ভ্রমণের নেশাটা ছিল স্কুলে পড়ার সময় থেকে। স্কুল থেকে যখন কোন ট্যুরের আয়োজন করা হতো তখন আমি থাকতাম প্রথম সারির দিকে, বিশেষ করে ট্যুরের আয়োজক হিসেবে। আলাপচারিতায় এমনটিই বলছিলেন ১২টি দেশ ভ্রমণের অভিজ্ঞতা নেয়া ডিজিটাল কনটেন্ট ক্রিয়েটর পারভেজ চোকদার।
১৯৯৯ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলায় জন্মগ্রহণ করেন পারভেজ চোকদার। বর্তমানে তিনি একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়ন করছেন।
পারভেজ ইতোমধ্যেই ভ্রমণ করেছে কাতার, সৌদি আরব, জর্ডান, ওমান, থাইল্যান্ড, সিঙ্গাপুর, ভারত, ভিয়েতনাম, মালয়েশিয়া, শ্রীলঙ্কা, মালদ্বীপ ও সংযুক্ত আরব আমিরাত।
১২টি দেশ ভ্রমণ করেছেন; সবচেয়ে ভালো অভিজ্ঞতা কী ছিল এবং কোথায়? জানতে চাইলে পারভেজ চোকদার বলেন, আমার সবচেয়ে ভালো অভিজ্ঞতা হয়েছিল কাতারে। তারা পর্যটকদের খুবই আন্তারিকতা নিয়ে গ্রহণ করে। আমি যখন কাতার ত্যাগ করি তখন বিনামূল্যে গাড়ি সেবা দেয়া হয়। কাতারের অনেক প্রসিদ্ধ খাবারও আমাকে উপহার দেন তাঁরা। এটা আমার জন্য দারুণ এক অভিজ্ঞতা ছিল।
খারাপ অভিজ্ঞতা কি ছিল? এমন প্রশ্নে পারভেজ বলেন, আমি বেশ কিছু দেশে যাতায়াতের জটিলতায় পড়েছিলাম। সৌভাগ্য খারাপ কিছু হয়নি। তবে ভ্রমণ করতে গিয়ে যাতায়াতের ব্যাপারে অনেক কিছু শিখেছি যা আগামী দিনে সহায়ক হবে।
সবচেয়ে ভালো সময় কেটেছে কোন দেশে? কিংবা কেউ যদি ভ্রমণ করতে চায় ১২টি দেশের কোন দেশেগুলোতে ভ্রমণের পরামর্শ দিবেন? এমন প্রশ্নে পারভেজ বলেন, আমার থাইল্যান্ড ও সিঙ্গাপুর ভালো গেছে। আমার মনে হয় কেউ যদি ভ্রমণ করতে চায় তাহলে এই দুটি দেশ ঘুরে দেখতে পারে। আশাকরি অনেক ভালো লাগবে। তবে বাঙালি খাবারের কিছুটা অভাবতো থাকছেই।
ভ্রমণের পরিকল্পনা সম্পর্কে এই তরুণ বলেন, আমি প্রাথমিকভাবে সামনের ১০ বছরের মধ্যে ৫০টি দেশ ভ্রমণ করতে চাই। ৫০টি দেশ ভ্রমণের পর সিদ্ধান্ত নিবো আর কোন কোন দেশ ভ্রমণ করা যায়। ভ্রমণের মাধ্যমে ইতিহাস ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি সম্পর্কে জানার পাশাপাশি নতুন এক জীবন উপভোগ করা যায়। আমি জীবনটাকে ভ্রমণের মাধ্যমে উপভোগ করতে চাই।
কনটেন্ট ক্রিয়েটর পারভেজ চোকদার ২০১৭ সালে ইউটিউবে সিলভার বাটন অর্জন করেন। বর্তমানে ইউটিউবে তার চ্যানেলের সাবস্ক্রাইবার ৪ লাখেরও বেশি। আর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে তাঁর অনুসারীর সংখ্যা প্রায় ১৭ লাখ।
পারভেজ চোকদার ভ্রমণের পাশাপাশি তাঁর কনটেন্ট নির্মাণে আয় করা অর্থ দিয়ে সহযোগিতা করেন সামাজের অবহেলিত ও দরিদ্র মানুষদের। অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ানোর কাজেও সক্রিয় ভূমিকা পালন করে যাচ্ছেন তিনি। গত বছর ফরিদপুর জেলার বিভিন্ন এলাকায় বসবাস করা সুবিধাবঞ্চিত তৃতীয় লিঙ্গের (হিজড়া) মানুষদের সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে খবরের শিরোনাম হোন তিনি। পঞ্চগড়ের স্তনক্যান্সারে আক্রান্ত ৫০ বছর বয়সী কুলসুম বেগমসহ বিগত কয়েক বছরে দেশের বিভিন্ন প্রান্তের অসহায় মানুষদের পাশে দাঁড়িয়ে প্রশংসা কুড়ান এই তরুণ।
লেখক হিসেবেও এই ভ্রমণপিপাসু তরুণের খ্যাতি রয়েছে। ২০২২ সালে অমর একুশে বইমেলায় পারভেজ চোকদারের কাব্যগ্রন্থ ‘নস্টালজিক’ প্রকাশিত হয়। যা পাঠকমহলে বেশ প্রশংসিত হয়েছিল। পারভেজ চোকদার বর্তমানে দেশের জাতীয় একটি সংবাদ মাধ্যমে প্রতিবেদক হিসেবে কাজ করছেন।