রাজিব আহমেদ:
কেমন আছেন মিরপুর-১১ নম্বর সেকশনে বস্তিবাসীর জন্য সরকারি প্রকল্পের নির্মিত ফ্ল্যাটের বাসিন্দারা? নিঃসন্দেহে আগের চেয়ে ভালো আছেন তারা। অস্বাস্থ্যকর পরিবেশের বদলে খোলামেলা-পরিচ্ছন্ন আবহে বসবাস করেছন এসব মানুষ, কারো কারো বারান্দায় শোভা পাচ্ছে বিভিন্ন ফুলের গাছও। কিন্তু নিত্যপণ্যের বাড়তি দামের সাথে ফ্ল্যাটের ভাড়া আর সার্ভিস চার্জে নাজেহাল অবস্থা তাদের। কারও কারও বকেয়া পড়েছে সাত-আট মাসের টাকা। তাই বাস্তবতা বিবেচনায় ভাড়া ও সার্ভিস চার্জ কমানোর দাবি জানিয়েছেন বাসিন্দারা।
মূলত, জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষের নিজস্ব অর্থায়নে মিরপুর ১১ নম্বরে নিম্ন আয়ের ৩০০ পরিবারের জন্য ফ্ল্যাট নির্মাণ করে সরকার। এসব ফ্ল্যাটের বাসিন্দাদের মধ্যে রয়েছেন সুমাইয়া-শামীম দম্পতিও। দুজনেরই বেড়ে ওঠা কলাবাগান বস্তিতে। সেখানেই বিয়ে-সংসার। অনিশ্চিত যাত্রার পরিবর্তনে এখন ঠাঁই হয়েছে ফ্ল্যাটে। কেমন আছেন জানতে চাইলে তারা বলেন, এখন আগের চেয়ে অনেক ভালো আছেন তারা। আগের মতো লাইন ধরে পানি নেয়ার ঝঞ্ঝাট নেই, নেই সৌচাগারের সমস্যাও। আগের মতো নোংরা পরিবেশে বসবাস করতে হয় না তাদের।
অবশ্য এর আছে উল্টো চিত্রও দেখা গেলো। ফ্ল্যাটের বাসিন্দা ৫৫ বছর বয়সী বানু বেগম জানালের কষ্টের কথা। বস্তি ছেড়ে ফ্ল্যাটে উঠেছেন ঠিকই, কিন্তু এখনও বকেয়া ৭ মাসের ভাড়া। কেবল রানু বেগম নন, এই অবস্থার কথা জানালেন অনেকেই। তারা বলছেন, তাদের আয়ের তুলনায় বাড়ি ভাড়া অনেক বেশি। দিন এনে দিন খাওয়ার সংসারে এত ভাড়া দিয়ে থাকা বেশ কষ্টসাধ্য হয়ে উঠেছে তাদের জন্য।
প্রকল্পে যেমন সুবিধা রয়েছে, আছে কিছু অসুবিধাও। একটি পরিবারকে ফ্ল্যাটে থাকতে প্রতিমাসে ভাড়া গুনতে হয় সাড়ে চার হাজার টাকা। সাথে আছে ১৪০০ সার্ভিস চার্জ, বিদ্যুৎ বিল ও গ্যাস বিল। সব মিলিয়ে খরচ প্রায় ৯ হাজার টাকা। ক্ষোভ জানিয়ে এক বাসিন্দা বললেন, মাসে আয় করি ১৫ হাজার, বাসা ভাড়া বাবদ যদি ১০ হাজার দিতে হয়, তাহলে খাবো কী?
এদিকে বাসিন্দাদের অভিযোগ, সার্ভিস চার্জের নামে বিভিন্ন খাতে টাকা দেয়া হলেও, টাকা অনুপাতে সেবা পান না তারা। সেখানে সিকিউরিটি গার্ড থাকে না বলেও অভিযোগ করছেন বাসিন্দারা। তাছাড়া ময়লা আবর্জনা পরিষ্কার করারও যেন কেউ নেই।
যদিও এসব অভিযোগ মানতে নারাজ জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান খোন্দকার মোস্তাফিজুর রহমান। অভিযোগ খতিয়ে দেখে কার্যকর ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দিয়ে তিনি বলেন, অনেক অভিযোগই হয়তো তারা বাড়িয়ে বলেছেন। তবে আমরা যাচাই করে দেখবো।
এসজেড/