভ হওয়ায় নরসিংদীতে দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে কুল চাষের। মাত্র চার থেকে পাঁচ ফুট উচ্চতায় গাছের সকল জায়গায় থোকায় থোকায় ধরে এই কুল। এদের মধ্যে কেউ ডিজিটাল মাধ্যম ইউটিউব আবার কেউ বা কৃষি বিভাগের পরামর্শে এই মিষ্টি জাতের কুলের চারা সংগ্রহ করে চাষাবাদ শুরু করেন। এমনই একজন কুল চাষী জেলার রায়ফুরা উপজেলার ডৌকারচর ইউনিয়নের শামীম মেম্বার। তিনি তার বন্ধু মালয়েশিয়া প্রবাসী ওমর ফারুকের প্রেরণায় তিন বিঘা জমিতে আপেল কুলের চাষ করেন। তিনি এবার তার তিন বিঘা জমিতে আপেল কুল, কাশ্মীরি ও নারকেল জাতের কুলের চাষাবাদ করেছেন।

মুখে হাসি ফুটালো আপেল কুল
দিন দিন বাড়ছে মিষ্টি জাতের কুলের চাষ

শামীম মেম্বার জানান, তিনি বিদেশে যাওয়ার ইচ্ছে করেছিলেন। কিন্তু বিদেশে না গিয়ে গত বছর থেকে শুরু করেন কুল চাষের। পরে তিনি তার মালয়শিয়অ প্রবাসী বন্ধু ওমর ফারুক এর সহায়তা ও পরামর্শে শুরু করেন কুষ চাষের। তিনি এবার ৩ বিঘা জমিতে এবার কুল চাষ করেছেন। এই উন্নত জাতের কুল চারা রোপনের মাত্র ৬/৭ মাসের মধ্যেই ফল ধরা শুরু করে। প্রথম বছর উৎপাদন খরচ কিছুটা বেশী হলেও পরবর্তীতে সামান্য পরিচর্যা আর জৈব সার ব্যবহার করলেই চলে।

শামীম মেম্বারের বন্ধু ওমর ফারুক জানান, তিনি ১৪ বছর ধরে কর্মসূত্রে মালয়শিয়া রয়েছেন। মালয়শিয়া থেকেই ইউটিউব দেশে ও সেখানে বিভিন্ন ফল ও ফসলের চাষাবাদ দেখে তার বন্ধু শামীম ম্বোরকে বিদেশে যেতে না দিয়ে আপেল কুল চাষাবাদে মনোযোগী হতে বলেন। সেই থেকে শামীম মেম্বার বিদেশে না গিয়ে কুল চাষে মনোযোগ দেয়ার আবান জানান।  

কৃষি বিভাগের মতে, বাণিজ্যিকভাবে নরসিংদীর সকল উপজেলায়ই কমবেশী উচ্চ ফলনশীল জাতের এই কুল চাষ হচ্ছে। নরসিংদীর বাজারে টক-মিষ্টি কুলের ব্যাপক চাহিদা থাকায় ছোট বড় শতাধিক বাগান রয়েছে। প্রতি বিঘা কুল বাগানে বছরে বিশ থেকে ত্রিশ হাজার টাকা খরচ হয় এবং বিক্রি হয় প্রায় লাখ টাকার উপরে। লাভজনক হওয়ায় কুল চাষে আগ্রহ দেখাচ্ছেন এই এলাকার শিক্ষিত ও বেকার যুবকেরা।

সামান্য পরিচর্যা আর জৈব সার ব্যবহার করলেই চলে

নরসিংদী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা স্বাক্ষর চন্দ্র বণিক জানান, কুল চাষের জন্য নরসিংদী অঞ্চলের মাটি খুবই উপযোগী ও রসালো। এইফল চাষে পোকা-মাকড়ের আক্রমণ কম হওয়ায় কীটনাশক দেয়ার প্রয়োজন হয়না। এছাড়া কুল চাষের জমিতে একাধিক ফসল করা যায়। এজন্যই নরসিংদীতে বাণিজ্যিকভাবে কুল চাষের আবাদ বৃদ্ধি পাচ্ছে বলে জানায় কৃষি বিভাগ-

কৃষি বিভাগের সহায়তা বৃদ্ধির পাশাপাশি কৃষকদের জন্য স্বল্প সুদে ব্যাংক ঋণ পাওয়া গেলে কুল চাষ বৃদ্ধি করে দেশের বাইরে রপ্তানির মাধ্যমে বিপুল পরিমানে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করা সম্ভব বলে মনে করেন কুল চাষে জড়িত কৃষকরা।

Scroll to Top