ফিরে আসার অপেক্ষায় ইংল্যান্ড, বাংলাদেশ খুঁজবে অ্যাডিলেডের স্মৃতি

ফিরে আসার অপেক্ষায় ইংল্যান্ড, বাংলাদেশ খুঁজবে অ্যাডিলেডের স্মৃতি
ফিরে আসার অপেক্ষায় ইংল্যান্ড, বাংলাদেশ খুঁজবে অ্যাডিলেডের স্মৃতি

বিশ্বকাপ, বাংলাদেশ, ইংল্যান্ড– তিনের এক দারুণ সমন্বয় আছে। অন্তত বাংলাদেশি ক্রিকেট সমর্থকদের কাছে। ক্রিকেটারদের কাছেও তাই। এই স্মৃতি মনে রাখা তো জটিল কিছু না। ২০১১ তে ঘরের মাটিতে, ২০১৫ তে অস্ট্রেলিয়ায়– বিশ্বকাপের মঞ্চে ইংল্যান্ডকে পরাজিত করেছিল বাংলাদেশ দল। সে এক অন্যরকম সুখস্মৃতি হয়ে আছে লাল-সবুজের এই ক্রিকেট দলের জন্য।

ম্যাচের পরিসংখ্যানে অবশ্য ক্রিকেটের জনক দেশ ইংল্যান্ডই এগিয়ে। ওডিআই’তে বাংলাদেশের বিপক্ষে ২৪ ম্যাচে মুখোমুখি হয়ে ১৯ টি ম্যাচে জয় আছে দলটির। অন্যদিকে পরাজয়ের সংখ্যা মাত্র ৫ ম্যাচে। সেই ৫ টি জয়ই বাংলাদেশের জন্য অনুপ্রেরণা হয়ে আছে। সর্বশেষ জয়টিও এই বছর, ঘরের মাটিতে জিতেছিল বাংলাদেশ।

২০১১ ও ২০১৫ বিশ্বকাপের সুখস্মৃতি আগামীকাল ধরমশালায় ফিরিয়ে আনতে পারবে বাংলাদেশ? নাকি, আক্রমণাত্মক ক্রিকেট খেলা ইংল্যান্ড দল প্রতিপক্ষ’কে কোনো সুযোগই দিবে না? অপেক্ষাতে জানা যাবে এসবের উত্তর।

কখন ম্যাচ

১০ অক্টোবর, বাংলাদেশ সময় সকাল ১১ ঘটিকায়

কোথায় হবে

এইচপিসিএ স্টেডিয়াম, ধরমশালা, ভারত

বাংলাদেশ দলের খবরা-খবর

বাংলাদেশ দলের স্পিনে বরাবরই বেশ কাবু হতে দেখা যায় ইংল্যান্ডকে। চট্টগ্রামে খেলা সর্বশেষ ওয়ানডে ম্যাচেও সাকিব আল হাসানের পকেটে ছিল ৪ উইকেট। আগামীকাল ঝরঝরে নতুন পিচে ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে। যতদূর জানা যায়, পেসারদের পাশাপাশি স্পিনাররাও বেশ পিচের ফায়দা তুলবে।

বাংলাদেশ দলে অতিরিক্ত একজন স্পিনার দেখার সুযোগ থাকছে কালকের ম্যাচে। সেক্ষেত্রে শেখ মেহেদী বা নাসুম আহমেদ যুক্ত হতে পারেন একাদশে। এমতাবস্থায় বাদ পড়তে পারেন কোনো স্বীকৃত ব্যাটসম্যান।

দলের স্পিনে জোর দেওয়ার পাশাপাশি পেসারদের জন্য ভালো করার সুযোগ থাকবে ধরমশালার নতুন উইকেটে। সেক্ষেত্রে তাসকিন আহমেদ তাঁর গতি ও লেংথ দিয়ে ইংল্যান্ড ব্যাটারদের চিন্তার কারণ হয়ে উঠতে পারেন যেকোনো সময়। পাশাপাশি মুস্তাফিজুর রহমান ডেথ ওভারের বোলিংয়ে ভালো করার পাশাপাশি নতুন বলেও চমক দেখাচ্ছেন। তাঁকে খেলাও সহজ হবে না ইংলিশ ব্যাটারদের জন্য।

আফগানিস্তানের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচে জয় লাভ করে কিছুটা নির্ভার আছে বাংলাদেশ দল। পাশাপাশি সর্বশেষ সিরিজে ঘরের মাঠে ওডিআইতে ২-১ এ পরাজিত হলেও, টি-টোয়েন্টি সিরিজে ইংল্যান্ডকে হোয়াইটওয়াশ করে বাংলাদেশ। তাই স্মৃতির পাতা বেশ মসৃণই বলা চলে সাকিবের দলের জন্য।

