প্রাথমিকে ৩২ হাজার প্রধান শিক্ষক নিয়োগে প্রধান উপদেষ্টার নির্দেশ

প্রাথমিকে ৩২ হাজার প্রধান শিক্ষক নিয়োগে প্রধান উপদেষ্টার নির্দেশ

এই খবরটি পডকাস্টে শুনুনঃ

দেশের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে প্রধান শিক্ষকের ৩২ হাজার শূন্য পদে দ্রুত নিয়োগ সম্পন্নের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস। সোমবার বিকেলে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় এক বৈঠকে তিনি এ নির্দেশনা দেন।

প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় সংশ্লিষ্ট এ বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার, সচিব আবু তাহের মো. মাসুদ রানা, প্রধান উপদেষ্টার মুখ্য সচিব সিরাজ উদ্দিন মিয়াসহ অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা।

বৈঠকে প্রাথমিক শিক্ষার বর্তমান মান, বিদ্যালয়ভিত্তিক পারফরম্যান্স ও কাঠামোগত অগ্রগতি নিয়ে আলোচনা হয়। প্রধান উপদেষ্টা কোন কোন বিদ্যালয় ভালো করছে, সে ব্যাপারে মূল্যায়ন জানতে চান।

উপদেষ্টা বিধান রঞ্জন রায় বলেন, ‘প্রাথমিক শিক্ষায় অবকাঠামো উন্নয়নে বিপুল ব্যয় হলেও কাঙ্ক্ষিত শিক্ষাগুণ অর্জিত হয়নি। আমরা স্কুলভিত্তিক র‍্যাংকিং চালু করেছি। যেসব বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা পিছিয়ে, তাদের জন্য আলাদা কর্মসূচি নেওয়া হচ্ছে।’

তিনি আরও জানান, মূল্যায়নে দেখা গেছে, যেসব বিদ্যালয়ে শিক্ষার মান ভালো, সেগুলোতে প্রধান শিক্ষকের দক্ষতা এবং সহকর্মীদের সঙ্গে তার ব্যবহারের ওপরেই সাফল্য নির্ভর করছে।

এই প্রেক্ষাপটে প্রধান উপদেষ্টা নির্দেশ দেন, প্রধান শিক্ষক পদে পদায়নের পাশাপাশি নতুন নিয়োগ প্রক্রিয়াও শুরু করতে হবে। তিনি বলেন, ‘প্রধান শিক্ষক নিয়োগে যোগ্যতা, অভিজ্ঞতা ও বয়সভিত্তিক ক্যাটাগরি চালু করতে হবে। যারা দীর্ঘদিন শিক্ষকতা করেছেন, তাদের প্রাধান্য দিতে হবে। আবার তরুণরাও যেন এই দায়িত্বে সুযোগ পান, সে ব্যবস্থাও রাখতে হবে।’

প্রধান শিক্ষক নিয়োগ দ্রুত সম্পন্ন করতে সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) সঙ্গে সমন্বয় করে দ্রুত বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের নির্দেশ দেন তিনি।

এছাড়া শিক্ষকদের বদলির ক্ষেত্রে সুস্পষ্ট নীতিমালা প্রণয়নের প্রয়োজনীয়তার ওপরও জোর দেন প্রধান উপদেষ্টা। তিনি বলেন, ‘অনেকে এক উপজেলায় চাকরি নিয়ে পরে শহরের কাছে বদলির জন্য তদবির করেন। এতে স্বচ্ছতা বিঘ্নিত হয়। বদলির জন্য নির্দিষ্ট প্রক্রিয়া থাকতে হবে এবং তা কঠোরভাবে মেনে চলতে হবে।’

স্কুল অবকাঠামো নারীবান্ধব কি না, সেদিকে নজর দিতে সংশ্লিষ্টদের আহ্বান জানান মুহাম্মদ ইউনূস। ভবন নির্মাণ কমিটিতে কমপক্ষে একজন নারী স্থপতি রাখার প্রস্তাব দিয়ে বলেন, ‘পরিকল্পনা, নকশা ও বাস্তবায়নে মেয়েদের প্রয়োজনকে অগ্রাধিকার দিতে হবে।’

প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে ধারাবাহিকভাবে ইন্টারনেট সংযোগ ও মাল্টিমিডিয়া শ্রেণিকক্ষ চালুর ওপরও গুরুত্বারোপ করেন প্রধান উপদেষ্টা। তিনি বলেন, ‘প্রাথমিক শিক্ষা ব্যবস্থায় প্রযুক্তির ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে। প্রতিটি বিদ্যালয়ে মাল্টিমিডিয়া শিক্ষা চালু হলে শিক্ষার্থীদের শেখার মান বাড়বে।”

সভায় সিদ্ধান্ত হয়, প্রধান শিক্ষক পদে নিয়োগ ও বদলি নীতিমালার খসড়া এক মাসের মধ্যে উপস্থাপন করতে হবে এবং বিদ্যালয়ভিত্তিক শিক্ষামান মূল্যায়নের কাজ চলমান রাখতে হবে।

Scroll to Top