স্পোর্টস করেসপন্ডেন্ট
বাংলাদেশ-জিম্বাবুয়ে চতুর্থ টি-টোয়েন্টিটা হলো রোমাঞ্চকর। আগে ব্যাটিং করতে নামা বাংলাদেশ বিনা উইকেটে ১০১ রান তোলার পর ৪২ রানের ব্যবধানে হারাল ১০ উইকেট। পরে বাংলাদেশের বোলিং ইনিংসও রোমাঞ্চে ভরপুর। শেষ ওভারে জিততে জিম্বাবুয়ের দরকার ছিল ১৩ রান। সাকিব আল হাসানের হাতে বল তুলে দেন বাংলাদেশ অধিনায়ক। ওভারের প্রথম তিন বলে ৭ রান খরচ করে ফেলেন সাকিব। অর্থাৎ শেষ ৩ বলে লাগত ৬ রান, জিম্বাবুয়ের জয় তখন খুবই সম্ভব। সেখান থেকে ম্যাচ জিতেছে বাংলাদেশ।
দারুণ এক ডেলিভারিতে জিম্বাবুয়ের দশম ব্যাটারকে বোল্ড করে বাংলাদেশকে রোমাঞ্চকর জয় এনে দিয়েছেন সাকিব আল হাসান। শেষ পর্যন্ত পাঁচ ম্যাচ টি-টোয়েন্টি সিরিজের চতুর্থটিতে ৫ রানের জয় পেয়েছে বাংলাদেশ। সিরিজের প্রথম তিন ম্যাচও জিতেছিল বাংলাদেশ।
শুক্রবার (১০ মে) মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে বাংলাদেশের বোলিংয়ের শুরুটা ভালো হয়েছে। টার্গেট ছিল ১৪৩। একটা শক্ত জুটি বা একটা-দুটো ভালো ইনিংস হলেই ম্যাচে নিয়ন্ত্রণ নিতে পারত জিম্বাবুয়ে। কিন্তু অপরিপক্ক ব্যাটিংয়ে সেটা করতে পারেননি সফরকারীরা। মোস্তাফিজুর রহমান, তাসকিন আহমেদরা বোলিংও করেছেন দুর্দান্ত।
ইনিংসের চতুর্থ বলে ব্রায়ান বেনেটকে ফেরান তাসকিন আহমেদ। এরপর তিনে নেমে অধিনায়ক সিকান্দার রাজা বেশ ভালোই জাবাব দিচ্ছিলেন। তাসকিনের বলে সেই সিকান্দার রাজাও ১০ বলে ১৭ রান করে ফিরলে বিপদে পরে জিম্বাবুয়ে। এরপর নিয়মিত বিরতিতেই উইকেট তুলে নিতে পেরেছে বাংলাদেশ।
তবে ছোট ছোট ইনিংস খেলে সফরকারীরাও ম্যাচে থাকার চেষ্টা করে গেছেন। মাঝের ওভারগুলোতে ৩৫ রানের একটা জুটি গড়ে জিম্বাবুয়ানদের লড়াইয়ে রাখেন রায়ান বার্ল ও জনাথন ক্যাম্পাবল। শেষ দিকে ওয়েলিংটন মাসাকাদজা ৮ বলে ১৯ রানের একটা ইনিংস খেলে ম্যাচ জমিয়ে তুলেছিলেন।
কিন্তু শেষের হিসেবটা মিলাতে পারেননি সফরকারীরা। শেষ পর্যন্ত ১৯.৪ ওভারে ১৩৮ রানে গুটিয়ে গেছে জিম্বাবুয়ে। আইপিএলে দুর্দান্ত বোলিং করে ফেরা মোস্তাফিজুর রহমান ৪ ওভারে মাত্র ১৯ রান খরচায় তিন উইকেট নিয়ে ম্যাচসেরা হয়েছেন। সাকিব ৪ উইকেট পেলেও ৩.৪ ওভারে রান দিয়েছেন ৩৫। তাসকিন আহমেদ ৪ ওভারে ২০ রান খরচায় দুই উইকেট পেয়েছেন।
এর আগে দুই ওপেনারের ব্যাটে ১৪৩ রান তুলেছিল বাংলাদেশ। বাংলাদেশের শুরুটা হয়েছিল দুর্দান্ত। টস হেরে আগে ব্যাটিং করতে নেমে তরুণ তানজিদ হাসান তামিম উড়ন্ত সূচনা এনে দিয়েছিলেন। প্রথম পাঁচ ওভারে ৪২ রান তুলেছিল বাংলাদেশ, তার ৩৯ রানই ছিল তানজিদ তামিমের।
পরে সৌম্য সরকারও ছন্দময় ব্যাটিং করেছেন। দুজনের ১১ ওভারের ওপেনিং জুটিতে উঠেছে ১০১ রান। লুক জাঙ্গয়েকে হাঁকাতে গিয়ে তানজিদ হাসান ক্যাচ দিলে এই জুটি ভাঙে। ৩৩ বলে ফিফটি করা তানজিদ ফিরেছেন ৩৭ বলে ৭টি চার ১টি ছয়ে ৫২ রান করে।
সেই ওভারে জাঙ্গয়ের ইংর্কারে এলবিডব্লিউ হয়েছেন সৌম্য সরকারও। ৩ চার ২ ছয়ে ৩৪ বলে ৪১ রান করে ফিরেছেন অনেকদিন পর জাতীয় দলের হয়ে খেলতে নামা সৌম্য। তারপরই যেন মরক লাগল বাংলাদেশের ব্যাটিং লাইনআপে!
জিম্বাবুয়ের মাঝারি মানের বোলারদের বলেই রীতিমতো খাবি খেলেন বাংলাদেশের ব্যাটাররা। অনেকদিন রানের সঙ্গে সংগ্রাম করতে থাকা অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত আজ চার নম্বরে নেমে ৭ বলে করেছেন মাত্র ২ রান। অনেকদিন পর জাতীয় দলের হয়ে খেলা নামা সাকিবও রান পাননি। শান্ত যে ওভারে আউট হয়েছেন সাকিবও সেই ওভারে আউট হয়েছেন ৩ বলে ১ রান করে।
ব্যর্থ হয়েছেন তাওহিদ হৃদয়, জাকের আলীরাও। বিনা উইকেটে ১০১ রান তোলা বাংলাদেশ তারপর মাত্র ৪২ রানের ব্যবধানে দশ উইকেট হারিয়ে ফেলে। ১৯.৫ ওভারে ১৪৩ রানে গুটিয়ে যায় বাংলাদেশ।
জিম্বাবুয়ের হয়ে লুক জঙ্গয় তিন উইকেট নিয়েছেন। দুটি করে উইকেট নিয়েছেন রিচার্ড এনগারাভা ও ব্রায়ান বেনেট।
সারাবাংলা/এসএইচএস