সাড়া ফেলেছে শামশুল হক ফাউন্ডেশনের কেনা দামে সবজি বিক্রি

সাড়া ফেলেছে শামশুল হক ফাউন্ডেশনের কেনা দামে সবজি বিক্রি

চট্টগ্রাম নগরীর বহদ্দারবাড়ি পুকুরপাড়ের পাশের ফুটপাতে সামিয়ানা টাঙিয়ে গড়া হয়েছে দোকানের মতো স্থাপনা। সেখানে টেবিলের ওপর তরে তরে সাজানো সবজি। আলাদা আলাদা বাক্স-ভর্তি লাউ, কাঁচা পেঁপে, শসা, মিষ্টিকুমড়া চিচিঙ্গা, বেগুন বরবটি, মরিচ, পেঁয়াজও। আছে আপেল, মাল্টাও। দুই সারিতে দাঁড়িয়ে মানুষেরা সেই সবজি-ফল কিনে নিচ্ছিলেন একেবারে ন্যায্য দামে। বাজারের তুলনায় অনেক কম দামে পণ্য পেয়ে তাদের চোখে-মুখে ছিল উচ্ছ্বাস।

সাধারণ মানুষদের জন্য কেনা দামে সবজি বিক্রির এই উদ্যোগ নিয়েছে মানবিক সংগঠন ‘আলহাজ শামশুল হক ফাউন্ডেশন’। সরাসরি কৃষক থেকে সবজি কিনে একই দামে সংগঠনটি পৌঁছে দিচ্ছে ভোক্তাদের হাতে। গত ২২ অক্টোবর থেকে শুরু হয়েছে এই উদ্যোগ। চলবে দ্রব্যে মূল্যের দাম অসহনীয় থাকা পর্যন্ত।

বিজ্ঞাপন

বুধবার (৩০ অক্টোবর) বিকেলে বহদ্দারবাড়ি পুকুর পাড়ে গিয়ে দেখা যায়, ন্যায্যমূল্যে সবজি কিনতে নারী-পুরুষের ভিড়। দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করেও তাদের কারও যেন ক্লান্তি নেই। নিজেদের চাহিদা অনুযায়ী সবজি কিনে নিচ্ছেন সবাই। প্রায় ২০জন স্বেচ্ছাসেবক সবজি নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছিলেন। সেখানে লাউ ১৭ টাকায়, পেঁপে ৩০ টাকা, শসা ৩৫, চিচিঙ্গা ৩৫, মিষ্টিকুমড়া ৪৫, বেগুন ৬৫, বরবটি ৫০টাকায় বিক্রি হচ্ছিল।

সাড়া ফেলেছে শামশুল হক ফাউন্ডেশনের কেনা দামে সবজি বিক্রি
কেনা দামে সবজি বিক্রিতে ক্রেতাদের ভিড়/বার্তা২৪.কম



সেখানে সবজি কিনতে আসা এক নারী বার্তা২৪.কম-কে বলেন, ‘প্রায় সব ধরনের সবজি কিনলাম। এখানে যে দামে সবজি পেয়েছি বাজারে গেলে হয়তো এর দ্বিগুণ দাম লাগতো। এমন উদ্যোগ যারা নিয়েছেন তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা।’

একই কথা বলেন আরেক যুবক। তিনি বলেন, ‘সড়ক দিয়ে বাজারে যাচ্ছিলাম। এমন সময় ন্যায্যমূল্যে সবজি বিক্রি হচ্ছে দেখে কিছুক্ষণ লাইনে দাঁড়িয়ে কিনে নিলাম।’

সরাসরি কৃষক থেকে ভোক্তাপর্যায়ে ন্যায্যমূল্যে শাক-সবজি পৌঁছে দিতে দেওয়ার এমন উদ্যোগের পেছনে আছেন ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান প্রকৌশলী মুহাম্মদ নাছির উদ্দিন। তিনি বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘বাজারে শাক-সবজির দামে নাভিশ্বাস উঠেছে ভোক্তাদের। বাজারে এখন যেন কোনো কিছু নিয়ন্ত্রণে নেই। গরিবের ক্রয় সীমার বাইরে চলে গেছে সবজির বাজার। সাধারণ মানুষের কথা বিবেচনা করে সংগঠনের পক্ষ থেকে ন্যায্যমূল্যে সবজি বিক্রির কার্যক্রম শুরু করেছি। সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধেই আমাদের এই যাত্রা। আশা করি আমরা সফল আমরা হব।’ এক মাস ধরে এই কার্যক্রম চালিয়ে নেওয়ার চিন্তা আছে আলহাজ শামশুল হক ফাউন্ডেশনের।

আর যাদের টাকা দিয়ে একেবারে কেনার সামর্থ্য নেই তারা সবজি সংগ্রহ করতে পারছেন ‘ডোনেট বক্স’ থেকে। অনেক সামর্থ্যবান মানুষ সবজি কিনে এই বক্সে রাখছেন। সেখান থেকে অসহায় মানুষেরা সবজি কিনে নিয়ে যাচ্ছিলেন।

২০০৬ সাল থেকে আলহাজ শামসুল হক ফাউন্ডেশন তাদের কার্যক্রম শুরু করে। এরপর থেকে শিক্ষা, স্বাস্থ্য, খাদ্যসহ বিভিন্ন ধরনের মানবিক সেবামূলক কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে ফাউন্ডেশনটি।

Scroll to Top