এই খবরটি পডকাস্টে শুনুনঃ
জুলাই-আগস্টের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে ঢাকায় অবস্থানকালে পুলিশের গুলিতে চোখ হারানো মো. ফরিদ শেখ ওরফে লাবিব (১৭) নামে এক যুবককে কুপিয়ে গুরুতর জখম করেছে সন্ত্রাসীরা।
রোববার ৬ এপ্রিল রাতে পিরোজপুর সদর উপজেলার টোনা ইউনিয়নের গোপেরহাট এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
আহত ফরিদ শেখ পিরোজপুর সদর উপজেলার টোনা গ্রামের ইলিয়াছ শেখ ও সালমা বেগমের পালিত ছেলে। তার আসল পিতার নাম ফেরদৌস সেখ। মা মারা যাওয়ার পরে ফরিদের পিতা দ্বিতীয় বিয়ে করে ঢাকায় বসবাস করেন। ফরিদ বর্তমানে পিরোজপুরের টোনা গ্রামের দাদা বাড়িতে থাকেন এবং স্থানীয় তেজদাসকাঠী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে নবম শ্রেণিতে লেখাপড়া করছেন।
ফরিদ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে ঢাকায় অবস্থানকালে গত ৪ আগস্ট দুপুরে ঢাকার প্রেসক্লাব এলাকায় চোখে গুলিবিদ্ধ হয়। এতে তার বাম চোখ নষ্ট হয়ে যায়।
হামলার ঘটনায় সোমবার ফরিদের পালিত মা সালমা বেগম বাদী হয়ে ৫ জনের নাম উল্লেখসহ আরও ৩/৪ জনকে অজ্ঞাত আসামি করে পিরোজপুর সদর থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন।
দায়েরকৃত অভিযোগে বলা হয়, ফরিদের সাথে পিরোজপুর সদর উপজেলার কলাখালী ইউনিয়নের রাজারকাঠী গ্রামের নাছির কাজীর ছেলে রাকিব কাজীর সাথে রোজার মধ্যে টোনা গ্রামের একটি মসজিদে বসে কথা কাটাকাটি হয়। এ ঘটনা সে সময়ে মসজিদে উপস্থিত মুসল্লিরা মীমাংসা করে দেয়। কিন্তু রাকিব বিষয়টি মনে রেখে ফরিদের ওপর ক্ষিপ্ত থাকে। পরে রোববার রাতে টোনা ইউনিয়নের গোপেরহাট নামক এলাকায় ফরিদকে একা পেয়ে রাকিব লোকজন নিয়ে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে জখম করে। স্থানীয়রা তাকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে পিরোজপুর জেলা হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করে।
পিরোজপুর জেলা হাসপাতালে বেড না পেয়ে বর্তমানে হাসপাতালের বারান্দার মেঝেতে অবস্থান করছে ফরিদ।
ফরিদ জানায়, গত ৮ রমজান টোনা গ্রামের একটি মসজিদে নামাজের কাতারে দাঁড়ানোর ঘটনা নিয়ে নানা বাড়িতে বসবাস করা রাকিব কাজীর সাথে তার (ফরিদ) কথা কটাকাটি হয়। সে সময়ে বিষয়টি মসজিদের মুসল্লিরা মিটমাট করে দিলেও রাকিব আমাকে মারার জন্য ক্ষিপ্ত হয়ে থাকে। রোববার রাত সাড়ে ৮টার দিকে আমাকে গোপেরহাট ভাঙ্গা পুল এলাকায় একা পেয়ে রাকিবের নেতৃত্বে সিয়াম শিকদার, নাছির কাজী, শাকিল শিকদারসহ ৭/৮জন আমার ওপর হামলা করে। ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে এবং পাইপ ও ইট দিয়ে আঘাত করে। পরে স্থানীয় লোকজন উদ্ধার করে প্রথমে স্থানীয় চলিশা বাজারের গ্রাম্য ডাক্তারের মাধ্যমে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে রাত সাড়ে ১০টার দিকে পিরোজপুর জেলা হাসপাতালে নিয়ে এসে ভর্তি করে।
পিরোজপুর সদর থানার ওসি মো. আব্দুস সোবাহান জানান, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে চোখ হারানো ফরিদ শেখের ওপর হামলা ও কুপিয়ে জখম করার খবর পেয়ে হাসপাতালে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। থানায় একটি লিখিত অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ বিষয়ে মামলা দায়ের প্রক্রিয়াধীন।