কলকাতা : শনিবার রাত আটটায় সিপিআইএম ওয়েস্ট বেঙ্গল ফেসবুক পেজ ও ইউটিউব চ্যানেলের পাশাপাশি দলের মুখপত্রর ওয়েব পোর্টালে দলের কর্মী সমর্থকদের প্রশ্নের উত্তর দেবেন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম। তাঁর সঙ্গে থাকবেন অভিনেতা দেবদূত ঘোষ। ইতিমধ্যেই দলের তরফে এর প্রচার শুরু করা হয়েছে। বিভিন্ন বিষয়ে দলের নিচুতলার নেতা, কর্মী, সমর্থকদের মনে জমে থাকা প্রশ্নের উত্তর দেবেন রাজ্য সম্পাদক। তবে এর মধ্যে সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ ইন্ডিয়া জোটে সিপিএম-এর অবস্থান সম্পর্কে দলের একাংশের বিভ্রান্তি। এই সম্পর্কিত প্রশ্নই বেশি থাকবে বলে মনে করছে রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞ মহলের একাংশ।
বিজেপিকে ধাক্কা দিতে ইন্ডিয়া জোটে নাম লিখিয়েছে সিপিআইএম। আর এই জোটই জট হয়ে ফিরে এসেছে দলের কাছে। দলের নেতা, কর্মী, সমর্থকদের একাংশের বিভ্রান্তি বিড়ম্বনা বাড়িয়েছে নেতৃত্বের। হাজারো প্রশ্নের মধ্যে পড়ে হাতছাড়া হওয়া ভোট যা ফিরে এসেছে লোকসভা ভোটে তা আবার চলে যাবে না তো? এমনই আশঙ্কার মধ্যে পড়ে সেই নিচুতলার কর্মী সমর্থকদের বোঝাতে মাঠে নেমেছেন খোদ সিপিআইএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম। কী সেই প্রশ্ন? প্রথমত, ইন্ডিয়া জোটে সিপিএম কংগ্রেসের পাশাপাশি রয়েছে রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেস। তার মানে কি তৃণমূলের সঙ্গেও জোট করে ফেলল নেতারা? আগামী লোকসভা নির্বাচনে আসন সমঝোতা হবে? তাহলে কী তৃণমূলের হয়ে তাঁদেরও ভোটের ময়দানে নামতে হবে? যদি না হয় ‘বাংলায় কুস্তি দিল্লিতে দোস্তি’র যে প্রচার বিজেপি করছে তা কি সত্যি? আবার ইন্ডিয়া জোটে দল থাকলে সমন্ময় কমিটিতে কেনও থাকলো না? সমন্ময় কমিটিতে থাকা যদি অনুচিত হয় তাহলে বামফ্রন্টের আর এক শরিক দল সিপিআই কেনও থাকল?
দলের নেতা কর্মী সমর্থকদের মনের এই প্রশ্নগুলোকে খুঁচিয়ে দিয়ে বিজেপি আবার আসরে নেমে পড়েছে বামদের ভোট ব্যাঙ্ক নিজেদের দিকে টানতে। আর এই আশঙ্কা থেকেই নড়েচড়ে বসেছে আলিমুদ্দিন স্ট্রিট। শেষ রাজ্য কমিটির বৈঠকে জেলার নেতারা এই ইঙ্গিত দিয়েওছিলেন। ধূপগুড়ি বিধানসভার উপনির্বাচনে দলের শোচনীয় ফলাফলের জন্যও এই বিভ্রান্তি রয়েছে বলেও মনে করছেন কেউ কেউ। সেই অংশকে সচেতন করার জন্য বেশকিছু কর্মসূচি নেওয়ার সিদ্ধান্তও হয়েছিল। কিন্তু তার আগেই আসরে নেমে পড়েছেন রাজ্য সম্পাদক।
রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞ মহলের একাংশের মতে বিজেপি ভোটব্যাঙ্ক টানার কৌশল নেওয়ার আগেই সময় নষ্ট না করে সেই অংশকে বোঝাতে কর্মসূচি নিয়েছে সিপিআইএম। দলীয় সূত্রে খবর, যুক্তি তক্ক গপ্পো নামে এক কর্মসূচি শুরু করেছে সিপিআইএম। ইমেল বা চিঠির মাধ্যমে প্রশ্ন করতে পারবেন দলের নেতা কর্মী সমর্থকেরা। রাজ্য সম্পাদক নিজে তার উত্তর দেবেন। পরবর্তী সময় অন্য নেতৃত্বকেও এই কর্মসূচিতে নিয়ে আসা হবে। তবে ধসের আগেই বাঁধ দেওয়ার এই কাজে প্রথমেই নামতে চলেছেন মহম্মদ সেলিম।
গত লোকসভা নির্বাচনে একটিও আসন জিততে পারেনি সিপিআইএম। বিধানসভা আসনেও শূন্য। সেই জায়গায় উঠে এসেছে বিজেপি। দলের ভোট বিজেপির দিকে চলে যাওয়াতেই এই ফল হয়েছিল। এর পর নড়েচড়ে বসে আলিমুদ্দিন স্ট্রিট। তারপর আস্তে আস্তে সেই ভোট ফিরে আসতে শুরু করে। গত বেশ কয়েকটি উপনির্বাচনে ফলাফলে তার প্রভাব পড়ে। কিন্তু ইন্ডিয়া জোটে যাওয়ার পর দলের একাংশের মধ্যে বিভ্রান্তি দেখা দিয়েছে। ধূপগুড়ি বিধানসভা উপনির্বাচনে তাই ফল খারাপ হয়েছে বলে মত জেলা নেতৃত্বের একাংশের। আগামী লোকসভা নির্বাচনে সেই বিভ্রান্তি কাজে লাগিয়ে নিজেদের দিকে সিপিআইএমের ভোট আবার নিজেদের দিকে টানতে চাইছে বিজেপি। এমন অবস্থায় দ্রুত পদক্ষেপ করে হারানো জমি নিজেদের দখলে রাখতে তৎপরতা শুরু করে দিল সিপিআইএম। আর দলের নিচুতলার মনের কথা জানতে রাজ্য সম্পাদকের এই উদ্যোগে উৎসাহ দেখা দিয়েছে কর্মী সমর্থকদের মধ্যে।
Published by:Arpita Roy Chowdhury
First published:
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।