সত্তর-আশির দশকের কথা। বাংলা চলচ্চিত্রের তখন স্বর্ণযুগ। পারিবারিক ও সামাজিক জীবনে বাংলা সিনেমার প্রভাব মারাত্মক। সিনেমা ছাড়া মধ্যবিত্তের জীবন যেনো একেবারেই রঙহীন। সিনেমার অভিনেতা-অভিনেত্রী আর গায়ক-গায়িকাদের নিয়ে ঘরে-বাইরে, আড্ডায়-গল্পে তুমুল উৎসাহ-উদ্দীপনা। আর রেডিওতে সিনেমার একটি প্রিয় গান শোনার দুর্নিবার অপেক্ষা থাকতো সবার। এ কারণে রেডিও’র ‘বিজ্ঞাপন তরঙ্গ’, ‘অনুরোধের আসর’ বা সৈনিক ভাইদের অনুষ্ঠান ‘দুর্বার’ কেউ মিস করতে চাইতেন না। এসব অনুষ্ঠান প্রিয় শিল্পীদের গাওয়া সিনেমার গান অপেক্ষায় থাকা শ্রোতাদের হ্নদয়কে সত্যিই অন্যরকম আনন্দে ভরিয়ে দিত।
সেসময় চলচ্চিত্রের প্লেব্যাকে গায়িকাদের মধ্যে ফেরদৌসী রহমান, আন্জুমান আরা বেগম, শাহনাজ রহমতুল্লাহ, রুনা লায়লা এবং সাবিনা ইয়াসমিনরা ভীষণরকম জনপ্রিয় হয়ে উঠেছেন। চলচ্চিত্রে গাওয়া তাদের জনপ্রিয় গানগুলো মানুষের ঠোঁটে ঠোঁটে ঘুরছে। উদাস দুপুরে কিংম্বা জোসনাময় রাতে রেডিওতে ভেসে আসা সেই গান শ্রোতাদের কাছে যেন এক মধুক্ষণ। ঠিক সেই সময়ে এক তরুণ গায়িকার অনন্য কণ্ঠ নিবেদন সবখানে যেন হৈ চৈ ফেলে দেয়। তিনি কণ্ঠশিল্পী আবিদা সুলতানা। আমাদের সঙ্গীত আকাশের এক উজ্জ্বল নক্ষত্র, এক হীরকখণ্ড। কণ্ঠে যিনি এখনও ভীষণ সজীব, প্রাণবন্ত। গায়নশৈলিতেও যিনি অনন্য। টেলিভিশন লাইভ বা স্টেজে তিনি এখনও প্রাণময়, আকর্ষণীয়া, অতুলনীয়া, চিরসবুজ। এখনও সুর ছড়িয়ে দিয়ে শ্রোতাদের মোহাবিষ্ট করতে পারেন নিমিষেই। তার কালের অনেককেই এখন তেমন একটা দেখা না গেলেও তিনি আছেন সুরের মায়া ও ছায়ায়। তার স্বকণ্ঠে তাই তার গাওয়া সেই জনপ্রিয় সিনেমার গানগুলো শুনলে এখনও দর্শক শ্রোতারা সন্দেহাতীতভাবে বিমুগ্ধ হন।
সত্তর-আশির দশকে বাংলা চলচ্চিত্রে আবিদা সুলতানা যে গানগুলোতে প্লেব্যাক করেন এর মধ্যে বেশ কিছু গান রীতিমত কালজয়ী। সেই গানগুলোর আবেদন, সৌন্দর্য, আভিজাত্য যেনো একটুও ফুরায়নি। তার গাওয়া গানের কারণেই অনেক ছবির নাম ও নায়িকা এখনও হারিয়ে যায়নি। যেন গানই সিনেমাগুলোর নাম সমুখে এবং স্মরণে রেখেছে।
সুরের ঐশ্বর্য নিয়ে আবিদা সুলতানা তাই এখনও আলোকিত। এখনও মোহময়ী, এখনও প্রাণবন্ত। গান গাইতে গেলেই নিজেকে উজাড় করে দেন। স্টেজ আর টেলিভিশন লাইভে দেখা যায় প্রতিটি গানের আপন ভাব অক্ষুন্ন রাখতে তিনি এখনও সচেষ্ট। এ কারণেই কাব্যময় কথা আর অনন্য সুরের সেই সিনেমার গান আর আবিদা সুলতানা অনেকটাই সমার্থক হয়ে আছেন।
