ভারত বাংলাদেশের রপ্তানি পণ্যের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বন্ধ করে দিয়েছে। ভারতের কেন্দ্রীয় পরোক্ষ কর ও শুল্ক বোর্ড (সিবিআইসি) ২০২০ সালের একটি সার্কুলার বাতিল করে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে, যা বাংলাদেশ থেকে তৃতীয় দেশে পণ্য রপ্তানির জন্য ভারতীয় স্থল ও বিমানবন্দর ব্যবহারের অনুমতি দিয়েছিল।
ফিন্যান্সিয়াল এক্সপ্রেস জানিয়েছে, বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ মুহাম্মদ ইউনূস গত মাসে চীন সফরে গিয়ে বিতর্কিত এক বক্তৃতায় বলেন, ভারতের সাতটি উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য (সেভেন সিস্টার্স) স্থলবেষ্টিত এবং সমুদ্রে তাদের প্রবেশাধিকার নেই। বাংলাদেশই এই অঞ্চলের সমুদ্রের একমাত্র অভিভাবক।
তার এই মন্তব্য সোশ্যাল মিডিয়ায় ব্যাপক আলোচনার জন্ম দেয় এবং অনেকে এটিকে বাংলাদেশ ও চীনের কৌশলগত জোট গঠনের ইঙ্গিত বলে ব্যাখ্যা করেন। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, ড. ইউনূসের বক্তব্য এবং উত্তর-পূর্বাঞ্চলে চীনের প্রভাব বিস্তারের আশঙ্কাই এই সিদ্ধান্তের প্রধান কারণ।
৮ এপ্রিল জারি করা ভারতের কেন্দ্রীয় পরোক্ষ কর ও শুল্ক বিভাগের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ‘২০২০ সালের ২৯ জুনের জারি করা সার্কুলার বাতিলের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সংশোধিত এই সিদ্ধান্ত তাৎক্ষণিকভাবে কার্যকর হবে।
এই সিদ্ধান্তের ফলে বাংলাদেশি রপ্তানিকারকরা ভারতীয় ভূখণ্ড দিয়ে নেপাল, ভুটান ও মিয়ানমারের মত দেশগুলোতে পণ্য পরিবহনের সুবিধা হারাবেন, যা লজিস্টিক বিলম্ব ও বর্ধিত ব্যয়ের কারণ হতে পারে। তবে ভারতীয় কর্তৃপক্ষ স্পষ্ট করেছে যে ইতিমধ্যে ভারতে প্রবেশ করা পণ্যগুলো বিদ্যমান নিয়মে গন্তব্যে পৌঁছাতে পারবে।
ভারতীয় রপ্তানিকারকদের সংগঠন ফেডারেশন অব ইন্ডিয়ান এক্সপোর্ট অর্গানাইজেশনসের (এফআইইও) মহাপরিচালক অজয় সাহাই বলেছেন, এই সিদ্ধান্তের ফলে এখন আমাদের কার্গো পরিব্হনে অতিরিক্ত সক্ষমতা থাকবে। অতীতে রপ্তানিকারকরা বাংলাদেশকে ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা দেওয়ার কারণে বন্দর ও বিমানবন্দরে স্থান কম পাওয়ার বিষয়ে অভিযোগ করতেন।