হাওর অঞ্চলে মহররম-সংস্কৃতির নিজস্ব রূপান্তর

হাওর অঞ্চলে মহররম-সংস্কৃতির নিজস্ব রূপান্তর

জানলাম, এ সময়ে কেউ আমিষ খান না, অতীতে নাকি চুল-দাড়ি-নখও কাটতেন না কেউ, আর পুরুষেরা যেতেন না স্ত্রী-সংসর্গে। কমবেশি সবাই রোজা রাখেন আশুরা পর্যন্ত। মহররমের চাঁদ দেখার আগেই প্রতি পরিবারে সাধ্যানুযায়ী চিড়া-মুড়ি প্রস্তুত করা হয়, চাঁদ দেখার পর থেকে ১২ দিন ঢেঁকিতে ধান-চাল কোটা কড়াকড়িভাবে নিষিদ্ধ। আশুরার দিবাগত রাতে জীবনহানির আশঙ্কায় অতিপ্রয়োজনেও কেউ ঘর থেকে বের হন না। এতদ্ব্যতীত আলাই মিয়ার মাজারসহ বিভিন্ন পাড়ার দরগাহগুলো ‘চাটার তৈলের’ প্রদীপ জ্বালানো হয় (মৃৎপাত্রে শর্ষের তেলে সুতা-সলিতায় অগ্নিসংযোগ)। অবলোকন করলাম নয়া সাংস্কৃতিক অভিব্যক্তি, যা ধর্মাচারকে ছাপিয়ে যায়। আর এই যে শত শত নগ্নপদ নারী-পুরুষ দেখছি শুয়ে-বসে আছেন উঠানে, বিভিন্ন ঘরের মেঝেতে, বারান্দায় তাঁদের শয্যা দিলেও নেবেন না। কারণ, এখন আশুরা, দুনিয়াটা নত হয়ে যাবে কষ্টে ও বিষাদে, এ সময়ে আরাম কিসের? তাঁরা সব এসেছেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া, সিলেট, হবিগঞ্জ, সুনামগঞ্জ, ময়মনসিংহ, শেরপুর, নেত্রকোনা, কিশোরগঞ্জ প্রভৃতি জেলা থেকে।

Scroll to Top