অনেক ছবির প্লেব্যাক করেছেন এই কণ্ঠশিল্পী। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য- ‘ইয়ে করে বিয়ে’, ‘ঝড়ের পাখি’, ‘আবার তোরা মানুষ হ’ ‘তিতাস একটি নদীর নাম’, ‘আলো তুমি আলেয়া’, ‘তালুকদার’, ‘ফেরারী বসন্ত’, নান্টুঘটক’ ‘উজানভাটি’, ‘বাজিমাত, ‘লাল মেম সাহেব’, ‘এখনই সময়’, ‘ছুটিরঘণ্টা’, ‘আখেরী নিশান’, ‘সুদআসল’, ‘পুরস্কার’, ‘তৃষ্ণা’, ‘বানজারান’, ‘রাধাকৃষ্ণ’, নিমাই সন্ন্যাাসী’,‘ জন্মদাতা’, ‘মান অভিমান’, ‘মিলনতারা’, ‘মরণপণ’, ‘রাঙাভাবী’, ‘পাগলী’, ‘রাজমহল’, ‘খোঁজখবর’, ‘উজ্বল সূর্যের নিচে’, ‘সোনার নাও পাবনের বৈঠা’, ‘দুস্যু ফুলন দেবী’, ‘মহুয়া সুন্দরী’, ‘অগ্নিসাক্ষর’, ‘দস্যুরাণী’, ‘ঈমান’, ‘বৌমা‘ ‘মরণের পরে’, ‘তাজ ও তলোয়ার’, ‘জীবনের গল্প’। আরও অনেক অনেক সিনেমা রয়েছে।
চলচ্চিত্রে প্রথম প্লেব্যাক করেন সিরাজুল ইসলাম ভূঁইয়া পরিচালিত ‘নিমাই সন্নাসী’ ছবিতে। তখন তিনি একেবারেই তরুণী। গানের কথা ছিল ‘রাগ করোনা বিষ্ণুপ্রিয়া।’ সুরকার ছিলেন আনোয়ার কবীর। স্বাধীনতার পর আবিদা সুলতানা যেন একটু নতুন রুপে আসেন। ৭৩ সালে ইউসুফ জহির পরিচালিত ‘ইয়ে করে বিয়ে’ ছবি মুক্তি লাভ করে। এই ছবিতে সুরকার আমির আলীর সুরে গাইলেন ‘ভালোবাসার মূল্য যে কি/ সেতো আমি বুঝিনি’-এই গানটি। জনপ্রিয় নায়িকা ববিতার লিপে গানটি সবার মন জয় করে ফেলে। রেডিওতে গানটি বাজতে থাকে রাতদিন। গানের সুর ছড়িয়ে পড়ে প্রত্যন্ত বাংলাতে। এই বছরে তিনি আরও গাইলেন সিবি জামান পরিচালিত ‘ঝড়ের পাখি’ চলচ্চিত্রে। খান আতার সুরে শাবানার লিপে ‘কখন গোপনে নিলে ঠাঁই নয়নে/ কিছু জানিনি- এ গানটি তরুণীদের মনে অন্যরকম জায়গা করে নিল। এ দুটি গান নিজস্ব স্বকীয়তায় অনন্য। দুটি গানই তাকে অনন্য উচ্চতায় নিয়ে যাওয়ার দ্বার উন্মুক্ত করে। তবে মূল চমকটা আসে সামান্য দেরিতে। এ বছর প্রখ্যাত পরিচালক, সুরকার-গীতিকার খান আতা নির্মাণ করেন বহুল আলোচিত ‘আবার তোরা মানুষ হ’ চলচ্চিত্র। এই ছবিতে আবিদা সুলতানা প্লেব্যাক করেন ‘তুমি চেয়েছিলে ওগো জানতে/কেন এত ভালো লাগে তোমায়। ববিতার লিপে এই গানটি রীতিমতো অমরত্ম লাভ করে আছে। আবিদা সুলতানার ¯সিগ্ধ কণ্ঠে গাওয়া এই গানের জনপ্রিয়তা সামান্যতম ক্ষুন্ন হয়নি। বরং দিন যতই যাচ্ছে ততই যেনো এই গানটির কদর বাড়ছে। সত্তর, আশির দশক বলে নয়, এখনও স্কুল কলেজের বিচিত্রানুষ্ঠানে এই গানটি কারো না কারো কণ্ঠে গীত হয়।
