মাদ্রাসা শিক্ষার্থীকে বস্তায় ভরে ছাদে ফেলে রাখেন শিক্ষক!

মাদ্রাসা শিক্ষার্থীকে বস্তায় ভরে ছাদে ফেলে রাখেন শিক্ষক!

এই খবরটি পডকাস্টে শুনুনঃ

গাজীপুরের কালীগঞ্জে ১০ বছরের এক মাদ্রাসা শিক্ষার্থীকে বস্তায় ভরে রেলিংবিহীন ছাদে ফেলে রাখার ঘটনার অভিযোগ উঠেছে। ঘটনা জানাজানি হওয়ার ভয়ে মাদ্রাসার গেট তালাবদ্ধ করে রাখা হয় ঘণ্টার পর ঘণ্টা। তীব্র রোদের মধ্যে শিশুটিকে চটের বস্তায় আটকে রাখার ঘটনায় ক্ষোভে ফুঁসে উঠেছে স্থানীয়রা।

শনিবার (২৮ জুন) কালীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. আলাউদ্দিন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, শনিবার সকালে এ ঘটনা ঘটে।

ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী (১০) কালীগঞ্জ উপজেলার বক্তারপুর ইউনিয়নের ফুলদী দাওদাপাড়া গ্রামের মোশারফ হোসেনের ছেলে। সে স্থানীয় ফুলদী নূরে মদিনা হাফিজিয়া মাদরাসা ও এতিমখানার শিক্ষার্থী।

অভিযুক্ত হাফেজ জাকারিয়া (২৯) একই উপজেলার মোক্তারপুর ইউনিয়নের সাওরাইদ এলাকার বাসিন্দা এবং মাদ্রাসাটির প্রধান শিক্ষক।

স্থানীয়রা জানায়, সকালে কোনো এক কারণে শিক্ষার্থীকে পিটায় শিক্ষক জাকারিয়া। পরে সে কান্নাকাটি শুরু করলে এবং পরিবারের কাছে বলে দেওয়ার হুমকি দিলে শিক্ষক ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন। এসময় একটি চটের বস্তায় শিশুটির শরীর আটকে মাথা বাহিরে রেখে দোতলা মাদ্রাসা ভবনের রেলিংবিহীন ছাদে ফেলে রাখা হয়। এ সময় তাকে যাতে কেউ খুঁজে না পায়, এজন্য মাদ্রাসার গেট বাইরে থেকে তালাবদ্ধ করে দেওয়া হয়।

তারা জানান, বন্দি অবস্থায় বস্তায় প্রস্রাব ও পায়খানা করে শিশুটি। দীর্ঘসময় পর মাদ্রাসার এক সহপাঠী গোপনে জানালা দিয়ে বের হয়ে বিষয়টি তার পরিবারকে জানায়। খবর পেয়ে ছুটে আসেন পরিবারের সদস্যরা। এরপর আশপাশের মানুষ জড়ো হন এবং পুলিশে খবর দেওয়া হয়।

স্থানীয়রা জানায়, অভিযুক্ত শিক্ষক আগেও শিক্ষার্থীদের গায়ে হাত তোলার জন্য পরিচিত ছিলেন, তবে এতটা নির্মম আচরণ এবারই প্রথম চোখে পড়ে।

শিশুটির বাবা মোশারফ হোসেন বলেন, এটা কোনও শিক্ষকের কাজ হতে পারে? আমার ছেলে ছোট, কোনো ভুল করলেও এভাবে নির্যাতনের অধিকার কারো নেই। আমি থানায় অভিযোগ করেছি, মামলা করবো। আমি আমার সন্তানের ওপর নির্যাতনের বিচার চাই।

কালীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. আলাউদ্দিন বলেন, আমরা ঘটনাস্থলে গিয়ে স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলেছি। অভিযুক্ত শিক্ষক ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেছেন। তবে তার দাবি, শিশুটিকে পুরোপুরি বস্তার মধ্যে না রেখে মাথা বাইরে রাখা হয়েছিল, যেন সে পালাতে না পারে।

তিনি জানান, অভিযুক্তকে পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়েছে এবং শিশুটির পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয়েছে। আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের প্রক্রিয়া চলমান।

Scroll to Top