দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে গাইবান্ধার পাঁচটি সংসদীয় আসনে আওয়ামী লীগের নৌকার মাঝি হওয়ার স্বপ্ন দেখছেন ৫৩ জন নেতা।
গাইবান্ধা জেলা আওয়ামী লীগের সর্বশেষ দলীয় সূত্র অনুযায়ী এ জেলার ৫টি আসনের বিপরীতে মনোনয়ন ফরম কিনেছেন ৫৩ জন প্রার্থী।
এর মধ্যে গাইবান্ধা-১ (সুন্দরগঞ্জ) আসনে ১০ জন, গাইবান্ধা-২ (সদর) আসনে ৮ জন, গাইবান্ধা-৩ (পলাশবাড়ী-সাদুল্লাপুর) আসনে ১৩ জন, গাইবান্ধা-৪ (গোবিন্দগঞ্জ) আসনে ১৪ জন ও গাইবান্ধা-৫ (সাঘাটা-ফুলছড়ি) আসনে নৌকার মনোনয়ন কিনেছেন ৮ জন।
গাইবান্ধা জেলার ৫টি সংসদীয় আসনেরর মধ্যে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে গাইবান্ধা-১ (সুন্দরগঞ্জ) থেকে নির্বাচিত হয়েছিলেন জাতীয় পার্টির ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারী। এছাড়া বাকি চারটি আসনেই জয়ী হয়েছিলেন আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা। আর এবারের নির্বাচনে বিএনপির অংশ নেওয়ার সম্ভাবনা প্রায় না থাকায় দলীয় প্রতীক (নৌকা) পেলেই খুব সহজে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার স্বপ্ন দেখছেন মনোনয়ন প্রত্যাশীরা।
গাইবান্ধা-১ (সুন্দরগঞ্জ) আসন:
গাইবান্ধা-১ (সুন্দরগঞ্জ) সংসদীয় আসনে নৌকার মাঝি হওয়ার স্বপ্নে ১০ জন দলীয় মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করে জমা দিয়েছেন। তারা হলেন- সুন্দরগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রয়াত সাংসদ মঞ্জুরুল ইসলাম লিটনের বড় বোন মিসেস আফরুজা বারী, সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মো. আশরাফুল আলম সরকার লেবু, জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি সৈয়দা মাসুদা খাজা, উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও প্রয়াত সাংসদ মঞ্জুরুল ইসলাম লিটনের স্ত্রী সৈয়দা খুরশিদ জাহান স্মৃতি, বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. আশরাফুল ইসলাম রঞ্জু, উপাধ্যক্ষ মোঃ আব্দুল হান্নান সরকার, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মো. মেহেদী মোস্তফা মাসুম, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক মো. আখতারুজ্জামান আকন্দ শাকিল, জেলা পরিষদ সদস্য মো. এমদাদুল হক নাদিম এবং মো. মতিউর রহমান সালু।

গাইবান্ধা-২ (সদর) আসন:
গাইবান্ধা-২ (সদর) আসনে নৌকার মাঝি হতে চান ৮ জন। তাদের মধ্যে রয়েছেন- বর্তমান সংসদ সদস্য ও হুইপ মাহবুব আরা বেগম গিনি, জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট সৈয়দ শামস উল আলম হিরু, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. মোজাম্মেল হক মন্ডল, জেলা আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি ও সাবেক পৌর মেয়র শাহ মাসুদ জাহাঙ্গীর কবির মিলন, জেলা আওয়ামী সহ-সভাপতি ফরহাদ আব্দুল্যাহ হারুন বাবলু, জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শাহ সারোয়ার কবীর এবং জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও ঘাগোয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. আমিনুর জামান রিংকু। এছাড়াও জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক নেতা শামসুল আলম টিটুল নামে একজন মনোনয়ন কিনেছেন।

