সমকামীতা, শিক্ষার্থীদের হেনস্তা ও বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের সহকারী অধ্যাপক হাফিজুল ইসলামকে চাকরি থেকে অপসারণ করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
সোমবার (৩০ জুন) বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. মঞ্জুরুল হক স্বাক্ষরিত অফিস আদেশ সূত্রে জানা যায়, শিক্ষক হাফিজুল ইসলামের বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন ধরে নানা অভিযোগ উঠলে সেগুলো তদন্তের জন্য একটি কমিটি গঠন করা হয়। তদন্তে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রযোজ্য বিধিমালা অনুযায়ী তাকে ২০২৫ সালের ৩০ জুন থেকে চাকরি থেকে অপসারণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
বিশ্ববিদ্যালয় ও বিভাগীয় সূত্রে জানা যায়, সহকারী অধ্যাপক হাফিজুল ইসলামের বিরুদ্ধে তার বিভাগের একাধিক শিক্ষার্থীর সঙ্গে আপত্তিকর ও অসম্মানজনক আচরণের অভিযোগ রয়েছে। এর মধ্যে সমকামী সম্পর্ক স্থাপনের চেষ্টা, মানসিক নির্যাতন, ছাদ থেকে ফেলে দেওয়ার হুমকি, নারী শিক্ষার্থীদের গালিগালাজ, পছন্দের শিক্ষার্থীকে বেশি নম্বর ও বাকিদের কম নম্বর দেওয়া, এমনকি সিলিং ফ্যানে ঝুলিয়ে পেটানোর মতো ভয়ংকর হুমকি দেওয়ার অভিযোগও রয়েছে। এইসব ঘটনায় ক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা দুই-তিন দফায় আন্দোলনে নেমে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে তার অপসারণের জোর দাবি জানান।
এর আগে, তদন্তে একাধিক অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় হাফিজুল ইসলামের বার্ষিক ইনক্রিমেন্ট বাতিল এবং তাকে এক বছরের বাধ্যতামূলক ছুটিতে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। ২০২৩ সালের ২২ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত ২৬৬তম সিন্ডিকেট সভায় এ সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। তবে শিক্ষার্থীরা তাতে সন্তুষ্ট না হয়ে গত ২৮ জানুয়ারি উপাচার্যের বাসভবনের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করে অভিযুক্ত শিক্ষকের স্থায়ী বহিষ্কারের দাবি জানান।
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন জানিয়েছে, তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনের ভিত্তিতেই কঠোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, যাতে শিক্ষার্থীরা নিরাপদ ও শৃঙ্খল পরিবেশে পড়াশোনা চালিয়ে যেতে পারে।