সংবিধান বাতিল করে অস্বাভাবিক পরিস্থিতি তৈরির বিরুদ্ধে বিএনপি: হাসান মামুন | চ্যানেল আই অনলাইন

সংবিধান বাতিল করে অস্বাভাবিক পরিস্থিতি তৈরির বিরুদ্ধে বিএনপি: হাসান মামুন | চ্যানেল আই অনলাইন

এই খবরটি পডকাস্টে শুনুনঃ

বিএনপি কখনোই জুলাই সনদের ঘোরতর বিরোধী ছিল না বলে মন্তব্য করেছেন দলটির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য হাসান মামুন।

তিনি বলেন: জুলাই সনদকে সামনে রেখে বাংলাদেশের সংবিধান বাতিল বা স্থগিত করে একটি অস্বাভাবিক পরিস্থিতি তৈরি করা এবং সেই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে অশুভ শক্তিকে বাংলাদেশের ক্ষমতায় অবৈধ হস্তক্ষেপ করার বিরুদ্ধে ছিল বিএনপি। সেই কারণে বিএনপির জুলাই সনদের বিষয়ে টেকনিক্যাল অবস্থান ছিল।

চ্যানেল আই অনলাইনকে দেওয়া সাক্ষাতকারে বিএনপি নেতা হাসান মামুন এসব কথা বলেন।

বিএনপির এই কেন্দ্রীয় নেতা বলেন: বিএনপি এখন সরকারের অবস্থান এবং সংবিধান বাতিল না করার সুস্পষ্ট অবস্থান পাওয়ার পর জুলাই সনদে স্বাক্ষর করার বিষয়ে অবস্থান প্রদর্শন করছে। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের রাজনৈতিক প্ল্যাটফর্ম এনসিপি এবং জামায়াতে ইসলামীসহ বেশ কয়েকটি রাজনৈতিক দল অপ্রত্যাশিত ও অপ্রাসঙ্গিক বিষয় সামনে এনে জুলাই সনদ ও জাতীয় ঐক্যকে অনিশ্চয়তার মধ্যে ফেলছে।

হাসান মামুনের দাবি: এসব কর্মকাণ্ড পতিত স্বৈরাচার ও পতিত রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগকে আগামী দিনে সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন করার এবং জাতীয় নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার একটি প্ল্যাটফর্ম তৈরি করে দিচ্ছে।

তিনি বলেন: এনসিপি বিভিন্ন বিষয় নিয়ে দিন দিন বিচলিত হচ্ছে। গণঅভ্যুত্থানের নেতাদের এই ভূমিকা নিয়ে জাতি খুবই হতাশ। এর প্রধান কারণ হলো- জাতির সাথে তাদের কমিটমেন্ট। আন্দোলনের সময় তাদের মূল কমিটমেন্ট ছিল শিক্ষার্থীদের বৈষম্য দূর করা। সেটি তারা কতটুকু করতে পেরেছেন? এখন তাদের বেশি ফোকাস হচ্ছে জাতীয় রাজনীতি ও ক্ষমতায় ভাগ বসানোর পাশাপাশি বিভিন্ন সরকারি কাজে তাদেরকে যুক্ত করা। এমনকি তাদের অনেকে দুর্নীতির সাথেও জড়িয়ে পড়েছেন, যেটি জাতিকে এবং তাদেরকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে। সুতরাং এনসিপির যে রাজনৈতিক স্বপ্ন- সেসবের জন্য জনগণের সমর্থন ও ভালোবাসা অর্জনের চেয়ে শক্তি ও ক্ষমতা প্রয়োগ করে কিছু একটা আদায় করতে চাইছে। এটি একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য এবং নির্বাচনে তাদের অংশগ্রহণ ও বিজয়ের পথে বিরাট অন্তরায়।

হাসান মামুন বলেন: এনসিপির এই রাজনৈতিক ও ক্ষমতার রাজনীতিতে অংশগ্রহণের অনিশ্চয়তার কারণে সরকার মাঝে মাঝে বিচলিত হচ্ছে। একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য জাতির কাছে তাদের যে অঙ্গীকার সেই বিষয়ে দ্বিধাবিভক্ত হয়ে যাচ্ছে এবং সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগছে। বিশ্বব্যাপী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের যে মর্যাদা, আশা করি তিনি সেই মর্যাদার প্রতি সম্মান প্রদর্শন করবেন। তার মর্যাদার প্রতি এনসিপির নেতৃবৃন্দও সম্মান প্রদর্শন করবেন। সর্বোপরি চব্বিশের গণঅভ্যুত্থানের প্রতি মানুষের যে সমর্থন ছিল ও এখনও আছে- তার প্রতি সম্মান প্রদর্শন করবেন। একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের বিষয়ে সাধারণ মানুষের যে আগ্রহ, তার প্রতি সম্মান প্রদর্শন করবেন।

এনসিপি এবং জামায়াতে ইসলামীকে অপ্রাসঙ্গিক বিষয় সামনে না আনার অনুরোধ জানিয়ে বিএনপির এই নেতা বলেন: জুলাই সনদকে সামনে রেখে অপ্রত্যাশিত বিষয় সামনে এনে আপনারা জাতীয় ঐক্যে বিভেদ সৃষ্টি করবেন না। গণতন্ত্র এবং আগামী নির্বাচনকে অনিশ্চিত করে দিয়ে অশুভ শক্তি ও আওয়ামী লীগকে ফিরিয়ে আনার প্রেক্ষাপট তৈরি করবেন না।

তিনি বলেন: অশুভ শক্তি এবং আওয়ামী লীগকে ফিরিয়ে আনার প্রেক্ষাপট তৈরি করলে সেটা সকলের জন্যই খারাপ হবে। বিশেষ করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও এনসিপির জন্য মারাত্মক ক্ষতির কারণ হতে পারে। সেই ব্যাপারে আমি তাদেরকে এবং পুরো জাতিকে সজাগ থাকার অনুরোধ জানাচ্ছি।

Scroll to Top