প্রারম্ভিক শৈশবে শিশুর ভাষার বিকাশে মাতৃভাষার বিকল্প নেই

প্রারম্ভিক শৈশবে শিশুর ভাষার বিকাশে মাতৃভাষার বিকল্প নেই

গবেষণায় দেখা গেছে যে মাতৃভাষার মাধ্যমে শিশু তার পরিচিত পরিবেশকে সহজে ও স্বচ্ছন্দে বুঝতে পারে। মাতৃভাষায় শিখন ও এর চর্চা শিশুকে সৃজনশীল হতে এবং তার মধ্যে বিশ্লেষণমূলক চিন্তাদক্ষতা তৈরি করতে সাহায্য করে। মাতৃভাষা শিশুর আত্মবিশ্বাস বাড়ায় এবং শিশুকে স্বাধীনভাবে মতপ্রকাশে সহায়তা করে। তাই শিশুর প্রারম্ভিক শৈশবে মাতৃভাষার গুরুত্ব অপরিসীম। প্রারম্ভিক শৈশবে শিশুর ভাষার বিকাশের জন্য মা-বাবা, যত্নকারী ও পরিবারের সবার যা করা প্রয়োজন; তা হলো-

– শিশুর শব্দের ভান্ডার বাড়ানোর জন্য বেশি বেশি কথা বলা;
– শিশুর সঙ্গে খেলা করা;
– শিশুর বয়স উপযোগী ছড়া বলা ও গান করা;
– শিশুকে গল্প শোনানো ও তাকে নিজের মতো করে গল্প বলতে উৎসাহিত করা;
– শিশুকে শরীরের অঙ্গপ্রত্যঙ্গের নাম, বিভিন্ন বস্তু, পশুপাখি, ছবি বর্ণনা করা;
– শিশুকে প্রশ্ন করা এবং তাকে প্রশ্ন করার সুযোগ তৈরি করে দেওয়া;
– শিশুকে সহজ নির্দেশনা দেওয়া এবং তা অনুসরণ করতে সহায়তা করা;
– শিশুর সঙ্গে গান করা, গল্প ও ছড়া বলার সময়ে শুদ্ধ ও স্পষ্ট উচ্চারণে কথা বলা;
– শিশুকে কথা বলার সুযোগ ও সময় দেওয়া;

শিশুর সঙ্গে নিরাপদ বন্ধন তৈরি করা এবং তার কথা মন দিয়ে শোনা ইত্যাদি।
শিশুর ভাষার দক্ষতা উন্নয়নে মাতৃভাষার কোনো বিকল্প নেই। মাতৃভাষা শিকড়স্বরূপ। শিকড় যেমন মাটির সঙ্গে আঁকড়ে ধরে গাছকে ফুলে-ফলে বিকশিত করে, তেমনি মাতৃভাষা শিক্ষা ও চর্চা শিশুর বুদ্ধিবৃত্তিক বিকাশের সঙ্গে সমাজ, সংস্কৃতি ও মূল্যবোধের যোগসূত্র তৈরি করে। যা প্রকৃতপক্ষে শিশুকে দেশ ও জাতির প্রতি সচেতন ও শ্রদ্ধাশীল হতে এবং দেশপ্রেমিক হতে সহায়তা করে। তাই মাতৃভাষাচর্চার শক্ত ভিত তৈরি হোক শিশুর প্রারম্ভিক শৈশবে।

নাহিদ পারভীন
সিনিয়র ম্যানেজার, ইসিডি প্রোগ্রাম
ব্র্যাক আইইডি, ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়

Scroll to Top