সাইদুর রহমানের অলিম্পিকে অংশ নেওয়ার অনেক লম্বা সময় পর তাঁর উত্তরসূরি খুঁজে পায় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়। ৩২ বছর পর ২০১৬ সালে রিও অলিম্পিকে অংশ নেন দেশের বর্তমান দ্রুততম মানবী শিরিন আক্তার। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগে পড়েছেন এই দৌড়বিদ। দেশের দ্রুততম মানবীর খেতাব পেয়েছেন ১৫ বার। সর্বশেষ এ বছর ৪৭তম জাতীয় অ্যাথলেটিকস প্রতিযোগিতাতেও ১২.১১ সেকেন্ডে দৌড় শেষ করেন দ্রুততম মানবী শিরিন।
বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়েও বেশ কিছু পদক পেয়েছেন শিরিন। নিজের বিশ্ববিদ্যালয়কে এসব পদক এনে দিতে পেরে তিনি দারুণ গর্বিত। মুঠোফোনে বলছিলেন, ‘আমি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হই ২০১৪-১৫ সেশনে। এরপর ২০১৯ সাল পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয় গেমসে চ্যাম্পিয়ন ও ব্যক্তিগত চ্যাম্পিয়ন হয়েছি। বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াকালে বিশ্ব ইউনিভার্সিটি গেমস খেলারও সুযোগ পেয়েছি ইতালির নাপোলিতে। বিদেশের মাটিতে নিজের দেশ বা নিজের বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিনিধিত্ব করতে পারা আমার জন্য অনেক গর্বের ও আনন্দের।’ এসব অর্জনের ক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয়ের সবার সহযোগিতা পেয়েছেন, সে কথাও বললেন শিরিন।
তাঁদের ক্যাম্পাস থেকেই দেশের তিন দ্রুততম মানব-মানবী উঠে এসেছেন, ব্যাপারটা বর্তমান শিক্ষার্থীদেরও গর্বিত করে। কথা হলো রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান দ্রুততম মানব সংস্কৃত বিভাগের শিক্ষার্থী শামিউল হাসানের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘ক্রীড়া ক্ষেত্রে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের আলাদা একটা অবস্থান আছে। বাংলাদেশের তিন দ্রুততম মানব–মানবী আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের, এটা একজন দৌড়বিদ হিসেবে আমাকেও অনুপ্রাণিত করে। কিন্তু জাতীয় পর্যায়ে ভালো করতে খেলোয়াড়দের আরও সুযোগ করে দিয়ে ভর্তির ব্যবস্থা করা দরকার। আমাদের এখানে খেলাধুলার পরিবেশ বেশ ভালো। জিম বা অন্যান্য সুযোগের পাশাপাশি এখন উপবৃত্তির ব্যবস্থাও করা হয়েছে।’
কিছুটা আক্ষেপের কথা বললেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শারীরিক শিক্ষা বিভাগের উপপরিচালক পার্থপ্রতিম মল্লিক। তিনি বলেন, ‘প্রতিষ্ঠার পর থেকেই ক্রীড়া ক্ষেত্রে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের একটা আলাদা সুনাম ছিল। কিন্তু দিন দিন সেটা কমে যাচ্ছে। ভর্তিপ্রক্রিয়ার নানা জটিলতার কারণে আমরা যোগ্য অ্যাথলেটদের নিতে পারছি না। এই প্রক্রিয়া সহজ করলে হয়তো আমরা ভালো ভালো অ্যাথলেট পাব, যাঁরা বিশ্ববিদ্যালয়ের সুনাম বৃদ্ধি করবেন।’