নীলফামারীতে নতুন আলু উত্তোলনে মেতেছে কৃষক

নীলফামারীতে নতুন আলু উত্তোলনে মেতেছে কৃষক

নীলফামারীর কিশোরগঞ্জে এবার আলু উৎপাদন করে ভাগ্য বদলের পাশাপাশি দেশের অর্থনীতে ভূমিকা রাখছে এ অঞ্চলের কৃষকরা। এবার দেশে এ অঞ্চলের প্রথম আগাম আলু উৎপাদন হয়েছে। স্থানীয় বাজারে চাহিদা মিটিয়ে বগুড়া, ঢাকা, সিলেটসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় এ আলু চড়া দামে বিক্রি করছে কৃষকেরা। আগাম সুখবর এনেছে এ আলু। এ উপজেলা আগাম আলু সূতিকাগার খ্যাত।

বাজারে চাহিদা আর দাম থাকার ফলে আগেভাগে উচু সমতলভূমিতে চাষ করেন কৃষকরা। ফলে আগাম আলু উত্তোলনকে ঘিরে কৃষক-ক্ষেত মজুর ব্যস্ত সময় পার করছেন।

জানা যায়, প্রতি বছর এ উপজেলার ক্ষুদ্র-প্রান্তিক কৃষক আগাম আমন ধান ঘরে তুলে আগাম বাজার ধরার আশায় আগেভাগে আলুর বীজ বপন করেন। বর্তমানে সেই ক্ষেত থেকে আলু উত্তোলন শুরু হয়েছে। বাড়তি ঝামেলা ছাড়াই ক্ষেতের আলু ক্ষেতে বিক্রি হচ্ছে ৭৮ টাকা কেজি দরে। এছাড়া কয়েক দিনের মধ্যে পুরোপুরি মাঠ থেকে আলু উত্তোলন শুরু হবে। চলতি বছর ৬ হাজার ৭০০ হেক্টর জমিতে আগাম আলু চাষের লক্ষমাত্রা নিধার্রণ করা হয়েছে। এর মধ্যে ৪ হাজার ৬০০ হেক্টর আগাম আলু উত্তোলন করা হবে।

নীলফামারীতে নতুন আলু উত্তোলনে মেতেছে কৃষক

সরেজমিনে দেখা যায়, আলুর মাঠে কেউ মাটি খুড়ছে, কেউ কুড়াচ্ছে। কোথাও আবার ডিজিটাল মিটারে চলছে ওজন। ক্ষেতের মাঝে ভর্তি হচ্ছে ভ্যান, ট্রলি, ট্রাক। ক্ষেতের মধ্যে আলু তোলার এমন দৃশ্য উপজেলার বিস্তীর্ণ মাঠ জুড়ে। উপজেলার রনচন্ডি ইউনিয়নের কুঠিপাড়া গ্রামের কৃষক নুরুল আলীম মাষ্টার ২২শতক জমিতে ৭৮টাকা কেজি দরে আলু ব্যবসায়ী নিকট জমিতে বিক্রি করেছে। তিনি খরচ বাদে দিগুন লাভের আশা করছেন। একই গ্রামের হজরত আলী ৬২ শতক জমিতে আগাম আলু উত্তোলন করছেন।

কৃষক হযরত আলী বলেন, বরাবরের মত চলতি বছর ১৫ সেপ্টেম্বরে বুননকৃত জমিতে ৫৫ থেকে ৬০ দিনে ফলনযোগ্য আগাম আলু উত্তোলন করছি। জমিতে নারী-পুরুষ মিলে ২৫জন শ্রমিক কাজ করছে। আগাম হিসেবে ফলন কিছুটা কম হলেও বাড়তি খরচ ছাড়াই ক্ষেতের আলু ক্ষেতে ৭৮ টাকা কেজি দরে বিক্রি করলাম।

কৃষক নুরুল আলীম মাষ্টার জানান, আগাম আলু চাষ করে ভাল লাভবান হই। এ বছরো ঊর্দ্ধমূখী দামের আশায় আগাম আমন ধান কাটামাড়াই করে সেই জমিতে আগেভাগে আগাম আলুর বীজ রোপণ করেছি। ব্যবসায়ীরা মাঠ থেকে আলু কিনে নিয়ে ঢাকাসহ বিভিন্ন বিভাগীয় শহরে সরবরাহ করছেন।

ব্যবসায়ী মতিন বলেন, আমি এখান থেকে আলু ৭৮ টাকা কেজি দরে কিনে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় নিয়ে গিয়ে ১০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করতে পারব।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা লোকমান আলম বলেন, বাজারে নতুন আলু উঠতে শুরু হয়েছে। চলতি বছর অনূকুল আবহাওয়ায় আলুর বাম্পার ফলন ও চড়া দাম পেয়ে কৃষক পরিবারে সমৃদ্ধি বয়ে আনবে। আগাম আলু আগাম ধান এ অঞ্চলের মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন আনছেন।

Scroll to Top