রোজায় ঘুমের সমস্যা সমাধানে কী করবেন

রোজায় ঘুমের সমস্যা সমাধানে কী করবেন

রোজায় ঘুমের সমস্যা সমাধানে কী করবেন

সুস্বাস্থ্যের জন্য, সারাদিনের কাজকর্ম সঠিকভাবে করার জন্য পর্যাপ্ত ঘুম জরুরি। আমাদের শরীরের অভ্যন্তরে বায়োলজিক্যাল ক্লক নামে এক প্রাকৃতিক ঘড়ি রয়েছে যাকে আমরা দেহঘড়ি বলে থাকি। আর চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় যাকে বলে সার্কাডিয়ান রিদম। এই সার্কাডিয়ান রিদম আমাদের ঘুমানো এবং ঘুম থেকে জেগে ওঠার ব্যাপারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। বায়োলজিক্যাল ক্লক আমাদের ঘুমের সাধারণ নিয়মের সাথে পরিচিত। যেমন আমরা রাতে একটানা সাত থেকে আট ঘন্টা ঘুমাই আবার সকালে ঘুম থেকে জেগে উঠি। ঘুমের সাইকেলে কোন ধরনের পরিবর্তন এই সার্কাডিয়ান রিদমের উপর প্রভাব ফেলে। যার ফলে মুড সুইং মানে হঠাৎ মন ভালো হওয়া আবার হঠাৎ মন খারাপ হয়ে যাওয়া, খিটখিটে মেজাজ, মাথাব্যথা, মাইগ্রেনসহ নানা ধরনের শারীরিক এবং মানসিক সমস্যা দেখা দেয়। যার ফলে স্বাভাবিক জীবনব্যবস্থা এবং পারিবারিক ও সামাজিক সম্পর্ক ক্ষতিগ্রস্থ হয়। সাধারণত রোজার সময় আমাদের ঘুমের স্বাভাবিক নিয়মের ব্যত্যয় ঘটে।

রোজায় আমরা ভোররাতে সেহরি খাওয়ার জন্য জেগে উঠি তারপর ফজর নামাজ পড়ে ঘুমাতে যাই। এসময় দুই থেকে আড়াই ঘন্টার বেশি ঘুমানো যায় না কারণ দিনের কাজকর্ম এবং অফিসে যাবার তাড়া থাকে। অন্যদিকে আবার তারাবি নামাজ পড়ে, রাতের খাবার খেয়ে পরিবারের সদস্যদের সাথে গল্প আড্ডা দিয়ে অনেকেই বেশ রাত করে ঘুমাতে যাই। ফলে সাত থেকে আট ঘন্টার যে পর্যাপ্ত ঘুমের প্রয়োজন সেটা পূরণ হয় না। ফলে নানা ধরনের শারীরিক এবং মানসিক সমস্যা দেখা দেয়। এতে করে রোজার সময় স্বাস্থ্য উপকারিতা বাধাগ্রস্থ হয়।

রোজায় পর্যাপ্ত ঘুম নিশ্চিত করতে হবে। এজন্য তারাবির নামাজ পড়ে ঘুমিয়ে গেলে ভালো হয়। আলো জালিয়ে ঘুমানো ঠিক নয়। অনেকে আলো জ্বালিয়ে ঘুমান। এতে কিন্তু সমস্যা হয়। সেহেরি করে নামাজ পড়ে কিছুক্ষণ ঘুমানো যেতে পারে। দিনের বেলায় যদি সুযোগ থাকে তবে এক ঘণ্টা ঘুমিয়ে নিলে শরীর ভাল থাকবে। এভাবে ঘুমাতে পারলে কিন্তু শরীর ও মন দুইটাই ভালো থাকবে। সন্ধ্যার পর ক্যাফেইন জাতীয় খাবার বর্জন করা উচিত। ইফতার করার পরপরই বেশি চা খাওয়া উচিত নয়। ভাজা পোড়া বেশি খেলে অস্বস্তি হয়। ফলে ভাল ঘুম হয়না। একসাথে বেশি খাবার খেলেও ঘুমের সমস্যা হতে পারে।

ঘুমানোর আগে ল্যাপটপ মোবাইল থেকে দূরে থাকতে হবে। ঘুমের আগে এগুলো ব্যবহার করলে অনেক সময় ভালোভাবে ঘুম আসতে চায়না। ঘুমের পরিবেশে যেন শব্দ না হয় অথবা খুব বেশি গরম না থাকে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। রোজার সময় আমাদের দেহঘড়িতে পরিবর্তন হয়। কিন্তু এটি সৃষ্টিকর্তার নির্দেশ এবং রোজা রাখা অত্যন্ত সওয়াবের কাজ। তাই রোজা রাখতে হবে। ঘুমের ব্যাপারে এসব পরামর্শ মেনে চললে অনেকটাই সমস্যার সমাধান হবে। তারপরও যদি কারও সমস্যা থাকে তাহলে তিনি চিকিৎসকের সাথে পরামর্শ করবেন।

The post রোজায় ঘুমের সমস্যা সমাধানে কী করবেন appeared first on Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment.

Scroll to Top