গাইবান্ধা-৩ (সাদুল্লাপুর-পলাশবাড়ী) আসন:
গাইবান্ধা-৩ (সাদুল্লাপুর-পলাশবাড়ী) আসনে নৌকার মাঝি হতে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী ১৩ জন। তারা হলেন- বর্তমান এমপি ও কৃষকলীগ কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট উম্মে কুলসুম স্মৃতি, পলাশবাড়ী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি উপাধ্যক্ষ মো. শামিকুল ইসলাম সরকার লিপন, জেলা আওয়ামী লীগ সদস্য ও উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আলহাজ্ব একেএম মোকছেদ চৌধুরী বিদ্যুৎ, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও ইউপি চেয়ারম্যান মো. তৌহিদুল ইসলাম মন্ডল, জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) মো. মাহমুদুল হক, বীর মুক্তিযোদ্ধা মেজর (অব.) মো. মফিজুল হক সরকার, জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য অ্যাডভোকেট মো. জরিদুল হক, আওয়ামী যুবলীগ কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সম্পাদক মো. আজিজুর রহমান সরকার, সাদুল্লাপুর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আলহাজ্ব মো. সাহারিয়া খান বিপ্লব, সাদুল্লাপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি অধ্যক্ষ (অব.) মো. জাকারিয়া খন্দকার, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সহকারী অধ্যাপক সহীদুল্যাহেল কবির ফারুক, আজিজার রহমান বিএসসি এবং জেলা পরিষদের সদস্য ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাংস্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদক অধ্যক্ষ এসএম আব্দুর রহমান।

গাইবান্ধা-৪ (গোবিন্দগঞ্জ) আসন:
গাইবান্ধা-৪ (গোবিন্দগঞ্জ) আসনে নৌকার কাণ্ডারী হওয়ার জন্য আওয়ামী লীগের মনোনয়ন কিনেছেন ১৪ জন নেতা। তারা হলেন- বর্তমান সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা প্রকৌশলী মো. মনোয়ার হোসেন চৌধুরী, সাবেক সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য অধ্যক্ষ মো. আবুল কালাম আজাদ, জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মো. আতাউর রহমান সরকার, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. আব্দুল লতিফ প্রধান, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. মোকাদ্দেস আলী প্রধান বাদু, সেচ্ছাসেবক লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির উপদেষ্টা মন্ডলীর সদস্য মো. নাজমুল হাসান লিটন, উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট ইবনে আজিজ মো. নুরুল হুদা ফরহাদ, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক প্রধান আতাউর রহমান বাবলু, ঢাকা বিদ্যুৎ বিতরণ কর্তৃপক্ষের সাবেক নির্বাহী প্রকৌশলী মো. শাহজাহান সিরাজ, জেলা স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের (স্বাচিপ) সাবেক সাধারণ সম্পাদক ডাক্তার মো. শাহজাহান আলী সরকার, বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশনের গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা সভাপতি অধ্যক্ষ এ কে এম আব্দুর নূর, বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশনের ভারত সভাপতি এম এ শামীম, বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. নুরুল ইসলাম প্রধান এবং উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সদস্য মো. কামরুল হাসান ফাহিয়ান।

গাইবান্ধা-৫ (সাঘাটা-ফুলছড়ি) আসন:
বর্তমান সংসদ সদস্য ও ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদের সাবেক সভাপতি মাহমুদ হাসান রিপন, ফুলছড়ি উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি ও উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান জিএম সেলিম পারভেজ, সাধারণ সম্পাদক ও প্রয়াত ডেপুটি স্পীকার অ্যাডভোকেট ফজলে রাব্বী মিয়ার মেয়ে ফারজানা রাব্বী বুবলি, সাঘাটা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট সামশীল আরেফিন টিটু, উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি মো. মাহবুর রহমান লিটল, গাইবান্ধা জেলা আওয়ামী লীগের উপ-প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক উম্মে জান্নাতুল ফেরদৌস শাপলা, জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ও মুক্তিযোদ্ধা প্রজন্ম লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. আল মামুন এবং সাঘাটা উপজেলা যুবলীগের সদস্য সুশীল চন্দ্র সরকারসহ গাইবান্ধা-৫ আসনে ৮ জন আওয়ামী লীগের নৌকার মাঝি হতে চান।
এদিকে, বৃহস্পতিবার (২৩ নভেম্বর) দুপুরে তেজগাঁওয়ে ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে এক বিফ্রিংয়ে রংপুরের ৩৩টি, রাজশাহীতে ৩৯টিসহ মোট ৭২টি আসনের প্রার্থী চূড়ান্ত করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। যার চূড়ান্ত মনোনয়ন তালিকার প্রার্থীদের নাম আগামী ২৫ নভেম্বর (শনিবার) প্রকাশ করা হবে বলেও জানান সাধারণ সম্পাদক।
এসময় প্রার্থী বাছাইয়ের ক্ষেত্রে জনগণের কাছে গ্রহণযোগ্য প্রার্থীকেই প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে জানিয়ে- এই দুই বিভাগের বর্তমান সংসদ সদস্যদের কয়েকজন বাদ পড়ছেন বলেও জানান ওবায়দুল কাদের।