আবিদা সুলতানা জানান, এই গানটি রেকর্ডিং হয়েছিল তেজগাঁও-এর ইন্টারন্যাশনাল স্টুডিওতে। এই ছবিটি মুক্তি পাওয়ার পর সিনেমা হলে গিয়ে তিনি ছবিটি দেখেছিলেন। তবে এই গানটি নিয়ে চিত্র নায়িকা ববিতার সাথে তার কখনই আলাপ হয়নি। আবিদা সুলতানাও স্বীকার করেন গানের কথা, সুর আর দুর্দান্ত চিত্রায়নের কারণে গানটি মানুষের হ্নদয়ে গেঁথে আছে। আর তাই স্টেজে উঠলে এই গান গাওয়ার অনুরোধ তাকে রক্ষা করতে হয়।
আবিদা সুলতানার কণ্ঠে ভীষণ ভীষণ জনপ্রিয় ভূপেন হাজারিকার সুরে আলমগীর কবির পরিচালিত ‘সীমানা পেরিয়ে’ ছবিতে ‘বিমূর্ত এই রাত্রি আমার মৌণতার সুতোয় বোনা একটি রঙিণ চাঁদর’, সুবল দাসের সুওে দিলীপ সোম পরিচালিত ‘তালুকদার’ ছবিতে ‘এ কী বাঁধনে বলো জড়ালে আমায়/ ভাবি যতোবার মরি লজ্জায়’, ‘আলো তুমি আলেয়া’ ছবিতে ‘আমি সাত সাগর পাড়ি দিয়ে/ কেন সৈকতে পড়ে আছি’, চাষী নজরুল ইসলাম পরিচালিত গোলাম হোসেন লাডোর সুরে ‘বাজিমাত’ ছবিতে ‘যদি একটু আগে পেতাম তোমায়’, মনসুর আহমেদ-এর সুরে ইবনে মিজান পরিচালিত ‘তাজ ও তালোয়ার’ ছবিতে ‘নয়নে রেখে নয়ন/ করেছি তোমায় আপন’, শেখ সাদী খানের সুরে আব্দুল্লাহ আল মামুন পরিচালিত ‘এখনই সময়’ ছবিতে ‘একটা দোলনা যদি পেতাম’, আখতারুজ্জামান-রফিকুজ্জামান পরিচালিত ‘ফেরারী বসন্ত’ ছবিতে ‘হ্নদয়ের অচেনা দুটি নদী’, আলাউদ্দিন আলীর সুরে অশোক ঘোষ পরিচালিত ‘নিশানা’ ছবিতে ‘এমনি করেই একদিন প্রেম হয়ে যায়’, সত্য সাহার সুরে সিবি জামান পরিচালিত ‘উজানভাটি’ ছবিতে ‘দিনের কথা দিনে ভালো রাতের কথা রাতে’, মিতা পরিচালিত ‘মান অভিমান’ ছবিতে ‘আমি জোতিষীর কাছে যাব’, মতিন রহমান পরিচালিত ইমতিয়াজ আহমেদ বুলবুলের সুরে ‘রাধাকৃষ্ণ’ ছবিতে ‘এ মধু জোছনায়’, আজিজুর রহমান পরিচালিত সত্য সাহার সুরে ‘ছুটির ঘণ্টা’ ছবিতে ‘আমাদের দেশটা স্বপ্নপুরী’, সিবি জামান পরিচালিত সত্য সাহার সুরে ‘পুরস্কার’ ছবিতে ‘হারজিত চিরদিন থাকবেই’,-এরকম আরো অনেক গান রয়েছে।
