টরেন্টো, ১৬ ফেব্রুয়ারি – গত ১২ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত হয়ে গেলো বহুল প্রতিক্ষিত দেশে বিদেশে আয়োজিত টরন্টো পিঠা উৎসব ও পিঠা প্রতিযোগিতা। ৯ ডয়েজ রোডে অবস্থিত নগরীর কানাডিয়ান লিজিয়ন হলে তিল ধারণের জায়গা ছিলোনা কোথাও। বিকেল ৫টা থেকে বৃহত্তর টরন্টোর বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ফাল্গুনি সাজে সজ্জিত নানান বয়সী নারী পুরুষের আগমনে মুখরিত হয়ে উঠেছিল অনুষ্ঠান প্রাঙ্গণ। ঘন্টাখানেক এর মধ্যে বাধভাঙ্গা দর্শক স্রোতে অডিটোরিয়াম পরিপূর্ণ হয়ে যায়। বসার জায়গা না পেয়ে শতশত দর্শক দাঁড়িয়ে থেকে উপভোগ করতে থাকেন অনুষ্ঠানমালা। দর্শকদের চাপে একসময় হল কর্তৃপক্ষ মূল ফটক বন্ধ করে দিতে বাধ্য হয়। অনুষ্ঠানস্থলে ঢুকতে না পেয়ে অনেক দর্শককে ফেরত চলে যেতে হয়েছে।
সন্ধ্যা ৬টায় দেশে বিদেশে সম্পাদক নজরুল মিন্টো টরন্টো পিঠা উৎসব ও পিঠা প্রতিযোগিতার শুভ উদ্বোধন ঘোষণা করেন। এসময় দেশে বিদেশে পরিবারের সদস্য ছাড়াও অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন মিডিয়া ব্যক্তিত্ব আসমা আহমেদ, বিসিএস-এর প্রতিষ্ঠাতা মোশতাক আহমেদ, বিএফএলসি’র প্রধান নির্বাহী নার্গিস সুলতানা রূপক, ‘অন্যস্বর’ এর নির্বাহী, নাট্য ব্যক্তিত্ব আহমেদ হোসেন, বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব টরন্টোর সাবেক সভাপতি প্রকৌশলী মির্জা শহীদুর রহমান, বিশিষ্ট সংগঠক ও এওয়ার্ড উইনার রিয়েলটর মনির ইসলাম, জালালাবাদ এসোসিয়েশন অব টরন্টোর নবনির্বাচিত সভাপতি মাহবুব চৌধুরি রনি, সুনামগঞ্জ অ্যাসোসিয়েশন অব কানাডার সভাপতি আতাউর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক হিমাদ্রী রায়, মৌলভী বাজার এসোসিয়েশনের উপদেষ্টা শক্তি দেব, চ্যানেল এস এর কানাডা প্রতিনিধি সৈয়দ মাহবুব, টরন্টোর বিভিন্ন সংগঠনের প্রতিনিধিবৃন্দ, সাংস্কৃতিক অঙ্গনের কুশীলব ও নগরীর বিশিষ্ট ব্যবসায়ীবৃন্দ। সবাইকে শুভেচ্ছা জানিয়ে স্বাগত বক্তব্য রাখেন উৎসবের কনভেনর জাহানারা নাসিমা।
ছোটদের একের পর এক চমকপ্রদ পরিবেশনার মাধ্যমে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের শুভারাম্ভ করা হয়। এতে অংশগ্রহন করে ইউশরা, লিয়ানা, লিডিয়া, আরশান, আইজান, জায়নাহ, এথিনা আদনান, ঋতুরাজ রয়, মায়াল এমরুল, ইনাইয়া, সাইহান, রিহান, আইমান ও আরিয়ান।
অনুষ্ঠানটি পরিচালনায় ছিলেন সোনিয়া মুক্তা ও সাহানারা নাজমা। ছোট্ট মনিদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন প্রখ্যাত মিডিয়া ব্যক্তিত্ব আসমা আহমেদ মাসুদ, বিশিষ্ট লেখিকা আজিমনুনেসা ও খেলাঘর টরন্টোর প্রতিষ্ঠাতা, বিশিষ্ট সংগঠক, কমিউনিটি ব্যক্তিত্ব ও ডেভোলাপার ফরিদা হক। এ পর্বের স্পন্সর করেন রিয়েলেটর আমিরুল সুমন।
সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় পর্বে সংগীত পরিবেশন করেন রিদি, বীথিকা, জ্যোতি পুরকায়স্থ, শাফিন, আলিফ, ব্যান্ড কাহন, রিয়াদ, ব্যান্ড ফোর, তপু, ব্যান্ড জর, আহসান হাবীব, সুমন মালিক ও আইরিন আলম।
কি বোর্ডে ছিলেন মেহেদী ফারুক, গীটারে অর্ণব মালিক এবং তবলায় শ্রীবাস দে শিবু। সাংস্কৃতিক পর্বটির পরিচালনায় ছিলেন রিংকো।
