রাজশাহীর আম কোথা থেকে এল, কীভাবে সুখ্যাতি ছড়াল

রাজশাহীর আম কোথা থেকে এল, কীভাবে সুখ্যাতি ছড়াল

জেলার চারঘাটের এমন কোনো গ্রাম নেই, যেখানে আমবাগান নেই। চারঘাটের মাড়িয়া গ্রামের বিশিষ্ট রাজনীতিক আনসার প্রামাণিকের বড় কয়েকটি আমবাগান আছে। একেকটি বাগানের আয়তন ১০ থেকে ৩০ বিঘা। একই গ্রামের মো. নূরুদ্দীনেরও কয়েকটি বড় আমবাগান আছে। কিছু গাছ শতবর্ষী। মোহননগর গ্রামের প্রয়াত হোসেন আলীর ৫০ বিঘার আমবাগানটি উল্লেখ করার মতো। উপজেলার ভায়া লক্ষ্মীপুর মাদ্রাসার প্রায় ৯০ বিঘা আয়তনের আমবাগানটিও বৈচিত্র্যে ভরা। ১৯৪৮ সালে এলাকার স্বনামধন্য চিকিৎসক হাসারাতুল্লাহ নিজ হাতে বাগানটি গড়ে তোলেন। তিনি মালদহ-মুর্শিদাবাদ ঘুরে ১০১ জাতের মোট ৩০৫টি আমগাছ লাগিয়েছিলেন। মৃত্যুর আগে বাগানটি তাঁর নিজের প্রতিষ্ঠিত দারুস সালাম সালাফিয়া মাদ্রাসায় দান করে যান।

বাঘা উপজেলার সর্ববৃহৎ ও উল্লেখ করার মতো আমবাগান আছে পুরোনো হাজড়াপাড়া গ্রামে। বাগানটির আয়তন ২০০ বিঘার বেশি। মালিক ছিলেন জমিদার বিনোদবিহারী হাজরা। দেড় শ বছরের পুরোনো বাগানটির পরবর্তী সময়ে মালিক হন আবদুল মজিদ দেওয়ান ও মো. সোলেমান দেওয়ান। এলাকাটি বাগবাগিচার জন্য প্রাচীন আমল থেকে সুপরিচিত। ১৬০৯ সালে মুঘল সম্রাট জাহাঙ্গীরের বার্তা নিয়ে আসা আবদুল লতিফ তাঁর রোজনামচায় বাঘা মসজিদ, মাদ্রাসাসহ আম, কাঁঠালসহ বেহেশততুল্য এলাকাটির কথা উল্লেখ করেন।

বাঘার বাউশা, মনিগ্রাম, পাকুড়িয়া ইউনিয়নের আম সর্বোৎকৃষ্ট। পৌরসভার মধ্যে বলিহার মহল্লার আম বেশি দামে বিক্রি হয়। উপজেলার আড়পাড়া, কলিগ্রাম, চকছাতারী, বারোখাদিয়া, বলিহার, বাউশা, হাবাশপুর, মনিগ্রাম, পানিকামড়া, জোত কাদিরপুর, নারায়ণপুর, হরিণা, তেঁতুলিয়া, আড়ানী গ্রামে ছোট-বড় শত শত বাগান আছে। আড়ানী কুশাবাড়িয়া গ্রামে বড়াল নদের দক্ষিণ পাড়ের আমবাগানটি বয়স প্রায় ৮০ বছর। আড়ানী থেকে বাঘা ১০ কিলোমিটার পথের দুই ধারে শুধুই আমবাগান। জেলার মধ্যে বাঘা ও চারঘাট আম চাষে সবচেয়ে এগিয়ে।

Scroll to Top