রাশিয়ান তেল ও গ্যাস আমদানির শাস্তি হিসেবে বুধবার ভারতের ওপর অতিরিক্ত আরও ২৫% শুল্ক আরোপের ঘোষণা দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এর ফলে বৃহস্পতিবার থেকে কার্যকর হতে যাওয়া ২৫% শুল্কের পাশাপাশি অতিরিক্ত আরও ২৫% শুল্ক আরোপের ফলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ভারতীয় আমদানির ওপর মোট শুল্ক বেড়ে দাঁড়ায় ৫০%-এ।
বৃহস্পতিবার (৭ আগস্ট) বিবিসির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা গেছে।
হোয়াইট হাউস এক বিবৃতিতে বলেছে, ইউক্রেনে রাশিয়ার পদক্ষেপ মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা এবং বৈদেশিক নীতির জন্য একটি চলমান হুমকি, যার ফলে জাতীয় জরুরি অবস্থা মোকাবিলায় আরও শক্তিশালী পদক্ষেপ গ্রহণের প্রয়োজন। ভারতের রাশিয়ান তেল আমদানি ইউক্রেনে রাশিয়ার পদক্ষেপ মোকাবিলায় মার্কিন প্রচেষ্টাকে দুর্বল করে।
রাশিয়ার তেল ও গ্যাসের বৃহত্তম ক্রেতাদের মধ্যে রয়েছে চীন, ভারত এবং তুরস্ক। বিশ্বব্যাপী পণ্য তথ্য প্ল্যাটফর্ম কেপলার অনুসারে, রাশিয়ার কাছ থেকে তেল কেনা বৃহত্তম ক্রেতা হচ্ছে ভারত। যা ভারতের সামগ্রিক সরবরাহের ৩৫% এরও বেশি।
সংবাদ সংস্থা রয়টার্সের বাণিজ্যিক তথ্যে জানা গেছে, ভারত এই বছরের প্রথম ছয় মাসে প্রতিদিন প্রায় ১.৭৫ মিলিয়ন ব্যারেল রাশিয়ান তেল কিনেছে। এ বিষয়ে হোয়াইট হাউসের এক অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে ট্রাম্প এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, ভারতের ওপর শুল্ক আরোপ কেবল শুরু- “আপনি আরও অনেক কিছু দেখতে পাবেন, এত ‘সেকেন্ডারি স্যাংশন’।
অতিরিক্ত শুল্কের অর্থ হল- টেক্সটাইল, রত্ন ও গহনা, অটো যন্ত্রাংশ এবং সামুদ্রিক খাবারের মতো গুরুত্বপূর্ণ ভারতীয় রপ্তানি পণ্যের ওপর ৫০% উচ্চ শুল্ক আরোপ করা, যা কর্মসংস্থান সৃষ্টিকারী প্রধান খাতগুলোকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে। আইফোন এবং ফার্মাসহ ইলেকট্রনিক্স আপাতত শুল্কের বাইরে থাকবে।
এরআগে, রাশিয়া থেকে তেল কেনার ওপর ট্রাম্পের শুল্ক বৃদ্ধির হুমকিকে “অবিচার এবং অযৌক্তিক” বলে অভিহিত করেছে ভারত।
ফেডারেশন অফ ইন্ডিয়া এক্সপোর্টস অর্গানাইজেশনস অতিরিক্ত শুল্ক আরোপের সিদ্ধান্তকে “অত্যন্ত মর্মান্তিক” বলে অভিহিত করেছে। এই শুল্কআরোপে আমেরিকায় ভারতের রপ্তানির ৫৫% ক্ষতি হবে।
দিল্লি-ভিত্তিক থিঙ্ক ট্যাঙ্ক গ্লোবাল ট্রেড রিসার্চ ইনিশিয়েটিভ (জিটিআরআই) অনুসারে, শুল্ক আরোপের ফলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ভারতীয় পণ্যের দাম অনেক বেশি হবে এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রগামী রপ্তানি ৪০-৫০% কমে যেতে পারে।
প্রাক্তন ভারতীয় বাণিজ্য কর্মকর্তা ও জিটিআরআই এর প্রধান অজয় শ্রীবাস্তব বলেছেন, ভারতের শান্ত থাকা উচিত, কমপক্ষে ছয় মাস প্রতিশোধ এড়ানো উচিত। তাদের স্বীকার করা উচিত, হুমকি বা অবিশ্বাসের মুখে আমেরিকার সাথে অর্থপূর্ণ বাণিজ্য আলোচনা এগিয়ে যেতে পারে না।