‘রাজায় রাজায় যুদ্ধ হয়, উলুখাগড়ার প্রাণ যায়’!

‘রাজায় রাজায় যুদ্ধ হয়, উলুখাগড়ার প্রাণ যায়’!

নিউ মার্কেটে কেনাবেচায় খরা

‘রাজায় রাজায় যুদ্ধ হয়, উলুখাগড়ার প্রাণ যায়’ বুঝলেন আপা! ‘আন্দোলনতো হয় সব এই এলাকায়। কিছু হইলেই আমগো প্যাটে লাথি। ছাত্র আন্দোলন কন, আওয়ামী লীগ, বিএনপির মিছিল কন সব হয় এহেনে। কিছু হইলেই নীলক্ষেতের রাস্তা বন্ধ, বেচাকেনা বন্ধ। আমরা কিছুর সাতপাচে থাকি না, তাও ভোগান্তি আমগো গরিবেরই। এই দুই, তিনদিন দুই, চার হাজারও বেচতে পারি নাই’ আক্ষেপের সুরে একথাগুলো বলছিলেন নিউমার্কেটের ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী মোহাম্মদ খোকন।

সরকারি চাকরিতে কোটাপদ্ধতির কোটা সংস্কার আন্দোলনের ব্যাপক প্রভাব পড়েছে রাজধানী ঢাকার নিউমার্কেটে বেচাকেনায়। আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ‘ব্লকেড’ কর্মসূচির কারণে নিউমার্কেটে ক্রেতাদের ভিড় একদমই নেই বললেই চলে। একেবারে ক্রেতাশূন্য নিউমার্কেট।

এ আন্দোলনের ফলে ব্যবসায়ীরা অর্থনৈতিকভাবে তাদের ক্ষতির কথা জানিয়েছেন বার্তা২৪.কমকে।

বৃহস্পতিবার (১১ জুলাই) বিকেলে সরেজমিন নিউমার্কেট এলাকায় দেখা যায়, যে এলাকা বিকেল থেকে ক্রেতা সমাগমে সরগরম ও কোলাহলপূর্ণ জমজমাট থাকে, সেখানে ক্রেতাবিক্রেতাদের হাকডাক নেই। নীরবতা বিরাজ করছে সেখানে। দোকানিরা শুয়ে-বসে অলস সময় পার করছেন।

নিউমার্কেটের মেসার্স সিয়াম ট্রেডার্স থেকে মোহাম্মাদ পারভেজ বলেন, রোজ ৩৫ থেকে ৪৫ হাজার টাকা বেচাবিক্রি হয়। এই অবরোধের তিনদিন ৪-৫ হাজার টাকাও বিক্রি হয়নি। রোজ দোকান ভাড়া, স্টাফ খরচ সব মিলিয়ে লোকসান হচ্ছে।

নিউমার্কেটের ১ নম্বর গেটের ভেতরে রাস্তার ডানদিকে বসে দুই, একজন ক্রেতা যারা আসছেন, নানা চটকদারি ভাষায় ক্রেতা আকর্ষণ করার চেষ্টা করছেন প্যান্ট বিক্রেতা কয়েস আলী।

তার সঙ্গে কথা হলে তিনি বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘কাইল আর আইজ বিসমিল্লাহ করতেই দুপুর হইছে! একে অবরোধ, তাতে বৃষ্টি! ২ হাজার টাকাও বিক্রি হয়নি’।

‘রাজায় রাজায় যুদ্ধ হয়, উলুখাগড়ার প্রাণ যায়’!

রাজধানী ঢাকার নিউমার্কেটের ব্যবসায়ীরা শুয়েবসে অলস সময় কাটাচ্ছেন ‘ব্লকেড’ কর্মসূচির কারণে, ছবি- বার্তা২৪.কম


 

নিউমার্কেটের মসজিদের কাছে বলাকা ম্যাট হাউসের স্বত্বাধিকারী মো. কাউছার খান বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘ডেইলি ডেইলি এসবে আমগো ব্যবসায় ক্ষতি। আমগো তো একার পেট না। ৪ জন স্টাফ, তাগো বেতন, নাস্তা-খরচ, দোকান ভাড়া সব দিতে হয়। রাস্তাঘাটে গাড়ি না চললে লোক আইবে ক্যামনে। এই কয়দিন ১২ হাজার টাকাও বিক্রি হয় নাই’!

অন্যদিকে, ক্রেতাশূন্য দোকানে বসে মোবাইল ফোন চালাচ্ছেন, নিউ পায়েল দোকানের কর্মী মো. আরফান শিকদার। তিনি জানালেন, কোটা আন্দোলন যৌক্তিক। আমি নিজেও একজন ছাত্র। কিন্তু এতে ব্যবসায়ীদের ক্ষতি। তিন, চারদিন বেচাবিক্রি না হলে অনেক ক্ষতি!

অন্যদিকে, গাউছিয়া মার্কেটে বিকেলের পর থেকে কিছু লোক সমাগমের উপস্থিতি লক্ষ করা যায়। তবে বেচাকেনা তেমন একটা ছিলই না বলা চলে।

Scroll to Top