এর বাইরে সহশিল্পীদের সাথে চলচ্চিত্রে গাওয়া তার কিছু গান ভীষণ জনপ্রিয়। প্রখ্যাত সুরকার সত্য সাহার সুরে সিবি জামান পরিচালিত গ্রামবাংলার রোমান্টিক ছবি ‘উজানভাটি’ ছবিতে জীবন সঙ্গী রফিকুল আলমের সাথে জুটিবদ্ধ হয়ে তার গাওয়া ‘এক নদীরই উজানভাটি আমরা দুটি ধারা’, গাজী মাজহারুল আনোয়ার পরিচালিত ‘নান্টুঘটক’ ছবিতে এন্ড্রু কিশোরের সাথে গাওয়া ‘চলে আমার সাইকেল হাওয়ার বেগে উইড়া উইড়া’, সত্য সাহার সুরে মিতা পরিচালিত ‘তৃষ্ণা’ ছবিতে ‘নানা পড়বো না রে’, অশোক ঘোষ পরিচালিত আলাউদ্দিন আলীর সুরে ‘হিম্মওওয়ালি’ ছবিতে সৈয়দ আব্দুল হাদীর সাথে গাওয়া ‘এই ভালোবাসা বেঁচে থাকবে’, বুলবুল আহমেদ পরিচালিত এবং আলাউদ্দিন আলীর সুরে ‘রাজলক্ষী শ্রীকান্ত’ ছবিতে সুবীর নন্দীর সাথে গাওয়া ‘বিধি কমলও করিয়া পাঠালো আমায়/ লাগলামনাতো কারো পূজাতে’, সুবীর নন্দীর সাথে আরও গাওয়া মিতা পরিচালিত ‘সুদআসল’ ছবিতে আলাউদ্দিন আলীর সুরে ‘মাধবী কুঞ্জে/ পুঞ্জে পুঞ্জে’,। আরকম আরও গান রয়েছে যে গানগুলো আবিদা সুলতানার কণ্ঠে অমরত্ম পেয়েছে।
আবিদা সুলতানা এদেশের সব কিংবদন্তী সুরকারের সুরেই গান গাইবার সৌভাগ্য অর্জন করেছেন। দু একজন ছাড়া যাদের কেউই আর বেঁচে নেই। আবিদা সুলতানার বেশ কিছু জনপ্রিয় গানের সুরকার হলেন শেখ সাদী। তাকেই প্রশ্ন করেছিলাম আবিদা সুলতানা সম্পর্কে। আশির দশকে সুরকার শেখ সাদী প্রথম আবদুল্লাহ আল মামুন পরিচালিত ‘এখনই সময়’ ছবির মধ্য দিয়ে সঙ্গীত পরিচালক হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন। এই ছবিতে আবিদা সুলতানার গাওয়া ‘একটা দোলনা যদি পেতাম’ গানটি যে সুরের মিষ্টতা চারিদিকে ছড়িয়েছিল তা এখনও নিঃশেষ হয়নি। এই গান নিয়ে আবিদা সুলতানা সম্পর্কে জিজ্ঞেস করতেই তিনি বললেন, ‘ও তখন ভীষণ প্রমিজিং। গলায় অসম্ভব আবেগ আর মেলোডি। আমি ঠিক করলাম ওকে দিয়ে গানটি গাওয়াবো। ইপসা রেকডিং স্টুডিতে ওকে দিয়ে গাওয়ালাম। এখনও গানটির জনপ্রিয়তা সেই আগের মতোই রয়েছে। সন্দেহ নেই এই গানটি এক অপূর্ব সৃষ্টি।’ গ্রাম বাংলার মানুষের মন জয় করা ‘উজানভাটি’ ছবির বেশ কয়েকটি গানে কণ্ঠ দেন তিনি। এই ছবির নায়ক-নায়িকা হারিয়ে গেলেও গানগুলো তাদের বাঁচিয়ে রেখেছে। এই ছবিতে আবিদা সুলতানা এবং রফিকুল আলমের গাওয়া ‘এক নদীরই উজানভাটি’ এবং ‘দিনের কথা দিনে ভালো’ গান দুটি সুপার ডুপার হিট হয়। এই দুটি গান এখনও ভীষণ প্রাণবন্ত। এই ছবির পরিচালক সিবি জামানের কাছ থেকে জানা যায়, ছবির