ইংল্যান্ড দলের খবরা-খবর

বিশ্বকাপের উদ্বোধনী ম্যাচে পরাজয় গুনেছে ইংল্যান্ড। গতবারের রানার-আপ দল নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ৯ উইকেটে হেরেছে তাঁরা। যদিও সেটা মাত্র প্রথম ম্যাচ ছিল, তবুও কিছুটা চাপ থাকে। সেই চাপ হয়ত ইংলিশ শিবিরে কিছুটা হলেও থাকছে দ্বিতীয় ম্যাচের আগেও।

পাশাপাশি বাংলাদেশ দলের বিপক্ষে খুব একটা নির্ভার হওয়ার সুযোগ নেই ইংল্যান্ডের। সর্বশেষ ওডিআই ম্যাচে পরাজয়, ২০১৯ এর আগে বিশ্বকাপে দুই বারের দেখায় দুই বারই পরাজয়ের রেকর্ড তো আছেই। এই পরিসংখ্যানগুলো সুখকর নয় ইংলিশদের জন্য।

তবে আশার কথা হচ্ছে, ইংল্যান্ডের ক্রিকেট খেলার ধরন অনেকটা বদলে গেছে ইদানীং। নিজেদের দিনে প্রতিপক্ষের উপর নির্দয়ভাবে চড়াও হতে ভোলে না দলটি। প্রথম ম্যাচের মতো আগামীকালের ম্যাচেও বেন স্টোকসকে পাচ্ছে না ইংলিশ একাদশ। চার নম্বর পজিশনে ব্যাট করতে দেখা যাবে হ্যারি ব্রুক’কে।

আগামীকাল ধরমশালার পিচে আগ্রাসী হয়ে উঠতে পারে ইংলিশ ব্যাটাররা। সর্বশেষ আইপিএলে এই মাঠের উইকেটে লিয়াম লিভিংস্টোনের ব্যাটে ঝড় উঠেছিল। জনি বেয়ারস্টো, জো রুট, জস বাটলার– তাঁরা হতে পারেন বাংলাদেশি বোলারদের চিন্তার কারণ। মার্ক উড তো থাকছেন, ইংলিশ একাদশে দেখা যেতে পারে অতিরিক্ত এক পেসার। মইন আলি’কে পরিবর্তন করে রিস টপলি’র সুযোগ আসতে পারে আগামীকালের ম্যাচে।

বাংলাদেশের সম্ভাব্য একাদশ:

সাকিব আল হাসান (অধিনায়ক), লিটন দাস, তানজিদ হাসান তামিম, নাজমুল হোসেন শান্ত, তাওহীদ হৃদয়, মুশফিকুর রহিম, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ/ শেখ মেহেদী হাসান, মেহেদী হাসান মিরাজ, তাসকিন আহমেদ, মুস্তাফিজুর রহমান, শরিফুল ইসলাম।

ইংল্যান্ডের সম্ভাব্য একাদশ:

জস বাটলার (অধিনায়ক), ডেভিড মালান, জনি বেয়ারস্টো, জো রুট, হ্যারি ব্রুক, লিয়াম লিভিংস্টোন, স্যাম কারান, ক্রিস ওকস, রিস টপলি, মার্ক উড, আদিল রাশিদ।

পিচ, কন্ডিশন ও আবহাওয়া

আবহাওয়া তুলনামূলক ঠান্ডা থাকবে ধরমশালায়। আহমেদাবাদে ম্যাচে যে গরম সহ্য করতে হয়েছে ইংল্যান্ড দলকে, সেটা এখানে করতে হবে না। নতুন এক পিচে আগামীকালের ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে। গত ম্যাচের তুলনায় পেসাররা বেশ সুবিধা আদায় করতে পারবে কালকের পিচে। যদিও এই ম্যাচের আউটফিল্ড নিয়ে ইতোমধ্যে যথেষ্ট আলোচনা হয়ে গেছে। আউটফিল্ড বেশ অরক্ষিত অবস্থায় ছিল বাংলাদেশ-আফগানিস্তান ম্যাচের দিন।

বিশ্বকাপে দুই দলের দেখা

গত ৪ বিশ্বকাপে একবার করে মুখোমুখি হয়েছে বাংলাদেশ ও ইংল্যান্ড। ২০০৭ সালে বার্বাডোজে প্রথম দেখায় পরাজিত দল ছিল বাংলাদেশ। তবে ২০১১ ও ২০১৫ বিশ্বকাপে জয়ের দেখা পায় লাল-সবুজের দল। সর্বশেষ ২০১৯ বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডের পক্ষে ছিল জয়ের পাল্লা। ফলে বিশ্বকাপে মোট ৪ দেখায় ২-২ অবস্থানে আছে বাংলাদেশ ও ইংল্যান্ড।

Scroll to Top