ব্র্যাক ইউনিভার্সিটিতে প্রথমবার আয়োজিত হল ‘আয়েশা আবেদ স্মৃতি নারী ক্রিকেট টুর্নামেন্ট ২০২৫’। সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয়টির মেরুল বাড্ডা ক্যাম্পাসে দিনব্যাপী টুর্নামেন্টের আয়োজন হয়। খেলাধুলায় মেয়েদের প্রতিভা, দলীয় চেতনা ও দৃঢ় মনোভাবকে উদযাপন ছিল মূল লক্ষ্য।
আয়েশা হাসান আবেদ ছিলেন একজন সমাজকর্মী, সংগঠক ও দূরদর্শী নেত্রী। ব্র্যাকের শুরুর দিনগুলো থেকে তিনি ফজলে হাসান আবেদের সঙ্গে কাজ করে দারিদ্রপীড়িত মানুষের জীবনমান উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন। তার জীবনদর্শনের মূল ছিল সমাজের শোষিত মানুষের কল্যাণ ও মুক্তি নিশ্চিত করা। টুর্নামেন্ট আয়োজনের মাধ্যমে তার কর্মময় জীবনকে শিক্ষার্থীদের সামনে তুলে ধরা হয়।
গত বুধবার বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্রিকেট ক্লাবের সহযোগিতায় দিনব্যাপী প্রতিযোগিতার আয়োজন হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের মাল্টিপারপাস হলে অনুষ্ঠিত পাঁচ দলের টুর্নামেন্টে অংশ নেয় প্রতিদ্বন্দ্বী, অপরাজিতা, দুর্জয়ী, অগ্নিকন্যা এবং জাগরণী দল।
প্রতিযোগিতার শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচে মুখোমুখি হয় দুর্জয়ী ও অগ্নিকন্যা দল। অগ্নিকন্যাদের ৯ উইকেটে হারিয়ে শিরোপা জেতে দুর্জয়ী দল। প্রথমে ব্যাটিং করে ৬ ওভারে ৯৯ রান সংগ্রহ করে অগ্নিকন্যা দল। জবাবে কেবল ১ উইকেট হারিয়ে জয় নিশ্চিত করে টিম দুর্জয়ী। ফাইনাল শেষে বিজয়ী ও রানার্সআপ দলের হাতে ট্রফি তুলে দেন বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার ডেভিড ডাউল্যান্ড।
চ্যাম্পিয়ন এবং রানার্সআপ ছাড়াও ম্যাচসেরা, সিরিজসেরা এবং সবচেয়ে বেশি ছক্কা হাঁকানো ব্যাটারের হাতে তুলে দেয়া হয় ট্রফি। পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে হিউম্যান রিসোর্স ডিপার্টমেন্টের পরিচালক শাহরিয়ার সাঈদ ঘোষণা দেন যে, তিনি ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির নারী ক্রিকেট দল ও নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির নারী ক্রিকেট দলের মধ্যে একটি প্রীতি ম্যাচ আয়োজনের চেষ্টা করবেন।
কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের চেয়ারপারসন সাদিয়া হামিদ কাজী খেলোয়াড়দের উদ্দেশে বলেন, পড়াশোনার পাশাপাশি খেলাধুলার প্রতি আগ্রহ ধরে রাখা জরুরি। খেলাধুলা কেবল শারীরিক ও মানসিক সুস্থতার জন্য নয়, বরং জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে সফলতার জন্যও গুরুত্বপূর্ণ।
ব্র্যাক ইনস্টিটিউট অব ল্যাঙ্গুয়েজেসের পরিচালক প্রফেসর শায়লা সুলতানা বলেছেন, আগে নারীদের খেলাধুলায় এত উৎসাহ ও সমর্থন ছিল না। এখন নারীদের খেলাধুলাকে আরও উৎসাহিত করা হচ্ছে। এই ধারাকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া উচিত যেন নারী শিক্ষার্থীরা জাতীয় পর্যায়ে খেলতে পারে।
ইন্টারনাল অডিট অ্যান্ড কমপ্লায়েন্স বিভাগের হেড নওশিন আহমেদ খেলোয়াড়দের উৎসাহ দিয়ে বলেছেন, জীবনে চ্যালেঞ্জ আসবে, কিন্তু এগুলো সাহসের সঙ্গে মোকাবিলা করতে হবে এবং কখনও হতাশ হওয়া যাবে না।
স্পোর্টস অ্যান্ড ফিটনেস ডিপার্টমেন্টের সিনিয়র ম্যানেজার জুয়েল দত্ত আশা প্রকাশ করেন, ভবিষ্যতে ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্যোগে একটি আন্তঃবিশ্ববিদ্যালয় নারী ক্রিকেট টুর্নামেন্ট আয়োজন সম্ভব হবে।