এরপর শুরু হয় অনুষ্ঠানের মূল পর্ব। এবার মাইক্রোফোন হাতে নেন বিশিষ্ট উপস্থাপিকা মার্জিয়া মৌ। তিনি শুরুতে অনুষ্ঠানের কনভেনর জাহানারা নাসিমাকে মঞ্চে আহবান করেন তারপর একে একে মঞ্চে আহবান করেন সকল প্রতিযোগিদের যারা এবারকার পিঠা প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করেছেন। অংশগ্রহণকারীরা হলেন- পারভীন খন্দকার, রুমানা তানভী, সাকিনা চৌধুরী, শিরীন চৌধুরী, আফরোজা আক্তার, কানিজ উর্মি, শাহীন রেজওয়ানা, আমেনা আবেদীন, ইশরাত ইথার, সাঈদা, পূর্ণিমা মজুমদার, ফাতেমা মোহাম্মদ, জান্নাতুল ফেরদৌস, ফাতিমা আক্তার, মিতু, পারমিতা পুরকায়স্থ, রুমী কাজী ও রোখসানা আহমেদ রনি। এ সময় ‘দেশে বিদেশে’ লোগো সম্বলিত অ্যাপ্রন পরিয়ে সবাইকে সম্মান জানানো হয়।
চরম উত্তেজনার মধ্যে অবশেষে ঘোষণা করা হয় বিজয়ীদের নাম। বিচারকমন্ডলীর পক্ষ থেকে মৌসুমী বডুয়া, সাবিনা বারী লাকী ও ফরিদা হক বিজয়ীদের নাম ঘোষণা করেন। এবারে পিঠা প্রতিযোগিতায় প্রথম পুরস্কার লাভ করেন রোখসানা আহমেদ রনি, দ্বিতীয় পুরস্কার রুমি কাজী ও তৃতীয় পুরষ্কার পেয়েছেন ফাতেমা মোহাম্মদ।
বিচারকমণ্ডলীতে ছিলেন কবি রুমানা চৌধুরী, ফার্মসিষ্ট মৌসুমী বডুয়া, কমিউনিটি ব্যক্তিত্ব ফরিদা হক, সংগীত শিল্পী চিত্রা সরকার ও টিভি ব্যক্তিত্ব সাবিনা বারী লাকী।
অনুষ্ঠানে দশটিরও বেশি ষ্টল পিঠা-পুলির পসরা সাজিয়ে অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন। এবার সেরা স্টল নির্বাচত হয় শাহীন রেজওয়ানা পরিচালিত ব্যাঞ্জণ পদাবলী। সেরা ষ্টলের পুরষ্কার তুলে দেন বিএফএলসি-র কর্ণধার নার্গিস সুলতানা রূপক।
অনুষ্ঠানের প্রাণবন্ত উপস্থাপনায় ছিলেন ঝর্ণা, মুক্তা, সুমন ও নাভা। মূল অনুষ্ঠানের উপস্থাপনায় ছিলেন মার্জিয়া মৌ।
সাউণ্ড এন্ড লাইটঃ ড্যানফোর্থ সাউন্ড।
আয়োজনটি স্পনসর করেন কানন’স ফার্ম্মেসীর প্রতিষ্ঠাতা কানন বডুয়া ও ষ্টার ভিশন এর কর্ণধার মোস্তাক চৌধুরী। রাফেল ড্র-র পুরষ্কার প্রদান করেন সী নেক্সট ফ্যাশন এর কর্ণধার সাধন দেব ও মারহাবা গ্রোসারীর কর্ণধার এহসান চৌধুরী, রিয়েলটর ফরিদা হক, প্রফেসর আতাউর রহমান ও বিশিষ্ট ইমিগ্রেশন কনসালটেন্ট এজাজ আহমেদ চৌধুরী।
বিভিন্নভাবে আরও যারা সহযোগিতা করেছেন তারা হলেন- রাহাত, রাকিব, নূপম দীপু, রুবেল, মিঠু, টিপু সুলতান, এভিন চৌধুরী, কলি বখত ও আরজু মুন জারিন।
সমগ্র আয়াজনের তত্বাবধানে ছিলেন কনভেনর জাহানারা নাসিমা। সহযোগিতায় ছিলেন তাহমিনা চৌধুরী ও সাহানারা নাজমা।
পরবর্তী পিঠা উৎসব ও পিঠা প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হবে ৭ অক্টোবর (শনিবার) ২০২৩। উল্লেখ্য, দেশে বিদেশে পরিবারের জনপ্রিয় আরও দু’টি আয়োজন হচ্ছে- রাঁধুনি প্রতিযোগিতা ও শিশু মেলা। আগামী ১৩ আগষ্ট (রবিবার) অনুষ্ঠিত হবে ৩য় রাঁধুনি প্রতিযোগিতা এবং ২৩ ডিসেম্বর (শনিবার) অনুষ্ঠিত হবে শিশু মেলা।
বিস্তারিত জানতে যোগাযোগ: জাহানারা নাসিমা: ৬৪৭ ৮৩০ ২২১৪, সাহানারা নাজমা: ৪১৬ ৩৭১ ৩০৩৯, তাহমিনা চৌধুরী ৬৪৭ ৭৭৯ ৯২২৪, ঝর্ণা ৪১৬ ৯৩৬ ৩৭৯৭, সোনিয়া ৪১৬ ২০৯ ৩৯২২, নাভা ৯০৫ ৮১৮ ৯৭১৮, কলি বখত ৪৩৭ ২১৯ ৫৫৯৭ ও আরজু মুন জারিন ৬৪৭ ৭৬৩ ১৫৪৮।
এম ইউ/১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৩