ভোলা জেলার তজুমদ্দিন উপজেলার চাঁচড়ায় ইউনিয়ন মহিলা দলের সভাপতি ও সাবেক ইউপি সদস্যা মালেকা বেগমের ওপর পৈশাচিক হামলা ও নির্যাতন করেছেন ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ইব্রাহিম হাওলাদার ও তার অনুসারীরা।
বুধবার সকালে চাঁচড়া ইউনিয়ন পরিষদ চত্বরে এ ঘটনা ঘটেছে।
মালেকা বেগম জানান, ভিজিএফ ত্রাণের তালিকা নিয়ে স্থানীয় ইউনিয়ন প্রশাসনিক কর্মকর্তা রিয়াজ উদ্দিনের সঙ্গে তার মতবিরোধ হয়। ইউনিয়নের নয়টি ওয়ার্ডের জন্য একশ জন সুবিধাভোগীর তালিকা চাইলেও কর্মকর্তা তা কমিয়ে দিতে বলেন। বিষয়টি নিয়ে রোববার সকালে তিনি পুনরায় ইউনিয়ন পরিষদ অফিসে গেলে পরিকল্পিতভাবে তার ওপর পাশবিক হামলা চালানো হয়।
মালেকা বেগম ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, চাঁচড়া ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ইব্রাহিম হাওলাদার, ইউনিয়ন পরিষদের কয়েকজন কর্মচারী এবং দলের কিছু মহিলা সমর্থক তাকে ইউনিয়ন পরিষদ ভবনের ভেতরে টেনে নিয়ে যান। সেখানেই রশি দিয়ে হাত-পা বেঁধে মুখ, মাথা ও পিঠে এলোপাতাড়ি মারধর করা হয়। শত শত মানুষের সামনে তাকে উলঙ্গ করে শারীরিক ও মানসিকভাবে লাঞ্ছিত করা হয়।
গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে প্রথমে তজুমদ্দিন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। অবস্থার অবনতি হলে সেখানকার চিকিৎসকরা তাকে ভোলা সদর হাসপাতালে রেফার করা হয়।
ইউনিয়ন প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. রিয়াজ উদ্দিন বলেন, আমি ঘটনার সময় ইউনিয়ন পরিষদের ছিলাম না। ঘটনাটি পরে জেনেছি এবং কর্তৃপক্ষকে অবহিত করেছি।
তজুমদ্দিন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মহব্বত খান জানান, ঘটনার বিষয়ে শুনেছি। লিখিত অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত বিএনপি নেতা ইব্রাহিম হাওলাদারের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও গণমাধ্যমকর্মীরা কোন সাড়া পাননি।
তজুমদ্দিন উপজেলা মহিলা দলের সভাপতি ফরিদা ইয়াসমিন বলেন: চাঁচড়া ইউনিয়নের সাহসী ও ত্যাগী নেত্রী মালেকা বেগমের ওপর এই পৈশাচিক হামলার আমরা তীব্র নিন্দা জানাই। ৮ বছর ধরে জনগণের সেবা করে আসা একজন নারী নেত্রীকে যেভাবে শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করা হয়েছে, তা কেবল একজন নারীকে নয়, সমগ্র মানবতা ও নারীর সম্মানকে পদদলিত করেছে। এটি সভ্য সমাজের জন্য এক গভীর লজ্জাজনক দৃষ্টান্ত।
ফরিদা ইয়াসমিন আরও বলেন: আমরা বিশ্বাস করি, এই হামলা পূর্বপরিকল্পিত এবং এর পেছনে রয়েছে আওয়ামী লীগপন্থী একটি কুচক্রী মহল, যারা বিএনপির ত্যাগী নেতাকর্মীদের দমন করতে চায়। আমাদের জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ বীর বিক্রমকে প্রশ্নবিদ্ধ করার ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবেই এই হামলা চালানো হয়েছে। দেশের বিবেকবান জনগণ, দলীয় নেতৃত্ব এবং প্রশাসনের প্রতি আমাদের জোর দাবি—এই নারকীয় হামলার সুষ্ঠু তদন্ত করে দোষীদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করা হোক।