মনিরামপুরে জোরপূর্বক মাছ বিক্রির অভিযোগ | চ্যানেল আই অনলাইন

মনিরামপুরে জোরপূর্বক মাছ বিক্রির অভিযোগ | চ্যানেল আই অনলাইন

এই খবরটি পডকাস্টে শুনুনঃ

যশোরের মনিরামপুরে ঘের থেকে ধরা মাছ বিক্রির উদ্দেশে নেয়ার পথে জোরপূর্বক বিক্রির অভিযোগ ওঠেছে স্থানীয় রাজনীতিতে যুক্ত কয়েকজনের বিরুদ্ধে। ওই ঘেরের যৌথ মালিক মনিরামপুর আলিয়া মাদ্রাসার শিক্ষক আবুল বাশার ও বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলাম মনিরামপুর উপজেলার সহ-সভাপতি মো. লিয়াকত আলী।

ঘটনা জানাজানির পর মাছ বিক্রির টাকা দিয়ে ঘটনা ধামাচাপা দেয়ার অভিযোগ উঠেছে নেহালপুর ইউনিয়নের জি এম খলিলুর রহমানের বিরুদ্ধে। মাছ কেড়ে নেয়ার নির্দেশদাতা হিসেবেও নাম এসেছে খলিলুরের।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, উপজেলার পাড়িয়ালী গ্রামের আবু নছর ঘেরের মাছ ধরে বিক্রির জন্য ভবদহ মাঠের আড়তে নিয়ে যাচ্ছিলেন। পথে মনোহরপুর বাজারে একদল লোক সেই গাড়িতে উঠে পড়ে এবং সেই মাছ কপালিয়া বাজারে তাদের মত বিক্রি করে টাকা নিয়ে যায়। পরে ঘেরের মালিক ও স্থানীয়রা বাজারের সিসিটিভি ফুটেজ দেখে জোরপূর্বক মাছ কেড়ে নেয়ার সাথে মাহাবুর রহমান, রাজিব হোসেন, সাইফুল ইসলাম ও জাহাঙ্গীর আলমকে চিহ্নিত করেন।

অভিযুক্তদের সবাই নেহালপুর ইউনিয়নের রাজনীতিতে জড়িত। এলাকাবাসীর অভিযোগ, খলিলুর এ ঘটনার মূল নির্দেশদাতা এবং তার সাথে নেহালপুর ইউনিয়নের আবদুল্লাহ আল মামুন মিন্টু এবং সোহেল রানাও যুক্ত আছেন। অভিযুক্তদের মধ্যে সাইফুল সম্পর্কে খলিলুরের ভাতিজা।

GOVT

আরও জানা গেছে, কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্যের স্থানীয় ঘুঘুদহ বিলে মাছের ঘের রয়েছে। শনিবার দুপুরে লেখকের ঘের থেকে মাছ ধরে কপালিয়া বাজারে বিক্রির উদ্দেশে পাঠানো হয়। কেড়ে নেয়া ওই গাড়িতে লেখকের মাছ রয়েছে মনে করে লিয়াকত ও আবু নসরসহ ঘেরের অংশীদারদের মাছ কেড়ে নেন অভিযুক্তরা, যার দৃশ্য মনোহরপুর বাজারের সিসি টিভির ফুটেজে ধরা পড়ে।

জোর করে মাছ বিক্রি করে নেয়ার বিষয়ে ঘের মালিক মনিরামপুর আলিয়া মাদ্রাসার সহকারী অধ্যাপক আবুল বাশার চ্যানেল আই অনলাইনকে জানান, শনিবার আমার ঘের থেকে মাছ তুলে ভবদহ বাজারে বিক্রির উদ্দেশ্যে রওনা করলে পথিমধ্যে কিছু সন্ত্রাসী মাছের গাড়িতে উঠে পড়ে। পরে তারা ওই মাছ বিক্রি করে টাকা নিয়ে যায়। পরে সিসিটিভি ফুটেজ দেখে স্থানীয়রা সাইফুল ইসলাম, জাহাঙ্গীর আলম, মাহবুর রহমান, রাজিব হোসেনকে চিহ্নিত করে। পরে নেহালপুর ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক জি এম খলিলুর রহমান আমাদের ৮৯ হাজার টাকা ফেরত দেন।

অভিযুক্তদের রাজনৈতিক পরিচয় আছে কি না এমন প্রশ্নে বাশার জানান, এলাকায় এখন আওয়ামী লীগের কেউ নেই, সবাই পালিয়ে বেড়াচ্ছে জীবন নিয়ে। সুতরাং তাদের দ্বারা এমন হওয়ার কথা না। যে ফোনে ফোনে কোনো সালিশ বিচার ছাড়াই ৮৯ হাজার টাকা উদ্ধার করে দিল, তারও হাত থাকতে পারে। সে ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিল না এজন্য সরাসরি তার বিরুদ্ধে আমার অভিযোগ নেই। তবে সিসিটিভি ফুটেজে তার ভাইপোকে আমরা শনাক্ত করেছি।

অভিযুক্ত মাহাবুর রহমান বলেছেন, এটা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন কথা, আমার সাথে শত্রুতা করে অন্যরা এ কাজ করছে। মাছের গাড়িতে আমার যে ছবি দেখা গেছে, এমন ছবি আরও পাঠানো যাচ্ছে। আর একটা গাড়িতে উঠলেই তো প্রমাণিত হয় না যে ছিনতাই করছি। গাড়িতে উঠলে তো ছবি উঠতেই পারে। তবে এ বিষয়ে আমি এখন কথা বলতে পারব না, এখন আমি একটা ঘেরের মধ্যে আছি। পরে কথা হবে।

অন্যের মাছ কেড়ে নেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন এমন অভিযোগ সম্পর্কে জানতে খলিলুর রহমানের সাথে মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি। পরে ফোন কেটে দিয়ে নাম্বার বন্ধ করে রাখেন। অন্য অভিযুক্ত রাজিব হোসেন, সাইফুল ইসলাম এবং জাহাঙ্গীর আলমের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তা সম্ভব হয়নি।

এ ব্যাপারে মনিরামপুর থানার অফিসার ইনচার্জ জানান, আমাদের কাছে তথ্য আছে, দুই পক্ষ বসে বিষয়টির মিমাংসা করেছে। তবে আমাদের কাছে আনুষ্ঠানিক কোনো অভিযোগ দায়ের করেনি।

Scroll to Top