রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন: জাতিসংঘকে কার্যকর ভূমিকা পালনের আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর | বাংলাদেশ

রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন: জাতিসংঘকে কার্যকর ভূমিকা পালনের আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর | বাংলাদেশ

<![CDATA[

রোহিঙ্গাদের নিরাপদে ও মর্যাদার সঙ্গে মিয়ানমারে প্রত্যাবাসনের জন্য প্রয়োজনীয় পরিবেশ তৈরিতে দ্বিপাক্ষিক, ত্রিপাক্ষিক এবং জাতিসংঘসহ অন্যান্য অংশীজনদের নিয়ে আলোচনা সত্ত্বেও, একজন রোহিঙ্গাকেও তাদের মাতৃভূমিতে ফেরত পাঠানো যায়নি। মিয়ানমারে চলমান রাজনৈতিক অস্থিরতা ও সশস্ত্র সংঘাত বাস্তচ্যুত রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনকে আরও দুরূহ করে তুলেছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ বিষয়ে জাতিসংঘকে কার্যকর ভূমিকা রাখারও আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।

শুক্রবার (২৩ সেপ্টেম্বর) নিউইয়র্কের স্থানীয় সময় বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭৭তম অধিবেশনে ভাষণ দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। অন্যান্যবারের মতো এবারও জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে বাংলায় ভাষণ দেন তিনি। এসময় জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমি এখন দৃষ্টি আকর্ষণ করব মিয়ানমার থেকে জোরপূর্বক বাস্তচ্যুত রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর দিকে। ২০১৭ সালে স্বদেশ থেকে বাস্তুচ্যুত হয়ে তাদের গণহারে বাংলাদেশে প্রবেশের পাঁচ বছর পূর্ণ হয়েছে গত মাসে।’

রোহিঙ্গাদের দীর্ঘায়িত উপস্থিতি বাংলাদেশের অর্থনীতি, পরিবেশ, নিরাপত্তা এবং সামাজিক ও রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার ওপর মারাত্মক প্রভাব ফেলেছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘তাদের (রোহিঙ্গা) প্রত্যাবাসনের অনিশ্চয়তা সর্বস্তরে ব্যাপক হতাশার সৃষ্টি করেছে। মানবপাচার ও মাদক চোরাচালানসহ আন্তঃসীমান্ত অপরাধ বৃদ্ধি পাচ্ছে। এমনকি এ পরিস্থিতি উগ্রবাদকেও ইন্ধন দিতে পারে।’  

এই সংকট প্রলম্বিত হতে থাকলে তা এ উপমহাদেশসহ বৈশ্বিক নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতার ওপর মারাত্মক প্রভাব ফেলতে পারে বলেও সতর্ক করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।   

অভিবাসন যাত্রায় অভিবাসীদের অনিশ্চিত পরিস্থিতির বিষয়টিও তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, তারা (অভিবাসী) তাদের অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। এ পরিস্থিতি থেকে উত্তরণ ঘটাতে আমাদের অবশ্যই বিশ্বব্যাপী অংশীদারিত্ব এবং সংহতি বাড়াতে হবে। এ বিষয়ে ‘গ্লোবাল কমপ্যাক্ট অন মাইগ্রেশন’ এবং এর ‘অগ্রগতি ঘোষণা’, আমাদের একটি চমৎকার রোডম্যাপ দিয়েছে।  

আরও পড়ুন: বাংলাদেশ এখন দ্রুত বর্ধনশীল অর্থনীতির দেশ: প্রধানমন্ত্রী

শেখ হাসিনা বলেন, বর্তমানে জটিল বৈশ্বিক সংকট অনেক উন্নয়নশীল দেশের বিগত কয়েক দশকের উন্নয়ন অগ্রযাত্রাকে স্থবির করে দিচ্ছে। এই মুহূর্তে ২০৩০-এজেন্ডা বাস্তবায়ন করা তাদের অনেকের কাছেই একটি অধরা স্বপ্ন বলে মনে হচ্ছে। স্বাস্থ্য, শিক্ষা, কর্মসংস্থান এবং কৃষিসহ মারাত্মভাবে প্রভাবিত ক্ষেত্রগুলোতে সুনির্দিষ্ট সহায়তা প্রয়োজন। এখন বিজ্ঞান, প্রযুক্তি এবং উদ্ভাবনের সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে হবে।  

‘আমরা লক্ষ করছি, কীভাবে নিত্য-নতুন প্রযুক্তি বিশ্বকে দ্রুত পরিবর্তন করে ফেলছে। এই প্রযুক্তিগুলো ব্যবহারে সকলের ন্যায্য এবং সমান সুযোগ পাওয়া অপরিহার্য। ক্রমবর্ধমান প্রযুক্তিগত বিভাজন অবশ্যই দূর করতে হবে’, বলেন প্রধানমন্ত্রী।  

তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশসহ ১৬টি দেশ এখন স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে উন্নীত হওয়ার পথে। তবে ক্রমবর্ধমান বৈশ্বিক সংকট আমাদের টেকসই উত্তরণের পথে গুরুতর প্রতিকূলতা সৃষ্টি করেছে। আমাদের উন্নয়নের অংশীজনদের কাছে বর্ধিত এবং কার্যকর সহযোগিতার আহ্বান জানাই। এ বিষয়ে দোহা কর্মসূচিকে আমরা স্বাগত জানাই।

]]>

Scroll to Top