বেঁচে ফেরার গল্প শোনালেন সেই যাত্রী – DesheBideshe

বেঁচে ফেরার গল্প শোনালেন সেই যাত্রী – DesheBideshe


বেঁচে ফেরার গল্প শোনালেন সেই যাত্রী – DesheBideshe

নয়াদিল্লি, ১৩ জুন – হঠাৎ তীব্র ঝাঁকুনি অনুভব করেছিলেন। তারপর তার আসন খুলে বেরিয়ে আসে। এ কারণেই তিনি বেঁচে গিয়েছেন বলে মনে করছেন আহমেদাবাদের বিমান দুর্ঘটনার একমাত্র জীবিত যাত্রী বিশ্বাস কুমার রমেশ।

শুক্রবার (১৩ জুন) সকালে হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে সংবাদমাধ্যমকে তেমনটাই জানালেন তিনি। কোন দিক থেকে কীভাবে বেরিয়ে এসেছিলেন, বিমান কীভাবে ভেঙে পড়ল, সে কথাও জানিয়েছেন তিনি।

ভারতের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্যিক ও শিল্প নগরী আহমেদাবাদ থেকে লন্ডনের উদ্দেশে উড্ডয়ন করার বিধ্বস্ত হয় আধুনিক প্রযুক্তির বোয়িং ৭৮৭ ড্রিমলাইনার এআই১৭১ ফ্লাইট। এ দুর্ঘটনায় ২৪০ জনেরও বেশি যাত্রী মারা যান।

৪০ বছর বয়সী ভারতীয় বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ নাগরিক রমেশ ২০০৩ সাল থেকে ব্রিটেনে থাকেন। তার স্ত্রী এবং সন্তানরা সেখানেই রয়েছেন। রমেশ ভারতে এসেছিলেন আত্মীয়দের সঙ্গে দেখা করতে। তার সঙ্গে বৃহস্পতিবার লন্ডনে ফিরছিলেন তার ভাইও। তাকে আর খুঁজে পাননি রমেশ।

রমেশ জানিয়েছেন, বিমানের অন্যদিকের আসনে জায়গা (সিট) পেয়েছিলেন তার ভাই। তার কোনো খোঁজ পাননি এখনো।

হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে রমেশ গতকালই হিন্দুস্তান টাইমসকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বলেছেন, বিমান ওড়ার মাত্র ৩০ সেকেন্ড পর একটা প্রচণ্ড শব্দ শুনতে পেয়েছিলাম। তার পরেই বিমানটি ভেঙে পড়ে। সবকিছু খুব দ্রুত ঘটে গিয়েছিল।

তিনি আরও বলেছেন, আমি যখন উঠে দাঁড়াই, আমার চারপাশে শুধু লাশ আর লাশ। খুব ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম। উঠেই আমি দৌড়াতে শুরু করি। আমার চারপাশে বিমানের অনেক টুকরো দেখতে পেয়েছিলাম। তারপর কেউ আমাকে টেনে ধরে অ্যাম্বুলেন্সে তুলল। আমি হাসপাতালে চলে এলাম।

শুক্রবার (১৩ জুন) সকালে রমেশ আহমেদাবাদ সিভিল হাসপাতালের চিকিৎকদের জানিয়েছেন, তার আসনটি খুলে বেরিয়ে এসেছিল। সেই কারণে হয়তো তিনি বাঁচতে পেরেছেন।

বিষয়টি ব্যাখ্যা করতে গিয়ে রমেশ বলেন, গোটা বিমান ভেঙে পড়ল। হঠাৎ তীব্র ঝাঁকুনিতে আমার সিটটা খুলে এসেছিল। তাই হয়তো আমি বেঁচে গেলাম।

সংবাদমাধ্যমকে রমেশ বলেছেন, আমি যেদিকে পড়েছিলাম, সেখানে হোস্টেলের একতলার ফাঁকা জায়গা ছিল কিছুটা। সেখান দিয়ে আমি বেরিয়ে আসার চেষ্টা করি। কিন্তু উল্টোদিকে হোস্টেলের দেয়াল ছিল। সেদিক থেকে হয়তো কেউ বেরোতে পারেনি। আমার বাঁ হাত একটু পুড়ে গিয়েছে।

এয়ার ইন্ডিয়ার এআই১৭১ বিমানের ইকোনমি ক্লাসের ১১এ আসনে বসেছিলেন রমেশ। তার আসনটি ছিল আপদকালীন দরজার কাছেই। কিন্তু কিভাবে বিমান থেকে বাইরে বেরিয়েছেন, বলতে পারেননি রমেশ। আহমেদাবাদের দুর্ঘটনায় এখন পর্যন্ত ২৬৫ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে।

যেখানে বিমানটি ধাক্কা খেয়েছিল, সেটি চিকিৎসকদের একটি হোস্টেল। ডাক্তারি পড়ুয়ারা তখন দুপুরের খাবার খাচ্ছিলেন। আচমকা বিমান এসে আছড়ে পড়ে, ঢুকে যায় বিল্ডিংয়ের ভেতর। বসত এলাকায় দুর্ঘটনার ফলে মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। বিমানের বহু দেহ ছিন্নভিন্ন হয়ে গিয়েছে। তা শনাক্ত করার জন্য ডিএনএ নমুনা পরীক্ষা করা হচ্ছে।

এয়ার ইন্ডিয়া জানিয়েছে, ওই বিমানে ছিলেন ১৬৯ জন ভারতীয়, ৫২ জন ব্রিটিশ, সাতজন পর্তুগিজ এবং একজন কানাডিয়ান নাগরিক। গুজরাটের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী বিজয় রূপাণী এই বিমানেই লন্ডনে যাচ্ছিলেন। তারও মৃত্যু হয়েছে।

সূত্র: ইত্তেফাক
আইএ/ ১৩ জুন ২০২৫



Scroll to Top