সম্প্রতি বাংলাদেশ থেকে রপ্তানি হওয়া কিছু পোশাক ‘স্বাস্থ্যঝুঁকির’ অজুহাতে প্রত্যাহার করার নির্দেশ দিয়েছে বিশ্বের ১০০টির বেশি দেশে অর্থনৈতিক ও আর্থ-সামাজিক নীতি সহায়তা প্রদান করা সংস্থা অর্গানাইজেশন ফর ইকোনমিক কো-অপারেশন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (ওইসিডি)। তবে সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এসব পোশাক রপ্তানি প্রত্যাহার করে নেওয়ার বিষয়ে বাংলাদেশের কোনো দায় নেই। বাংলাদেশ সব সময় বায়ারের মানদণ্ড অনুযায়ী পোশাক বানায়।
পোশাকের মান নিয়ে যে অভিযোগ উঠেছে সেগুলো ক্রেতার সব নির্দেশনা মেনেই তৈরি করা হয়েছে বলেও জানান তারা। এসব পোশাক তৃতীয় পক্ষের পরিদর্শন আর ল্যাব টেস্ট করার পরেই রপ্তানি করা হয়েছে বলে দাবি করেছেন সংশ্লিষ্টরা। বাংলাদেশের পক্ষ থেকে পণ্যের চাহিদামাফিক মান রক্ষা করেই পোশাক রপ্তানি করা হয়েছে বলেও উল্লেখ করেন তারা।
চলতি বছর ১২টি দেশের বাজার থেকে বাংলাদেশের কারখানায় তৈরি হওয়া পোশাক উঠিয়ে নিতে বাধ্য করেছে নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলো। এর কারণ হিসেবে একেক দেশে একেক ধরনের অজুহাত তুলে ধরা হয়েছে। আবার অনেক দেশে বিক্রি হওয়া পোশাক গ্রাহকদের কাছ থেকে ফেরত নিয়ে তাদের টাকা ফিরিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ওইসিডির তথ্যে দেখা যায়, বিশ্বের বিভিন্ন দেশের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশে তৈরি পোশাকের বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ এনেছে, সেগুলোর মধ্যে আছে
• পোশাক পরার কারণে চাপে শ্বাসরোধ হওয়ার শঙ্কা
• বাচ্চাদের পাজামায় মেটাল বাটন বা জিপারের কারণে আঘাত পাওয়ার আশঙ্কা,
• ঢিলেঢালা হওয়ায় আগুনের সংস্পর্শে আসার ঝুঁকি,
• পোশাকে অতিমাত্রায় রাসায়নিক পদার্থ থাকা,
• আগুন প্রতিরোধী মান নিশ্চিত না হওয়া ইত্যাদি।
আগেও ওয়ালমার্টের পোশাক প্রত্যাহার হয়েছে
নিয়ন্ত্রকসংস্থা ওইসিডির তথ্য-উপাত্ত ঘেঁটে দেখা যায়, বিভিন্ন দেশে বাংলাদেশের কারখানায় তৈরি হওয়া পোশাক জনস্বার্থে বাজার থেকে তুলে নেওয়ার ঘটনা আগেও ঘটেছে। ২০২২ সালে এই রকম ঘটনা ঘটেছে চারবার এবং ২০২১ সালে পাঁচবার। আর চলতি বছরে এখন পর্যন্ত ১২টি ঘটনা ঘটেছে।
উপসংহার
ঘটনাগুলো কোনটাই বাংলাদেশে তৈরি পোশাক বলে হচ্ছে এমন নয়। আন্তর্জাতিক বিভিন্ন ব্র্যান্ড যেমন- জর্জ, টার্টলডোব লন্ডন, স্পোর্টল্যান্ড, টার্গেট অস্ট্রেলিয়া, বাচ্চাদের পোশাক বাজারজাতকারী প্রতিষ্ঠান কিকি অ্যান্ড কোকো, মাগলিয়া ব্যামবিনো, রেট্রো জিনস, ব্রোকার্স অ্যাথলেটিক, যুক্তরাষ্ট্রের সেলফি ক্র্যাফ্ট কোম্পানি এবং সাইপ্রাসের একটি স্বনামধন্য কোম্পানি। এরা নিজেরাই পোশাক এর বিবরণ তৈরি করতে গিয়ে ওইসিডি’র মানদণ্ড অনুসরণ না করায় এই পোশাক প্রত্যাহারের ঘটনা ঘটেছে। পশ্চিমা ব্র্যান্ডগুলো তাদের পণ্যের মানের ব্যাপারে অতিমাত্রায় খুঁতখুতে হওয়ায় এমন ঘটনা প্রায়ই ঘটে। এতে উদ্বিগ্ন হওয়ার কোন কারণ নেই বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।