বৃহস্পতিবার শুরু হচ্ছে এইচএসসি পরীক্ষা, কেন্দ্রে কড়া নজরদারি

বৃহস্পতিবার শুরু হচ্ছে এইচএসসি পরীক্ষা, কেন্দ্রে কড়া নজরদারি

এই খবরটি পডকাস্টে শুনুনঃ

চলতি বছরের উচ্চমাধ্যমিক সার্টিফিকেট (এইচএসসি) ও সমমানের পরীক্ষা বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) শুরু হচ্ছে। সকাল ১০টায় বাংলা প্রথম পত্রের মাধ্যমে লিখিত পরীক্ষা শুরু হবে। এ ধাপের পরীক্ষা চলবে ১০ আগস্ট পর্যন্ত। এরপর অনুষ্ঠিত হবে ব্যবহারিক পরীক্ষা।

পরীক্ষার্থী সংখ্যা কমেছে

এবার সারা দেশে মোট ১২ লাখ ৫১ হাজার ১১১ জন শিক্ষার্থী এই পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছে। এর মধ্যে সাধারণ ৯টি শিক্ষা বোর্ডের অধীনে ১০ লাখ ৫৫ হাজারের বেশি শিক্ষার্থী, মাদ্রাসা বোর্ডের আলিম পরীক্ষার্থী ৮৬ হাজারের বেশি এবং কারিগরি বোর্ডের অধীনে ১ লাখ ৯ হাজারের বেশি শিক্ষার্থী রয়েছে।

গত বছরের তুলনায় এবছর পরীক্ষার্থীর সংখ্যা কমেছে ৮১ হাজার ৮৮২ জন। ২০২৪ সালে পরীক্ষার্থী সংখ্যা ছিল ১৩ লাখ ৩২ হাজার ৯৯৩ জন।

নিরাপত্তা ও নকলমুক্ত পরীক্ষা নিশ্চিত করতে কড়া ব্যবস্থা

শিক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, পরীক্ষার সুষ্ঠু ও নকলমুক্ত পরিবেশ নিশ্চিতে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। ১৫ আগস্ট পর্যন্ত দেশের সব কোচিং সেন্টার বন্ধ রাখার নির্দেশনা জারি করা হয়েছে।

ঢাকা শিক্ষা বোর্ড ৩৩ দফা নির্দেশনা দিয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে—প্রতি ২০ জন পরীক্ষার্থীর জন্য একজন কক্ষ পরিদর্শক, তিন ফুট দূরত্বে বসার ব্যবস্থা, নির্ধারিত সেট অনুযায়ী খামে সংরক্ষিত প্রশ্নপত্র যথাসময়ে খোলা এবং অব্যবহৃত সেট ফেরত পাঠানো।

প্রশ্নপত্র পরিবহন ও কেন্দ্রে পৌঁছাতে পুলিশের উপস্থিতি এবং ট্যাগ অফিসারের তত্ত্বাবধান নিশ্চিত করতে হবে।

বিশেষ নির্দেশনা শিক্ষার্থীদের জন্য

  • শিক্ষার্থীদের জন্য দেওয়া ১০টি গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশনার মধ্যে রয়েছে:
  • পরীক্ষা শুরুর অন্তত ৩০ মিনিট আগে কেন্দ্রে উপস্থিত হতে হবে
  • ওএমআর শিটে সঠিক তথ্য লিখতে ও বৃত্ত ভরাট করতে হবে
  • উত্তরপত্র ভাঁজ করা যাবে না
  • কেবল সাধারণ সায়েন্টিফিক ক্যালকুলেটর ব্যবহার করা যাবে
  • বহুনির্বাচনি (এমসিকিউ) ও সৃজনশীল পরীক্ষার মধ্যে কোনো বিরতি থাকবে না
  • পরীক্ষাকেন্দ্রে মোবাইল ফোন আনা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ
  • তত্ত্বীয়, এমসিকিউ ও ব্যবহারিক অংশে পৃথকভাবে পাস করতে হবে
  • কেবল প্রবেশপত্রে উল্লেখিত বিষয়ের পরীক্ষায় অংশ নেওয়া যাবে
  • নিজ প্রতিষ্ঠান নয়, স্থানান্তরিত কেন্দ্রে পরীক্ষা দিতে হবে
  • উপস্থিতি পত্রে স্বাক্ষর দেওয়া বাধ্যতামূলক

কেন্দ্রে কড়া নজরদারি

প্রতিটি কেন্দ্রে সিসিটিভি স্থাপন, নকলবিরোধী পোস্টার টানানো, জনসমাগম নিয়ন্ত্রণ, মাইকিংয়ের মাধ্যমে সচেতনতা তৈরি এবং শুধুমাত্র কাঁটার এনালগ ঘড়ি ব্যবহারের অনুমতি থাকবে।

বর্ষাকালে বিদ্যুৎ বিভ্রাট মোকাবিলায় আগেভাগে বিদ্যুৎ অফিসকে প্রস্তুত থাকতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

স্বাস্থ্যবিধি ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নজরদারি

শিক্ষার্থীদের মাস্ক পরা ও হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহার বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও বাড়তি নজরদারি থাকবে, যাতে গুজব বা অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা না ঘটে।

আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সর্বোচ্চ সতর্কতা

আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় সাব-কমিটির সভাপতি খন্দকার এহসানুল কবির জানিয়েছেন, সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এবং গোয়েন্দা সংস্থা সর্বোচ্চ সতর্ক থাকবে, যাতে কোনো অপ্রীতিকর পরিস্থিতি তৈরি না হয়।

Scroll to Top