মহারাষ্ট্রের পুণের এক দম্পতির বিবাহবিচ্ছেদ সংক্রান্ত মামলায় গুরুত্বপূর্ণ রায় দিল বম্বে হাই কোর্ট। আদালতের পর্যবেক্ষণে উঠে এসেছে, স্ত্রীর আচরণ স্বামীর প্রতি ছিল অত্যন্ত নিষ্ঠুর। এমনকি বন্ধুদের সামনে স্বামীকে অপমান করাসহ তাঁর পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধেও অযাচিত আচরণের প্রমাণ পাওয়া গেছে। এসবের ভিত্তিতে আদালত স্বামীর পক্ষে রায় দিয়ে বিবাহবিচ্ছেদ মঞ্জুর করেছে এবং স্ত্রীর ভরণপোষণের আবেদন খারিজ করে দিয়েছে।
মামলার পটভূমি
২০১৩ সালের ডিসেম্বরে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন পুণের ওই দম্পতি। তবে এক বছরের মাথায় সম্পর্কের টানাপোড়েন শুরু হয় এবং তাঁরা আলাদা থাকতে শুরু করেন। ২০১৫ সালে স্ত্রী পুলিশের কাছে অভিযোগ করেন যে, তাঁকে তাঁর শ্বশুরবাড়িতে হেনস্তা করা হয়েছে এবং গয়নাগাটি আটকে রেখে বাড়ি ছাড়তে বাধ্য করা হয়েছে।
পরে তিনি পারিবারিক আদালতে গিয়ে জানান, তিনি সংসার চালিয়ে যেতে চান, কিন্তু স্বামী পাল্টা বিবাহবিচ্ছেদের আবেদন জানান। স্বামীর দাবি, স্ত্রী তাঁর সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেছেন, পরিবারকে অপমান করেছেন এবং মিথ্যা অভিযোগ এনেছেন।
আদালতের পর্যবেক্ষণ
বম্বে হাই কোর্টের বিচারপতি রেবতী মোহিতে দেরে ও বিচারপতি নীলা গোখেলের ডিভিশন বেঞ্চ এই মামলার শুনানি করেন। আদালত জানায়, স্ত্রী যেসব অভিযোগ তুলেছেন, তার পক্ষে পর্যাপ্ত প্রমাণ মেলেনি। বরং, স্বামীর বক্তব্য অনুযায়ী তাঁকে মানসিকভাবে কষ্ট দেওয়া, বন্ধুদের সামনে অপমান করা, মিথ্যা অভিযোগ করা এবং পরিবারের সদস্যদের প্রতি অসৌজন্যমূলক আচরণ প্রমাণিত হয়েছে।
আদালত রায়ে উল্লেখ করে, এই ধরনের আচরণ ‘নিষ্ঠুরতা’র পর্যায়ে পড়ে এবং তা বৈবাহিক সম্পর্কের ওপর মারাত্মক প্রভাব ফেলে। ফলে পারিবারিক আদালতের বিচ্ছেদের রায় বহাল রাখা হয় এবং স্ত্রীর মাসিক ১০ হাজার টাকার ভরণপোষণের আবেদন খারিজ করে দেওয়া হয়।
এবার ছবি থেকেই ভিডিও বানাবে গুগল জেমিনি – যুক্ত হলো ‘Veo 3’ ফিচার
এই মামলার মাধ্যমে আদালত স্পষ্ট বার্তা দিয়েছে, বৈবাহিক সম্পর্কে পারস্পরিক শ্রদ্ধা ও সমঝোতা অপরিহার্য। কোনো পক্ষ যদি বারবার অপর পক্ষকে মানসিকভাবে আঘাত করে, তবে তা বিবাহ বিচ্ছেদের ভিত্তি হতে পারে। এ মামলার রায় ভারতের পারিবারিক আইন এবং বৈবাহিক সম্পর্ক নিয়ে একটি গুরুত্বপূর্ণ দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে।