হিজবুত তওহীদের সর্বোচ্চ নেতা ইমাম হোসাইন মোহাম্মদ সেলিম বলেছেন, আফগানিস্তান, ইরাক, সিরিয়া, লিবিয়া, ফিলিস্তিন, মিয়ানমার, ইরানে যা ঘটেছে বাংলাদেশেও তা ঘটানোর পাঁয়তারা বহুদিন যাবৎ চলছে। আমাদের ৫৬ হাজার বর্গমাইলের এই মানচিত্রের উপর আমেরিকা, চীন, রাশিয়া, ভারত, পাকিস্তান সবারই লোলুপ দৃষ্টি। এখানে যুদ্ধ পরিস্থিতি সৃষ্টি হলে তারা সরাসরি হস্তক্ষেপের সুযোগ পেয়ে যাবে এবং নিজেদের কৌশলগত ও অর্থনৈতিক স্বার্থ হাসিল করতে পারবে।
হেযবুত তওহীদের উদ্যোগে শুক্রবার (৪ জুলাই) সকাল ১০ টায় রাজধানীর ইন্সটিটিউশন অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্সে (আইডিইবি) ‘আগ্রাসন থেকে মুসলমানদের রক্ষার উপায় তওহীদের উপর ঐক্যবদ্ধ হওয়া’ শীর্ষক আলোচনা সভা ও কর্মী সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে সেলিম এসব কথা বলেন।
হোসাইন মোহাম্মদ সেলিম বলেন, ‘পৃথিবীতে মুসলমানের সংখ্যা বর্তমানে প্রায় ২০০ কোটি। মোট ৫৭টি দেশে মুসলমানরা সংখ্যাগরিষ্ঠ। তেল-গ্যাস ও খনিজ সম্পদেরও বিশাল ভাণ্ডার মুসলিমদের দখলে। এত বিশাল ভূখণ্ড, এত সংখ্যা ও এত ধন-সম্পদ থাকার পরও আমরা মুসলমানরাই এখন পৃথিবীর সবচাইতে নির্যাতিত, নিপীড়িত, অপমানিত ও লাঞ্ছিত গোলাম জনগোষ্ঠীতে পরিণত হয়েছি। ইরাক, সিরিয়া, লিবিয়া, ইয়েমেন, লেবানন, আফগানিস্তানসহ একের পর এক মুসলিমপ্রধান দেশ ধ্বংস করে দিচ্ছে।’
সেলিম আরও বলেন, ‘মাত্র ১ কোটি ইহুদির সামনে যেন অসহায় হয়ে পড়েছে ২০০ কোটি মুসলমান ও তাদের ৫৭টি রাষ্ট্র। গত দুই বছরে দখলদার ইসরায়েলিদের হামলায় অন্তত এক লক্ষ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে, যাদের মধ্যে ৫০ হাজারের বেশি নারী ও শিশু। মিয়ানমারের মুসলমানরাও গণহত্যার মুখে বাংলাদেশে পালিয়ে কোনোমতে প্রাণ বাঁচিয়েছিল। বর্তমানে প্রায় ৮ কোটি মুসলমান উদ্বাস্তু।’
মুসলমানদের এই দুর্দশার কারণ হিসেবে মুসলিম বিশ্বের অনৈক্যকে দায়ী করে তিনি বলেন, ‘অখণ্ড মুসলিমরা আজ ৫৭ ভাগে বিভক্ত। ঐক্যবদ্ধ মুসলিম জাতির মধ্যে আজ গড়ে উঠেছে শিয়া, সুন্নি, হানাফি হাম্বলি, মাজহাবী, লা-মাজহাবী ইত্যাদি হাজারও বিভাজনের দেয়াল। শত্রুর আঘাতে যদি একজন মুসলমান মারা যায়, তো নিজেরা মারামারি করে মারা যায় দু’জন। অথচ আল্লাহর নির্দেশ ছিল পরস্পর বিচ্ছিন্ন না হওয়ার, সমগ্র মুসলিম ঐক্যবদ্ধ থাকার বলেন হেযবুত তওহীদের এই নেতা।
উত্তরণের উপায় তুলে ধরে হোসাইন মোহাম্মদ সেলিম বলেন, ‘দেশ রক্ষায় আমাদের প্রধান প্রস্তুতি হতে পারত জাতীয় ঐক্য। কিন্তু এই হানাহানির রাজনীতি আমাদের ঐক্যের সব পথ বন্ধ করে দিয়েছে। এখন ঐক্যবদ্ধ হতে হবে, যেভাবে পবিত্র কোরআনে আল্লাহ ঐক্যবদ্ধ হতে বলেছেন। অর্থাৎ সীসাগলানো প্রাচীরের ন্যায় ঐক্য। ঐক্যবদ্ধ হতে হবে এক নেতার নেতৃত্বে। এই ঐক্যের ভিত্তি হবে তওহীদ অর্থাৎ লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ। আল্লার হুকুম ছাড়া কারো হুকুম মানব না।’
ঢাকা মহানগরীর আমির ডা. মাহবুব আলম মাহফুজের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন হেযবুত তওহীদের প্রধান উপদেষ্টা খাদিজা খাতুন, আন্তর্জাতিক প্রচার বিষয়ক সম্পাদক মশিউর রহমান, নারী বিষয়ক সম্পাদক রুফায়দাহ পন্নী, স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক উম্মুত তিজান মাখদুমা পন্নী, তথ্য সম্পাদক এস এম সামছুল হুদা প্রমুখ।