সেলুলার জেলের পরই উত্তরবঙ্গের এই দুর্গ, ব্রিটিশদের কুখ্যাত কারাগার…! জানেন কোথায়? পা রাখলেই জ্বলজ্বল করে পাঁচ শতাধিক বিপ্লবীদের মুখ

সেলুলার জেলের পরই উত্তরবঙ্গের এই দুর্গ, ব্রিটিশদের কুখ্যাত কারাগার…! জানেন কোথায়? পা রাখলেই জ্বলজ্বল করে পাঁচ শতাধিক বিপ্লবীদের মুখ

Last Updated:

আন্দামানের সেলুলার জেলের পর এটিই ছিল ব্রিটিশ ভারতের সবচেয়ে কুখ্যাত ও দুর্গম কারাগার। এলাকাবাসীরা চাইছেন সংরক্ষণ করা হোকই স্থানটিকে।

+

সেলুলার জেলের পরই উত্তরবঙ্গের এই দুর্গ, ব্রিটিশদের কুখ্যাত কারাগার…! জানেন কোথায়? পা রাখলেই জ্বলজ্বল করে পাঁচ শতাধিক বিপ্লবীদের মুখ

বক্সা দুর্গ

আলিপুরদুয়ার: আলিপুরদুয়ারের বক্সা দুর্গের ঐতিহ্য কারও অজানা নয়। বক্সা পাহাড়ে রয়েছে এই দুর্গটি। তবে ইতিহাস প্রসিদ্ধ এই স্থানটি ধীরে ধীরে চলে যাচ্ছে ধ্বংসের মুখে। ঐতিহাসিক বক্সা দুর্গ থেকে এক সময় পৌরাণিক কিছু বৌদ্ধ মূর্তি ও স্তম্ভের হদিশ মিলেছে। যার থেকে বোঝা যায় সেখানে দুর্গ তৈরির আগে কোনও বৌদ্ধ মঠ ছিল। বক্সা দুর্গ ভারতের ইতিহাসে এক গুরুত্বপূর্ণ স্থান অধিকার করে।

১৭৭৩ সালে এই দুর্গটি প্রথমবারের জন্য ব্রিটিশদের চোখে পড়ে। কোচবিহাররের রাজার আমন্ত্রণে ব্রিটিশরা এই দুর্গ দখল করে নেয়। ১৮৬৫ সালের ১১ নভেম্বর, সিঞ্চুলার চুক্তির অংশ হিসেবে আনুষ্ঠানিকভাবে দুর্গটি ব্রিটিশদের হাতে তুলে দেওয়া হয়। দুর্গটি আগে বাঁশের তৈরি ছিল। ব্রিটিশরা এটিকে পাথরের দুর্গে রূপান্তরিত করে। পরবর্তীকালে ১৯৩০-এর দশক অবধি দুর্গটি উচ্চ নিরাপত্তাযুক্ত কারাগার ও ডিটেনশন ক্যাম্প হিসেবে ব্যবহৃত হয়। আন্দামানের সেলুলার জেলের পর এটিই ছিল ব্রিটিশ ভারতের সবচেয়ে কুখ্যাত ও দুর্গম কারাগার।

বিনা বিচারে বন্দি করে রাখার জন্য পাহাড়ের ওপর দুর্গম আলিপুরদুয়ারের এই স্থানকে বেছে নেয় ইংরেজরা। ১৯৩৭ সাল পর্যন্ত এখানে মোট বন্দি ছিলেন ৫২৫ জন। বন্দি বিপ্লবীরা একবার জেলের ভেতরে রবীন্দ্র জয়ন্তী পালন করেন এবং কবিকে জন্মদিনের অভিনন্দন জানান। স্বয়ং রবীন্দ্রনাথ তখন দার্জিলিং অবস্থান করছিলেন। এ কথা জানতে পেরে তিনি তার প্রত্যুত্তর দেন এই বলে “অমৃতের পুত্র মোরা কাহারা শোনাল বিশ্বময়, আত্মবিসর্জন করি আত্মারে কে জানিল অক্ষয়”। হিজলী জেলে গুলি চালনার প্রতিবাদে বক্সায় বন্দি বিপ্লবীরা অনশন করেছেন। প্রমথ ভৌমিক, জ্ঞান চক্রবর্তী, কৃষ্ণপদ চক্রবর্তী প্রমুখ অনুশীলন সমিতি ও যুগান্তর দলের জাতীয়তাবাদী বিপ্লবীদের এই দুর্গে ১৯৩০-এর দশক অবধি বন্দি করে রাখা হয়েছিল। পরবর্তীকালেও কবি সুভাষ মুখোপাধ্যায়, বিনয় চৌধুরী, সতীশচন্দ্র পাকড়াশী, ননী ভৌমিক, পারভেজ শাহেদী, চিন্মোহন সেহানবীশ প্রমুখ কমিউনিস্ট বিপ্লবী ও বুদ্ধিজীবী এই দুর্গে বন্দি ছিলেন ১৯৫০-এর দশকে।
আপনার শহরের হাসপাতাল এবং চিকিৎসকদের নামের তালিকা পেতে এখানে Click করুন

১৯৫৯ সালে চিন তিব্বত আক্রমণ করার পর ওই দুর্গকেই তিব্বতি শরনার্থী শিবির হিসেবে ব্যবহার করে ভারত সরকার। যেখানে টানা ১০ বছর কাটানোর পর ওই তিব্বতি বৌদ্ধদের পাকাপাকি ভাবে ১৯৬৯ সালে পুনর্বাসন দেওয়া হয় ধর্মশালায়। এলাকাবাসীরা চাইছেন সংরক্ষণ করা হোকই স্থানটিকে।

Annanya Dey

বাংলা খবর/ খবর/উত্তরবঙ্গ/

সেলুলার জেলের পরই উত্তরবঙ্গের এই দুর্গ, ব্রিটিশদের কুখ্যাত কারাগার…! জানেন কোথায়? পা রাখলেই জ্বলজ্বল করে পাঁচ শতাধিক বিপ্লবীদের মুখ

Scroll to Top