নয়াদিল্লি, ০৩ অক্টোবর – ব্যাটিংটা ভালো হয়নি। বৃষ্টিবিঘ্নিত ম্যাচে ৩৭ ওভারে ৯ উইকেট হারিয়ে মোটে ১৮৮ রান তুলতে পারে বাংলাদেশ। ডাকওয়ার্থ লুইস পদ্ধতিতে ইংল্যান্ডের সামনে লক্ষ্য দাঁড়ায় ৩৭ ওভারে ১৯৭ রানের। ইংলিশদের মারকুটে ব্যাটারদের জন্য এই লক্ষ্য খুব কঠিন ছিল না।
তবে বাংলাদেশের বোলাররা লড়েছেন বেশ। ইংল্যান্ডের ৬ উইকেট তুলে নেয় টাইগাররা। শেষ পর্যন্ত অবশ্য পারেনি। ৭৭ বল হাতে রেখে ৪ উইকেটের জয় তুলে নিয়েছে জস বাটলারের দল।
বিশ্বকাপের মূল আসর শুরুর আগে বাংলাদেশ একটি ম্যাচ জিতলো, আরেকটিতে হারলো লড়াই করে।
এদিন মোস্তাফিজ-শরিফুলরা ১১৪ রানের মধ্যে সাজঘরে ফিরিয়েছিলেন পাঁচ ইংলিশ ব্যাটারকে। রান তাড়ায় ইংল্যান্ডের প্রথম ওভারেই আঘাত হানেন মোস্তাফিজুর রহমান। ডেভিড মালানকে (৪) প্রথম স্লিপে তানজিদ তামিমের ক্যাচ বানান কাটার মাস্টার।
তবে জনি বেয়ারস্টো ওসবের ধার ধারেননি। মারকুটে ব্যাটিংয়ে বাংলাদেশের বোলারদের কোণঠাসা করে ফেলেন এই ব্যাটার। শেষ ৪ ওভারেই ৫০ রান পার করে ইংল্যান্ড।
অবশেষে পঞ্চম ওভারে বিধ্বংসী বেয়ারস্টোকে সাজঘরে ফেরান মোস্তাফিজই। টাইগার পেসারের দারুণ এক ডেলিভারিতে বেল পড়ে বেয়ারস্টোর। মোস্তাফিজও শুরুতে বুঝতে পারেননি। ২১ বলে ৩৪ রানের ইনিংসে ৬টি বাউন্ডারি আর একটি ছক্কা হাঁকান বেয়ারস্টো।
১৫ বলে ১৭ করা হ্যারি ব্রুককে দুর্দান্ত সুইংয়ে বোল্ড করেন হাসান মাহমুদ। এরপর জস বাটলার দুটো সুযোগ দিয়েছিলেন। উইকেটের পেছনে ক্যাচ ফেলেন মুশফিকুর রহিম, বল কোথায় পড়ছে বুঝতে না পেরে বাউন্ডারিতে মিস করেন তাসকিন আহমেদ।
বাটলার জীবন পেয়ে আরও ভয়ংকর হয়ে উঠেন। ১৫ বলে ৫ চার আর এক ছক্কায় ৩০ রানের ঝড় তোলা ইংলিশ ব্যাটারকে অবশেষে ফেরান শরিফুল ইসলাম। ৭ রানে লিয়াম লিভিংস্টোন হন তাসকিনের শিকার।
তবে এরপর মঈন আলি ৩৯ বলে ২ চার আর ৬ ছক্কায় ৫৬ রানের ইনিংস খেলে ম্যাচ বের করে নিয়ে আসেন। জয় থেকে ইংল্যান্ড ৪ রান দূরে থাকতে মঈনকে ফেরান নাসুম।
এর আগে বৃষ্টির কারণে ম্যাচটি কমে আসে ৩৭ ওভারে। বাংলাদেশ তবু অলআউট হওয়ার শঙ্কায় পড়ে গিয়েছিল। শেষ পর্যন্ত অবশ্য একটি উইকেট বাঁচিয়ে রেখে কোনোমতে ইনিংস শেষ করেছে টাইগাররা। ৯ উইকেটে ১৮৮ রানে থামে তাদের ইনিংস।
