নাটোর প্রতিনিধি: ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেওয়াকে কেন্দ্র করে সৃষ্ট বিরোধের জেরে পিটুনিতে জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে নাটোরের নলডাঙ্গার ছাত্রলীগ নেতা জামিউল আলীম জীবন (২০)।
বর্তমানে তিনি রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের আইসিইউতে লাইফ সাপোর্টে রয়েছেন।
জীবনের চাচা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক এবং অধ্যাপক এসএম ফিরোজ বলেন, আইসিইউতে লাইফ সাপোর্টে থাকা জীবনকে বুধবার (২১ সেপ্টেম্বর) সকালে অপারেশন থিয়েটারে নেওয়া হয়। এরপর চিকিৎসকরা মৌখিকভাবে জানান, জীবন মারা গেছে। কিন্তু হঠাৎ করেই তাকে আবারও আইসিইউতে নেওয়া হয় এবং লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়।
পরে আমরা আইসিইউ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করি। তারা বলছেন, জীবন এখনো জীবিত। তাকে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়েছে। আগামী ৭২ ঘণ্টা লাইফ সাপোর্টে থাকবে। এই সময় তাকে পরখ করা হবে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মসজিদের মাইক চুরির বিচারে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ তুলে উপজেলা চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে ফেসবুকে লাইভ করেন জামিল। এর জের ধরে সোমবার (১৯ সেপ্টেম্বর) রাতে নলডাঙ্গা উপজেলার রামশাকাজিপুর আমতলী বাজারে জীবনকে পিটিয়ে জখম করেন উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান আসাদ।
এ সময় তাকে বাচাঁতে গিয়ে আহত হন তার বাবা ফরহাদ হোসেন। পরে আহত বাবা ও ছেলেকে উদ্ধার করে প্রথমে নাটোর সদর হাসপাতাল এবং পরে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
এ ঘটনায় পরদিন মঙ্গলবার ফরহাদ হোসেনের স্ত্রী জাহানারা বেগম বাদি হয়ে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান আসাদ, তার বড় ভাই ফয়সাল শাহ ফটিক ও অপর ভাই আলিম আল রাজি শাহের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরো ৫ জনের বিরুদ্ধে নলডাঙ্গা থানায় একটি এজাহার দায়ের করেন। ওই মামলা দায়েরের পর পুলিশ মামলার আসামি আসাদের ভাই আলিম আল রাজিকে গ্রেপ্তার করে।
এদিকে মঙ্গলবার দিনভর জামিলের মৃত্যুর সংবাদ ছড়িয়ে পড়লে এলাকাবাসীসহ উপজেলা আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ ও যুবলীগ নেতাকর্মীরা বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে। তারা চেয়ারম্যান আসাদকে গ্রেপ্তার ও বিচারের দাবীতে মঙ্গলবার রাতে নলডাঙ্গা উপজেলা সদরে বিক্ষোভ সমাবেশ করে।
নলডাঙ্গা থানার ওসি শফিকুল ইসলাম পলাশ জানান, জীবনের মৃত্যুর খবরের সত্যতা পাওয়া যায়নি। এঘটনায় কোন ধরনের বিশৃংখলা ঠেকাতে পুলিশ সর্তক রয়েছে। এছাড়া জীবন ও তার বাবা ফরহাদ হোসেনের ওপর হামলার ঘটনায় দায়েরকৃত মামলার আসামি আলিম আল রাজিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অন্যদেরও গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।