হলি আর্টিজান হামলা মামলায় হাইকোর্টের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ | চ্যানেল আই অনলাইন

হলি আর্টিজান হামলা মামলায় হাইকোর্টের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ | চ্যানেল আই অনলাইন

নয় বছর আগে রাজধানীর গুলশানের হোলি আর্টিজান বেকারিতে হামলা মামলায় সাত আসামীকে আমৃত্যু কারাদণ্ড দেয়া হাইকোর্টের পূর্নাঙ্গ রায় প্রকাশিত হয়েছে।

সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে ২২৯ পৃষ্ঠার পূর্ণাঙ্গ রায়টি প্রকাশ করা হয়েছে। এই রায়ে হাইকোর্ট বলেছেন, ‘ঘটনাস্থলে উপস্থিত না থাকলেও এই সাত আপিলকারী ষড়যন্ত্র ও ঘটনায় সহায়তা করেছেন, যা সন্দোতীতভাবে প্রমাণিত হয়েছে। ষড়যন্ত্র ও ঘটনায় (জঙ্গি হামলা) সহায়তার কারণে সন্ত্রাসবিরোধী আইন, ২০০৯ এর ধারা ৬ এর ১ উপধারা (ক) (আ) দফায় বর্ণিত অপরাধে তারা দোষী। কিন্তু সন্ত্রাস বিরোধী বিশেষ ট্রাইব্যুনাল সংশ্লিষ্ট ধারা-উপধারার সঠিক উপলব্ধি না করে আপিলকারীদের সর্বোচ্চ সাজা মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন, যা সঠিক ও গ্রহনযোগ্য নয়। যে কারণে উক্ত রায়টি হস্তক্ষেপযোগ্য।’

এই মামলার সাক্ষ্য-প্রমাণ, আসামিদের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি, উভয় পক্ষের আইজীবীদের বক্তব্যের পর‌্যালোচনা তুলে ধরে রায়ে বলা হয়েছে, ‘আসামিদের বিরুদ্ধে সন্ত্রাস বিরোধী আইন, ২০০৯-এর ৬(১) (ক) (অ) (আ) ধারায় বর্ণিত অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমানিত হয়েছে গণ্য করে বিচারিক আদালতের দেওয়া মৃত্যুদন্ডের পরিবর্তে দণ্ডিতদের উক্ত আইনের ৬(২) (আ) ধারায বর্ণিত শাস্তি যাবজ্জীবন কারাদন্ডে দন্ডিত করা হল। তবে হত্যাকান্ডের নির্মমতা, নৃশংসতা, ঘটনার সময় ঘটনাস্থলে সন্ত্রাসীদের সামগ্রিক নিষ্ঠুর আচরণ এবং এ ঘটনায় বহির্বিশ্বে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হওয়া বিবেচনায় নিয়ে আসামিদের প্রত্যেককে আমৃত্যু কারাদন্ড দেওয়া হলে ন্যায়বিচার নিশ্চিত হবে বলে আমরা মনে করি।’

এছাড়া হাইকোর্ট তার রায়ে বলেন, ‘বিচারিক আদালতের দেওয়া মৃত্যুদণ্ডাদেশ রদ ও রহিত করে সন্ত্রাসবিরোধী আইনের ৬(২)(আ) ধারায় দোষী সাব্যস্ত করে তাঁদের প্রত্যেককে (সাত আসামি) আমৃত্যু কারাদণ্ড ও ৫০ হাজার টাকা করে অর্থদণ্ড অনাদায়ে আরও পাঁচ বছর কারাদণ্ডে দণ্ডিত করা হল’

২০১৬ সালের ১ জুলাই রাতে রাজধানীর গুলশানে হোলি আর্টিজান বেকারিতে নৃশংস এক হামলা চালানো হয়। দেশি-বিদেশি অতিথিদের জিম্মি করে এবং কুপিয়ে ও গুলি করে ২২ জনকে হত্যা করা হয়। নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে ইতালির নাগরিক নয়জন, জাপানের সাতজন, ভারতের একজন ও বাংলাদেশি তিনজন ছিলেন। অন্যদিকে জিম্মিদের মুক্ত করতে অভিযান চালাতে গিয়ে বোমা হামলায় নিহত হন পুলিশের দুই কর্মকর্তা। এ ঘটনায় করা মামলার বিচার শেষে ২০১৯ সালের ২৭ নভেম্বর ‘নব্য জেএমবির’ সাত সদস্যকে মৃত্যুদণ্ড দিয়ে রায় দেন ঢাকার সন্ত্রাসবিরোধী বিশেষ ট্রাইব্যুনাল।

এরপর মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তদের ডেথ রেফারেন্স ও আসামিদের আপিল শুনানি শুরু হয় হাইকোর্টে। শুনানি শেষে ২০২৩ সালের ৩০ অক্টোবর বিচারপতি সহিদুল করিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ বিচারিক আদালতে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত সাত আসামীকে আমৃত্যু কারাদণ্ড দিয়ে রায় ঘোষণা করেন। হাইকোর্টের রায়ে যে সাত আসামিকে আমৃত্যু কারাদণ্ড দেয়া হয় তারা হলেন রাকিবুল হাসান ওরফে রিগ্যান, মো. জাহাঙ্গীর হোসেন ওরফে রাজীব গান্ধী, আসলাম হোসেন ওরফে র‌্যাশ, হাদিসুর রহমান, আবদুস সবুর খান ওরফে সোহেল মাহফুজ, মামুনুর রশীদ ওরফে রিপন ও শরিফুল ইসলাম খালেদ।

Scroll to Top