ইংল্যান্ডের বিপক্ষে এই বিশ্বকাপ প্রস্তুতি ম্যাচে বৃষ্টির আগে ৩০ ওভারে ৫ উইকেটে ১৫৩ রান ছিল বাংলাদেশের। মেহেদি হাসান মিরাজ ৬০ আর তাওহিদ হৃদয় ৫ রান নিয়ে ব্যাটিং করছিলেন। বৃষ্টির পর হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়ে টাইগাররা।
বিরতির পর খেলা শুরু হতে না হতেই উইকেট বিলিয়ে দেন হৃদয় (১৩ বলে ৫)। মিরাজ ছিলেন শেষ ভরসা হয়ে। অবশেষে ৮৯ বলে ১০ বাউন্ডারিতে ৭৪ করে ডেভিড উইলির বলে বোল্ড হন এই অলরাউন্ডার।
এরপর আর কেউ বলার মতো কিছু করতে পারেননি। ১২ বলে ১২ রানে অপরাজিত থাকেন তাসকিন আহমেদ।
তানজিদ হাসান তামিমের মতো টানা দ্বিতীয় ম্যাচে ফিফটির দেখা পেয়েছেন মেহেদি হাসান মিরাজ। তবে তামিম আর মিরাজ দারুণ ব্যাটিং করলেও টপ আর মিডল অর্ডারের বাকিরা করেছেন হতাশ।
লিটন দাস ৫, নাজমুল হোসেন শান্ত ২, মুশফিকুর রহিম ৮ আর মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ আউট হয়েছেন ১৮ রান করেই।
বিশ্বকাপের মূল মঞ্চে নামার আগে বাংলাদেশের শেষ প্রস্তুতি ম্যাচ। গুয়াহাটিতে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে টস জিতে ব্যাটিং করার সিদ্ধান্ত নেন বাংলাদেশ অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত।
প্রথম দুই ওভারেই ১৮ রান তুলে নেয় টাইগাররা। কিন্তু তৃতীয় ওভারের প্রথম বলে উইকেট দিয়ে আসেন লিটন দাস। রিস টপলের লেগ সাইডে বেরিয়ে যাওয়া বলে ব্যাট ছুঁইয়ে উইকেটরক্ষকের ক্যাচ হয়ে ফেরেন লিটন (৬ বলে ৫)।
টপলের পরের ওভারে উইকেট বিলিয়ে দেন অধিনায়ক শান্তও। ১১ বলে ১ করে ডিপ থার্ডম্যানে ক্যাচ দেন বাঁহাতি এই ব্যাটার। ২৬ রানে ২ উইকেট হারিয়ে বিপদে পড়ে বাংলাদেশ।
এরপর তানজিদ তামিম আর মেহেদি হাসান মিরাজ গড়েন ৫২ রানের জুটি। তানজিদ আগের ম্যাচে খেলেছিলেন ৮৪ রানের ইনিংস। সেঞ্চুরির আশা জাগিয়ে পারেননি।
এবার ফিফটির কাছে এসে হতাশ হয়ে ফেরেন তামিম। তার দারুণ এক ইনিংসের সমাপ্তি ঘটেছে মার্ক উডের গতিময় এক ডেলিভারিতে। উডের বলটি ইনসাইডেজ হয়ে ভেঙে যায় স্টাম্প। ৪৪ বলে ৪৫ রানের ইনিংসে ৭টি চার আর ১টি ছক্কা হাঁকান বাঁহাতি এই ওপেনার।
সূত্র: জাগো নিউজ
আইএ/ ০৩ অক্টোবর ২০২৩