মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন যুক্তরাষ্ট্রের আলাস্কায় শুক্রবার (১৫ আগস্ট) আলোচনায় বসছেন। এই বৈঠকের ফলাফল কী হবে তা নিয়ে চলছে বিস্তর আলোচনা।
শুক্রবার (১৫ আগস্ট) অনুষ্ঠিতব্য এই বৈঠকে দুই নেতা ভিন্ন ভিন্ন এজেন্ডা নিয়ে বসলেও ট্রাম্পের চাওয়া হচ্ছে ইউক্রেন যুদ্ধের অবসান।
বিবিসি এক প্রতিবেদনে জানায়, এই শীর্ষ বৈঠকে দুই নেতার চাওয়া সম্পূর্ণ আলাদা। পুতিন দীর্ঘদিন ধরেই ইউক্রেনের ভূখণ্ড দখলে নেওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করে আসছেন। অন্যদিকে, ট্রাম্প নিজেকে বিশ্ব শান্তির দূত হিসেবে প্রকাশ করতে চান।
তবে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প আলাস্কায় অনুষ্ঠিতব্য বৈঠক ফলপ্রসূ না হওয়ার সন্দেহ প্রকাশ করে বলেন, ‘আমি মনে করি এই বৈঠকে ভাল কিছু হবে। তবে এটি খারাপও হতে পারে। সম্ভবত প্রথম ২ মিনিটেই আমি বুঝে যাব, সমঝোতা সম্ভব কি না?’
ট্রাম্পের লক্ষ্য কি?
২০২৪ সালে অনুষ্ঠিত মার্কিন নির্বাচনী প্রচারে ট্রাম্প জানিয়েছিলেন, ইউক্রেন যুদ্ধের সমাপ্তি সহজ এবং তা তিনি কয়েক দিনের মধ্যেই করতে পারবেন। প্রেসিডেন্ট হবার পর থেকেই তিনি ইউক্রেন এবং রাশিয়ার প্রতি অসন্তোষ প্রকাশ করে আসছেন।
এরই প্রেক্ষাপটে ফেব্রুয়ারিতে হোয়াইট হাউসে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কিকে তিরস্কার করেন এবং সামরিক সহায়তা ও গোয়েন্দা তথ্য ইউক্রেনের জন্য সাময়িকভাবে স্থগিত রাখেন।
সাম্প্রতিক সময়ে ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলার সমালোচনা করেছেন এবং রাশিয়ার ওপর নতুন নিষেধাজ্ঞার সময়সীমা বেঁধে দিয়েছেন। যদিও তিনি তা কার্যকর করেননি। এখন তিনি শান্তির বিনিময়ে ভূখণ্ড ছাড়ের প্রস্তাব তুলেছেন, যা কিয়েভের চিন্তার কারণ।
আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে এটি এখন স্পষ্ট যে, ট্রাম্প যুদ্ধের অবসান ঘটানো নেতা হিসেবে পরিচিত হতে চান। তিনি “শান্তিদূতের” পরিচয় নিয়ে নোবেল শান্তি পুরস্কার পাওয়ার স্বপ্ন দেখছেন।
পুতিনের লক্ষ্য কি?
এই বৈঠকে প্রেসিডেন্ট পুতিন চান-যুক্তরাষ্ট্রের স্বীকৃতি যার মাধ্যমে প্রকাশ হবে যে, রাশিয়াকে বিচ্ছিন্ন করার পশ্চিমা সব প্রচেষ্টাই ব্যর্থ হয়েছে।
বৈঠকে পুতিনের আলাস্কা বেছে নেওয়ার প্রথম কারণ নিরাপত্তা। প্রেসিডেন্ট পুতিন সবসময় তার ভ্রমণ জনিত নিরাপত্তাকে প্রাধান্য দিয়ে আসছেন। আলাস্কার মূল ভূখণ্ড রাশিয়ার চুকোটকা থেকে মাত্র ৯০ কিলোমিটার দূরে এবং এটি ইউক্রেন ও ইউরোপ থেকে অনেক দূরে। যা কিয়েভ ও ইইউ নেতা এবং শত্রুভাবাপন্ন দেশগুলোকে এড়িয়ে সরাসরি যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনার কৌশলের সাথে সংগতিপূর্ন।
তবে পুতিন শুধু স্বীকৃতিতে সন্তুষ্ট হবেন কিনা তা সময়সাপেক্ষ। তিনি রাশিয়ার দখলকৃত ইউক্রেনীয় অঞ্চল দোনেস্কো, লুহানেস্কো, জাপোরিঝঝিয়া এবং খেরসনকে রাশিয়ার হাতে রাখতে চাইবেন বলেই মনে করছেন বিশ্লেষকরা।