মডেল মেঘনা আলমকে নিরাপত্তা হেফাজতে রাখা হয়েছে বলে জানিয়েছে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)।
আজ শুক্রবার ডিএমপির এক বার্তায় এ তথ্য জানানো হয়।
এতে মেঘনা আলমকে নিরাপত্তা হেফাজতে নেয়ার পেছনে কারণ হিসেবে রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা বিঘ্নিত করা, গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি সম্পর্কে মিথ্যাচার ছড়ানোর মাধ্যমে আন্তঃরাষ্ট্রীয় সম্পর্ক অবনতির অপচেষ্টা ও দেশকে অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত থাকার অভিযোগের কথা বলা হয়েছে।
পুলিশ বলেছে, মেঘনা আলমকে অপহরণ করার অভিযোগ সঠিক নয়। তথাপি আইনের আশ্রয় নেওয়ার অধিকার তার রয়েছে।
জানা গেছে, গত বুধবার রাতে রাজধানীর বসুন্ধরার নিজ বাসা থেকে আটক করা হয় মেঘনা আলমকে। সেসময় ফেসবুকে লাইভ করে নিজেকে নিরপরাধ বলে দাবি করেন তিনি।
পরে গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে পুলিশের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) সেফাতুল্লাহর আদালত বিশেষ ক্ষমতা আইনে মডেল মেঘনা আলমকে ৩০ দিনের আটকাদেশ দেন। সেখানে থেকে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়।
এর আগে, মেঘনাকে অপহরণ করা হয়েছে বলে গুজব ছড়িয়ে পড়ে। তবে পরে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ নিশ্চিত করে, তিনি তাদের হেফাজতে রয়েছেন। মিথ্যা তথ্য ছড়িয়ে কূটনৈতিক সম্পর্ক ক্ষতিগ্রস্ত করা এবং দেশের অর্থনৈতিক ক্ষতি সাধনের হুমকি দেওয়ার অভিযোগে তাকে হেফাজতে রাখা হয়েছে।
আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী, ১৯৭৪ সালের বিশেষ ক্ষমতা আইনের ৩(১) ধারার আওতায় মেঘনা আলমকে ৩০ দিনের জন্য হেফাজতে রাখা হয়েছে। জননিরাপত্তা ও আইনশৃঙ্খলার জন্য হুমকিস্বরূপ কার্যক্রমে জড়িত হওয়া থেকে তাকে বিরত রাখতেই এই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, যা উক্ত আইনের ২(চ) ধারায় সংজ্ঞায়িত।
আদালতের নির্দেশের পর মেঘনাকে কাশিমপুর কারাগারে পাঠানো হয়।
এই ঘটনাটি ঘটে গত বুধবার সন্ধ্যায় একটি ফেসবুক লাইভ সম্প্রচারের পর। সেই লাইভে মেঘনা আলম অভিযোগ করেন, পুলিশ পরিচয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা তার বাসায় জোরপূর্বক প্রবেশ করেন। প্রায় ১২ মিনিটের ওই ফেসবুক লাইভ হঠাৎ করেই বন্ধ হয়ে যায় এবং পরে তা সড়িয়ে ফেলা হয়।
বিশেষ ক্ষমতা আইনের অধীনে সরকার নির্দিষ্ট সময়ের জন্য কাউকে কোনো আনুষ্ঠানিক বিচার ছাড়াই হেফাজতে রাখতে পারে। সাধারণত জাতীয় নিরাপত্তা ও জনশৃঙ্খলার স্বার্থে এই ক্ষমতা ব্যবহার করা হয়।
মেঘনা আলম ২০২০ সালের ৫ অক্টোবর ‘মিস আর্থ বাংলাদেশ’ খেতাব জিতে আলোচনায় আসেন। পরিবেশ রক্ষা করতে ফেলে দেয়া প্লাস্টিক দিয়ে নতুন পণ্য বানিয়ে এবং তা বিক্রয়ের মাধ্যমে নারী উদ্যোক্তা তৈরি করে নারীদেরকে স্বাবলম্বী করার প্রচেষ্টার জন্য তিনি প্রশংসিত হন।
সম্প্রতি তিনি নিজের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে দাবি করেন, এক বিদেশি কূটনীতিক পুলিশকে প্রভাবিত করে তার পরিচিতজনদের তুলে নিয়ে যাচ্ছেন এবং তাকে ‘সত্য’ প্রকাশ না করতে হুমকি দিচ্ছেন। এসব পোস্টও পরবর্তীতে সড়িয়ে ফেলা হয়।