সুরকার সত্য সাহা, গীতিকার গাজী মাজহারুল এবং তিনি মিলেই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন আবিদা সুলতানাকে দিয়ে গান করাবেন। এর আগে সিবি জামান প্রথম ‘ঝড়ের পাখি’ ছবিতে আবিদা সুলতানাকে দিয়ে গান করান। ফলে আত্মবিশ্বাসের কোনো ঘাটতি ছিল না। পরিচালক সিবি জামান এই ছবির গান সম্পর্কে বলেন, ‘আবিদা সুলতানা তার গাওয়া গানগুলোতে যে সবার মন জয় করেছিলেন তা এখনও অটুট আছে। এখনও গানগুলো রাস্তাঘাটে শুনতে পাই। এসব গান যখন কানে আসে তখন নিজেকে ধন্য মনে হয়।’
চলচ্চিত্রে নিজের গাওয়া জনপ্রিয় গানগুলো হ্নদয় দিয়ে আগলে রেখেছেন আবিদা সুলতানা। টেলিভিশন লাইভ আর ফ্যাংশনে বা স্টেজ প্রোগ্রামে এ গানগুলোর সুর তিনি ছড়িয়ে দিতে বড্ড ভালোবাসেন। হারমোনিয়াম রিডে হাত রেখে বুঝতে পারেন ‘বিমূর্ত এই রাত্রি আমার’ বা ‘একী বাঁধনে বলো মরি লজ্জায়’ অথবা ‘একটি দোলনা যদি পেতাম’ এসব গানের জনপ্রিয়তা, আবেদন একবিন্দু শেষ হয়নি। তাইতো আমাদের সঙ্গীতাঙ্গনের এই নক্ষত্র গানগুলো মনপ্রাণ উজাড় করে একেবারে নিঁখুতভাবে উপহার দিতে কার্পণ্য করেন না।
কদিন আগে ছিল আবিদা সুলতানার জন্মদিন। এদিনটি উপজীব্য করেই তার বাসায় বসে কথা হচ্ছিলো সিনেমার গান নিয়ে। তিনি বলছিলেন সেই পুরনো কথা। কৃতজ্ঞচিত্তে স্মরণে এনে বললেন, ‘সুরকার খান আতা, সুবল দাস, মনসুর আহমেদ, সত্য সাহা, শেখ সাদী খান-আমার গাওয়া সিনেমার জনপ্রিয় গানে তাদের অবদান অনেক অনেক বেশি। তারা আমার কাছে চির স্মরণীয়, চির শ্রদ্ধেয়।’ তবে সিনেমার গান নিয়ে আবিদা সুলতানার খানিকটা আক্ষেপও আছে। আবিদা সুলতানা মনে করেন সিনেমার সেই স্বর্ণালী যুগে তিনি কিছুটা ইন্টারন্যাল পলিটিক্সের শিকারও হন। আর সে কারণে আরও যতোটা প্রাপ্য ছিল, আরও যতোটা চলচ্চিত্রের গানের জগতে অবদান রাখার কথা ছিল-তা খানিকটা বিঘ্নিত হয়। তবে এই আক্ষেপ বোধ হয় নিশ্চিত মিলিয়ে যায়। যখন তিনি হ্নদয় দিয়ে উচ্চারণ করে ‘দূরের আর্তনাদের নদীর/ ক্রন্দন কোনো ঘাটের/ভ্রক্ষেপ নেই পেয়েছি আমি আলিঙ্গনের সাগর/ সেই সাগরের শ্রোতেই আছে নিঃশ্বাসেরই ছোঁয়া/ আছে ভালোবাসার আদর।’
(এ বিভাগে প্রকাশিত মতামত লেখকের নিজস্ব। চ্যানেল আই অনলাইন এবং চ্যানেল আই-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে প্রকাশিত মতামত সামঞ্জস্যপূর্ণ নাও হতে পারে।)